বাজারে জোগান কমার জেরে মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কায় সব রকম পেঁয়াজ রফতানির উপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করল কেন্দ্রীয় সরকার। সোমবার এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গত এপ্রিল-জুলাই মাসে পেঁয়াজ রফতানির হার অস্বাভাবিক ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়, যার জেরে বাজারে দাম চড়তে শুরু করেছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ ডিরেক্টোরেট জেনারেল অফ ফরেন ট্রেড জানিয়েছে, এ যাবৎ অবাধ রফতানির অনুমোদন দেওয়া হলেও অবিলম্বে পেঁয়াজ রফতানি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হল।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর শেষ বার পেঁয়াজ রফতানির উপরে এমন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। সে বার ফলন কম হওয়ার কারণে এই নির্দেশ কার্যকর করা হয়েছিল। ওই বছরের ডিসেম্বর মাসে বাজারে পেঁয়াজের দাম উঠেছিল কেজিপ্রতি ৮০ টাকা পর্যন্ত। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে ২০২০ সালের মার্চ মাসে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় কেন্দ্র।
সরকারি হিসেব অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে মোট ৩২৮ কোটি ডলার মূল্যের পেঁয়াজ ও ১১২ কোটি ডলার মূল্যের শুকনো পেঁয়াজ রফতানি করেছে ভারত। এর মধ্যে প্রতিবেশী বাংলাদেশেই পাঠানো হয়েছে ১৫৭.৭% পেঁয়াজ।
সাধারণত, ভারতীয় রসনায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি কেন্দ্র করে অতি সংবেদনশীল দেশবাসী।
সোমবার প্রকাশিত কেন্দ্রীয় সরকারের হিসেবে, গত অগস্ট মাসে দেশের খুচরো বাজারে মুদ্রাস্ফীতির হার বেড়ে দাঁড়ায় ৬.৬৯%। গ্রাহক মূল্য সূচক অনুযায়ী, গত মাসে খাদ্যদ্রব্যে মুদ্রাস্ফীতির হার কমেছে ৯.০৫%। তা সত্ত্বেও অগস্টে সামগ্রিক খাদ্য ও পানীয়ের মুল্যবৃদ্ধির হার বেড়ে দাঁড়ায় ৮.৩%।
ইন্ডিয়া রেটিংস অ্যান্ড রিসার্চ সংস্থার প্রধান অর্থনীতিবিদ সুনীল কুমার সিনহার মতে, সেপ্টেম্বর মাসে খুচরো মুদ্রাস্ফীতির হার কমপক্ষে ৪.৫% না কমলে পরবর্তী তিনটি ত্রৈমাসিকে খুচরো মুদ্রাস্ফীতির হার ৬ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে। মুদ্রাস্ফীতিতে লাগাম দিতে তাই আপাতত পেঁয়াজ রফতানিতে নিশেধাজ্ঞা আরোপের মতো সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার।