মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ভারতের বাণিজ্য চুক্তির ঘোষণার ফলে উভয় পক্ষের ব্যবসায়ীরাই আরও আস্থা লাভ করেছেন। এমনই দাবি করলেন বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল। তিনি বলেন, ২০২৫ সালের শেষের দিকে এই চুক্তি চূড়ান্ত হতে পারে। পাশাপাশি তাঁর আরও দাবি, এই চুক্তিটি দুই দেশের প্রতিযোগিতামূলক শক্তিকে কাজে লাগিয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করতে সহায়তা করতে পারে। (আরও পড়ুন: 'জামাতের অফিসে পাক রাষ্ট্রদূত', ভারতে আসা আওয়ামি নেতাদের না ধরার আবেদন শুভেন্দুর)
আরও পড়ুন: জঙ্গলে বন্দুকের নলের সামনে… দেশে ফিরে বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতার কথা জানালেন অবৈধবাসী
ইকোনমিক টাইমস কনক্লেভে পীযূষ গোয়েল বলেন, 'এই বছরের শেষের মধ্যে একটি বাণিজ্য চুক্তি করা হবে আমেরিকার সঙ্গে। এই মর্মে প্রধানমন্ত্রী একটি সমঝোতা করে এসেছেন। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এবং ভারতের প্রতিটি ব্যবসায়ীকে এই চুক্তি অনেক বেশি আত্মবিশ্বাস এবং অনেক স্বস্তি দেবে। আমরা বিশ্বাস করি যে ভারত ও আমেরিকা একসাথে বিশ্ব বাণিজ্যকে সত্যিকার অর্থে রূপান্তরিত করতে পারে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা প্রতিযোগিতামূলক হয়েও সত্যিকার অর্থে দুই বন্ধু হিসাবে কাজ করতে পারি। অগ্রগতি এবং সমৃদ্ধির জন্য দুই অংশীদার হিসাবে কাজ করতে পারি আমরা।' (আরও পড়ুন: উরি হামলার পর থেকে বন্ধ, ভারতের কাছে সার্ক বৈঠকের পক্ষে সওয়াল বাংলাদেশের)
উল্লেখ্য, মোদীর দু'দিনের মার্কিন সফরের সময় দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার বিষয়ে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছিলেন ট্রাম্প। এই আবহে ঘোষণা করা হয়েছিল 'মিশন ৫০০'। এই মিশন ৫০০-র আওতায় ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২০৩০ সালের মধ্যে তাদের মোট দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য দ্বিগুণেরও বেশি বাড়িয়ে ৫০০ বিলিয়ন ডলার করার লক্ষ্য নিয়েছে। (আরও পড়ুন: মোদীর সফরে নীতি বদল USA-র? বিমানে মহিলা-শিশু অবৈধবাসীরা শিকলে বাঁধা ছিলেন না)
এদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমালোচনার পরই মার্কিন বোরবন হুইস্কির ওপর শুল্ক কমায় ভারত। এর আগে মার্কিন বোরবন হুইস্কির ওপর ১৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করছিল ভারত। তা এবার ৫০ শতাংশ কমিয়ে ১০০ শতাংশ করা হয়েছে। এর ফলে জনপ্রিয় মার্কিন ব্র্যান্ড জিম বিমের দাম কমতে পারে ভারতে। রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি এই শুল্ক কমানোর নির্দেশিকা জারি করা হয়। (আরও পড়ুন: ১২২ কোটির ব্যাঙ্ক জালিয়াতিতে মাথায় হাত, কষ্টের সঞ্চয় ফেরত পেতে জোট আমানতকারীদের)
এর আগে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকের দিনই 'প্রতিশোধমূলক শুল্ক' আরোপের ঘোষণা করেছিলেন ট্রাম্প। তিনি বলেছিলেন, চড়া শুল্কের কারণে ভারতে ব্যবসা করা অত্যন্ত কঠিন। সাধারণত বিশ্বের যে কোনও দেশের তুলনায় মার্কিন পণ্যের উপরে বেশি শুল্ক ধার্য করে ভারত। সেই পরিস্থিতিতে এবার থেকে ভারত মার্কিন পণ্যের উপরে যে হারে শুল্ক চাপাবে, সেই হারেই ভারতীয় পণ্যের উপরে শুল্ক ধার্য করা হবে। বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সুবিচারের জন্য আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে প্রতিশোধমূলক শুল্ক চাপাব। অর্থাৎ যে দেশ আমেরিকার পণ্যের উপরে যতটা শুল্ক চাপাবে, ঠিক ততটাই শুল্ক চাপানো হবে ওই দেশের উপরে। বেশিও না, কমও নয়।
এদিকে ট্রাম্প প্রশাসনের কমার্স ডিপার্টমেন্টের মনোনীত প্রধান হাওয়ার্ড লুটনিক বলছেন, এই পারস্পরিক শুল্কের প্রস্তাব এপ্রিলের আশপাশে লাগু হতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই চড়া হারে পারস্পরিক শুল্কের ক্ষেত্রে স্বস্তিতে থাকবে না আমেরিকাও। যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের রপ্তানির উপর অন্যান্য দেশগুলি আরও বেশি কর আরোপ করে, তাহলে তা আমেরিকার মুদ্রাস্ফীতি হার বৃদ্ধির ঝুঁকি বাড়িয়ে দেবে। তার ফলে বাকি দেশে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের গতি প্রভাবিত হবে।