বিহারের ভাগলপুরে গঙ্গায় ফের ভেঙে পড়ল নির্মীণমান সেতু। যে ভয়াবহ মুহূর্তের দৃশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছেন প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকরা। ঘটনাস্থলে এসে গিয়েছেন ভাগলপুর সদরের মহকুমা শাসক ধনঞ্জয় কুমার। সেই ঘটনায় আপাতত কোনও হতাহতের খবর মেলেনি। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, আপাতত পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তারপরই ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি বোঝা যাবে। তবে রবিবারের ঘটনার পর সেতু নির্মাণের বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। কারণ গত বছরের এপ্রিলে ওই সেতুটি ভেঙে পড়েছিল। সেই ঘটনার পর ১৪ মাস কাটতে না কাটতেই ফের ভেঙে পড়ল সেতুর একাংশ।
‘হিন্দুস্তান টাইমস’ গ্রুপের ‘লাইভ হিন্দুস্তান’-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, রবিবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ পরবত্তা থানা এলাকায় সুলতানগঞ্জ (ভাগলপুর জেলা) এবং অগুবানির (খগড়িয়া জেলা) মধ্যে গঙ্গার নদীর উপর যে ব্রিজ নির্মাণ করা হচ্ছিল, সেটি হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। প্রাথমিকভাবে খবর, ১০, ১১ এবং ১২ নম্বর স্তম্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে যায়। তিনটি স্তম্ভের সঙ্গে যে অংশটি যুক্ত ছিল, সেটিও হুড়মুড়িয়ে গঙ্গায় ভেঙে পড়েছে বলে ‘লাইভ হিন্দুস্তান’-র প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
সংবাদসংস্থা এএনআইকে ডেপুটি ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টর কুমার অনুরাগ বলেছন, ‘আজ সন্ধ্যায় ওই নির্মায়মাণ সেতুটি ভেঙে পড়েছে। এখনও পর্যন্ত কোনও হতাহতের খবর মেলেনি। ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছেন প্রশাসনের আধিকারিকরা। পুল নির্মাণ নিগমের থেকে রিপোর্ট তলব করা হয়েছি।’ তারইমধ্যে সুলতানগঞ্জের বিধায়ক ললিতকুমার মণ্ডলের দাবি, চূড়ান্ত গাফিলতির কারণে নির্মীয়মান সেতুটি ভেঙে পড়েছে। সেই ঘটনায় উচ্চপর্যায়ের তদন্ত করে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে বলে দাবি করেছেন সুলতানগঞ্জের বিধায়ক।
আরও পড়ুন: মুম্বই থেকে পুণে ৯০ মিনিটে! দেশের সবচেয়ে বড় ব্রিজের কাজ একেবারে শেষের দিকে
নির্মীয়মান ব্রিজের ইতিবৃত্ত
আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ২০১৪ সালে সেই চার লেনের ব্রিজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। ২০১৯ সালের মধ্যে সেই ব্রিজের নির্মাণকাজ শেষ হয়ে যাওয়ার কথ ছিল। কিন্তু জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে ঢিলেমির জন্য নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা যায়নি। তারপর করোনাভাইরাস মহামারী শুরু হয়ে যাওয়ায় ৩.১১ কিলোমিটারের ব্রিজের কাজ থমকে গিয়েছিল। পরবর্তীতে ফের কাজ শুরু হয়।
কিন্তু ২০২২ সালের ৩০ এপ্রিল সুলতানগঞ্জের দিকে ব্রিজের একাংশ ভেঙে পড়েছিল। কী কারণে ব্রিজ ভেঙে পড়েছে, তা খতিয়ে দেখতে সেইসময় আইআইটির বিশেষজ্ঞদের নিযুক্ত করা হয়েছিল। তারপরও ফের ব্রিজ ভেঙে পড়েছে। আধিকারিকরা জানিয়েছেন, কয়েক মাস পরেই ১,৭১০.৭৭ কোটি টাকার ওই ব্রিজের উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল। যে বিহারের নির্মাণের বরাত পেয়েছিল এসপি সিঙ্গলা কনস্ট্রাকশন লিমিটেড (বিহার রাজ্য পুল নির্মাণ নিগম লিমিটেডের তত্ত্বাবধানে)।
(এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup)