একটি পুকুরে পাওয়া গেল এক কুমিরকে। দেখতে কঙ্কালসার। চেহারা এমন, যা দেখে ভয় পাওয়া তো দুরস্থান, কষ্ট হবে যে কোনও কারও। না খেতে পেয়ে বীভৎস চেহারা হয়েছে তার। বছর ৫ বয়সের একটি মেয়ে কুমির। চেহারার কারণে তার নামও দেওয়া হয়েছে গডজিলা। কিন্তু তার ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে গিয়ে ধরা পড়ল মারাত্মক এক ছবি।
কয়েক দিন আগে আমেরিকার ব্রুকলিন এলাকার এক পুকুরে সন্ধান পাওয়া যায় এই কুমিরটির। সাধারণত এই জাতীয় প্রাপ্ত বয়স্ক কুমিরের ওজন হয় ৩০ থেকে ৩৫ পাউন্ড। কিন্তু গডজিলার সেখানে ১৫ পাউন্ডেরও কম। এমন অপুষ্টিতে কী করে ভুগতে পারে একটি প্রাণী? তাই সঙ্গে সঙ্গেই তার চিকিৎসা শুরু হয়। চিকিৎসকরা তাকে পাইপের মাধ্যমে খাবার খাওয়াতে থাকে। সঙ্গে অ্যান্টোবায়োটিক, অ্যান্টিফাংগাল ওষুধও চলে। দেওয়া হয় নানা ধরনের প্রয়োজনীয় ভিটামিনও। কিন্তু ৫-৬ দিন চিকিৎসা চালিয়েও লাভ হয়নি। গডজিলার ওজন বিন্দুমাত্র না বাড়ায় তার এক্স-রে করেন চিকিৎসকরা। আর তাতেই ধরা পড়ে বীভৎস সত্যিটা।
দেখা যায়, এই কুমিরের পেটের ভিতরে আটকে গিয়েছে টিউবের স্টপার। আর সেই কারণেই তার পেটে ঠিক মতো করে খাবার যাচ্ছে না। কোথা থেকে এল এই স্টপার?
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ব্রুকলিন এলাকায় কুমির পাওয়াটা একেবারেই অস্বাভাবিক। এটি এখানে প্রকৃতিগত ভাবে আসেনি। সাধারণত স্থানীয় লোকজন কুমির ছানা পোষ্য হিসাবে নিয়ে আসে। তার পরে তার আকার যখন বাড়তে থাকে, তখন অনেকেই পুকুরে ছেড়ে দেয়। গডজিলায় প্রথম নয়, এর আগে আরও পাঁচটি কুমিরকে একই অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে।
আরও একটি আশঙ্কার কথা বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, এমনও হতে পারে, কুমিরটি বাড়ির পুকুরে থাকার সময়েই হয়তো কোনও ভাবে ওই স্টপার গিলে ফেলে। ফলে তার স্বাস্থ্যের অবনতি হতে থাকে। তখন এই অসহায় প্রাণীটিকে পুকুরে ছেড়ে দিয়ে যান মালিকরা।

এক্সরের ছবি
(Wildlife Conservation Society/Bronx Zoo)এই এলাকায় কুমির পোষা নিষিদ্ধ। সেই কারণেই এভাবে গোপনে কুমির পোষা। আর তাই যাঁরা কুমির পোষেন, তাঁরাও শেষ পর্যন্ত পোষ্যটিকে রাখতে না পারলে এভাবেই গোপনে বাইরে ছেড়ে দেন। আগামী দিনে এই নিয়ে কড়াকড়ির কথাও ভাবা হচ্ছে।
তবে আপাতত গডজিলার চিকিৎসা নিয়েই ভাবছেন পশুচিকিৎসকরা। কী করে তার পেট থেকে স্টপারটি বার করা যায়, সে কথা ভাবছেন তাঁরা। তত দিন পর্যন্ত এই ভাবেই তাকে লাইফ সাপোর্ট দিয়ে রাখা হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।