তৃতীয় এনডিএ সরকারের প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেট আজ, মঙ্গলবার পেশ করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। লোকসভা নির্বাচনের কারণে চলতি বছরের গোড়ায় নিয়মমাফিক পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করা সম্ভব হয়নি। আজ সংসদে ২০২৪–২৫ সালের বাজেট পেশ করেছেন তিনি। লোকসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর উপস্থিতিতে বাজেট পেশ করেন নির্মলা। স্পিকারের চেয়ারে আছেন ওম বিড়লা। সংসদে দেড় ঘণ্টা ধরে বাজেট পেশ করলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। আর তখনই বিহার এবং অন্ধ্রপ্রদেশের জন্য বিশেষ আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। তাতেই আক্রমণে নেমেছে ইন্ডিয়া জোটের নেতারা।
এই বাজেট শোনার পর সরাসরি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে খোঁচা দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। আর আক্রমণ করেছেন সমাজবাদী পার্টির সুপ্রিমো তথা সাংসদ অখিলেশ যাদব। এই বাজেট নিয়ে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সংসদে সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা তো ‘কুর্সি বাঁচাও’ বাজেট। অর্থমন্ত্রীর ভাষণ শেষ হতেই নিম্নমুখী শেয়ার বাজার। কুর্সি বাঁচাতে যাদের দরকার তাদের জন্য বাজেট করা হয়েছে। বিহার এবং অন্ধ্রপ্রদেশকে পাশে রাখার জন্যই এমন বাজেট করা হয়েছে। এটা দেশের বাজেট নয়। বাংলাকে তো কিছুই দেয়নি। বাংলার মানুষকে ওরা সহ্য করতে পারে না। বিজেপি বাংলা থেকে সাফ হয়ে যাবে।’
চলতি অর্থবর্ষে সম্ভাব্য রাজকোষ ঘাটতি হতে পারে ৪.৯ শতাংশ। রাজকোষ ঘাটতি ক্রমশ কমানোর কথা জানান নির্মলা সীতারামন। তবে এই বাজেট নিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে সরাসরি আক্রমণ করেছেন অখিলেশ যাদব। সমাজবাদী পার্টির সুপ্রিমোর বক্তব্য, ‘উত্তরপ্রদেশের দিকে তাকালে ওখানের কি হাল আমরা দেখতে পাই! আর এখানে জোর গলায় বড় বড় কথা বলা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশে যে প্রকল্পগুলি কেন্দ্রের চলছে তার একটাও সময়মতো শেষ হয়নি। সরকার বাঁচানো ভাল বিষয়। বিহার, অন্ধ্রপ্রদেশকে বিশেষ প্যাকেজ দেওয়া হয়েছে। উত্তরপ্রদেশ থেকে তো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন। ওখানকার কৃষকদের জন্য কোনও বড় সিদ্ধান্ত আছে। বেকারত্ব কমাবে কেমন করে! এই অর্ধেক–অস্থায়ী চাকরি দিয়ে।’
আরও পড়ুন: ক্যানসারের তিনটি ওষুধের দাম কমছে, বাড়ছে কোন জিনিসের মূল্য? ঘোষণা নির্মলা সীতারামনের
এছাড়া দেশের চার শ্রেণীকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। গরিব, মহিলা, কৃষক এবং যুবক। দেশের ক্ষুদ্রশিল্প এবং মধ্যবিত্তের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব বাজেটে ঘোষণা করা হয়। কর্মসংস্থান ও দক্ষতায় বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে। বিকশিত ভারতের জন্য় রোডম্যাপ ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী। দেশের অর্থনীতিতে বিকাশের হার ঊর্ধ্বমুখী করা হবে। আর কৃষিক্ষেত্রে সংস্কার ও গবেষণায় বিশেষ জোর দেওয়া হবে। অর্থমন্ত্রীর কথায়, ‘এই প্রস্তাবে সরকার ৯টি বিষয়কে প্রাধান্য দিয়েছে। সেগুলি হল—কৃষি উৎপাদন ও কৃষিতে স্থিতিশীলতা, কর্মসংস্থান ও দক্ষতার উন্নয়ন বৃদ্ধি, মানবসম্পদ বৃদ্ধি ও সামাজিক ন্যায়বিচার, কলকারখানা ও পরিষেবা বৃদ্ধি, চাকরির সুযোগ তৈরি, নগরোন্নয়ন, বিদ্যুৎ, পরিকাঠামো, গবেষণা ও আগামী প্রজন্মের জন্য সংস্কার।’