আজ, মঙ্গলবার সংসদে কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। আর এই বাজেটে সুকৌশলে বাংলাকে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। এমনকী বাংলাকে বঞ্চনা করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদরা এবং স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এই বাজেটের তুমুল সমালোচনা করা হয়েছে কারণ নির্মলা সীতারামনের বাজেটে ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি। অথচ বারবার এই ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের জন্য সংসদে দরবার করেছিলেন ঘাটালের সাংসদ দীপক অধিকারী ওরফে দেব।
বর্ষাকালে এখানে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। তার জেরে গোটা পশ্চিম মেদিনীপুর এবং পূর্ব মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ অংশ প্লাবিত হয়। সাধারণ মানুষজনকে প্রবল সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। বাজেটের বক্তব্যে কোথাও গঙ্গা ভাঙন ইস্যুকে তুলে ধরা হয়নি। যেখানে মালদা এবং মুর্শিদাবাদ জেলায় গঙ্গা ভাঙন বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়ায় এবং জাতীয় ইস্যু হয়ে ওঠে। এই পরিস্থিতিতে বারবার বলা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় সরকার কাজ না করায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিছুদিন আগে ঘোষণা করেন, রাজ্য সরকারই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান করবে। কারও মুখাপেক্ষী আর হবে না বাংলা। এটা প্রতিহিংসামূলক রাজনৈতিক মনোভাব ছাড়া কিছুই নয় বলে মন্তব্য করেছেন সাংসদ দীপক অধিকারী।
আরও পড়ুন: ‘শ্রীভূমির পুজোর জন্য এয়ারপোর্টের রাস্তা জ্যাম হয়’, ব্ল্যাকলিস্টের হুঁশিয়ারি মমতার
এই নিয়ে বেজায় চটেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আগামীকাল বুধবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সংসদে প্রথম বক্তৃতা দেবেন। সেখানে বাংলাকে বঞ্চিত করার বিষয়গুলিকে তুলে ধরা হবে। তার ঠিক আগের দিন ঘাটালের সাংসদ সংবাদসংস্থা পিটিআই–কে দেব বলেন, ‘এটা খুবই দুঃখের। আর এই কাজের পিছনে একটাই কারণ আছে। সেটি হল, বাংলায় বিজেপি খুব কম আসন পেয়েছে লোকসভা নির্বাচনে। আর এটা তৃণমূল কংগ্রেস শাসিত রাজ্য। আমি তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ বলে একথা বলছি না। আমি বুঝি ঘাটালের মানুষের অসুবিধা। প্রত্যেক বছর বন্যা পরিস্থিতিতে তাঁদের খুব কষ্ট করে দিন কাটাতে হয়। নরেন্দ্র মোদীর এটা বোঝা উচিত যে, তিনি শুধু বিজেপি শাসিত রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী নন।’
এছাড়া এবারের নির্মলা সীতারামনের বাজেট বক্তব্যে উঠে আসে হিমাচল প্রদেশ,অসম, বিহার, উত্তরাখণ্ড এবং সিকিমের বন্যা পরিস্থিতির কথা এবং এইসব রাজ্যকে সাহায্যের কথা। কিন্তু বাংলার কথা উঠে আসেনি। এই বিষয়ে ঘাটালের সাংসদ দীপক অধিকারীর বক্তব্য, ‘কয়েক দশক ধরে ঘাটাল বন্যায় ভুগছে। অথচ মোদী সরকার কখনও এখানে নজর দেননি। গত ১১ বছর ধরে অপেক্ষা করেছিলেন তাঁরা কেন্দ্রীয় সরকার কী পদক্ষেপ করে তার জন্য। কিন্তু দুঃখিত, কোনও সদর্থক পদক্ষেপ করা হয়নি। প্রধানমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রীর বোঝা উচিত রাজ্যের কোনটা দরকার। সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা করা উচিত।’