কৃষিক্ষেত্রে উন্নয়নের স্বার্থে রবিবার সংসদে তিনটি বিল পেশ করল কেন্দ্রীয় সরকার। বিল নিয়ে রাজ্য সভায় প্রতিবাদের সুর চড়াল কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি।
কেন্দ্রের ওই তিন বিলকে ‘কৃষি-বিরোধী কালো আইন’ বলে অভিহিত করে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী প্রশ্ন তোলেন, ‘ন্যূনতম সমর্থন মূল্য (এমএসপি) নিয়ে কেন কোনও গ্যারান্টির উল্লেখ নেই বিলে?’
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা জেডি(এস) নেতা এইচ ডি দেবেগৌড়া জানতে চান, কোভিড অতিমারীর মাঝে বিল পাশ করানোর এমন তাড়াহুড়ো কেন, তা প্রধানমন্ত্রীকে ব্যাখ্যা করতে হবে। তিনি বলেন, কৃষি বিল কৃষি সম্প্রদায়ের জন্য কী কী স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী সুবিধা দেবে, সে সম্পর্কে সবিস্তারে ব্যাখ্যা পেশ করতে পবে প্রধানমন্ত্রীকে। কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করতে সরকারের লক্ষ্যে কী ভাবে সহায়তা করবে এই বিলগুলি, তা-ও প্রধানমন্ত্রীকে জানাতে হবে বলে দাবি করেন দেবেগৌড়া।
তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেছেন, বিরোধীরা কৃষকদের ভুল বোঝাচ্ছেন। আপনারাই (কেন্দ্র) বলেছেন, ২০২২ সালের মধ্যে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ হবে। কিন্তু বর্তমানের বাজারদরের ভিত্তিতে বলা যায়, ২০২৮ সালের আগে কৃষকদের রোজগার দ্বিগুণ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। প্রতিশ্রুতি দেওয়ার ব্যাপারে আপনাদের বিশ্বাসযোগ্যতাই নেই।’
বিরোধীদের আক্রমণের মুখে ওয়াইএসআর কংগ্রেস দলের সাংসদ ভি ভি রেড্ডি অভিযোগ করেন, ‘কংগ্রেসের এই প্রতিবাদ ভিত্তিহীন। কংগ্রেস আসলে দালালদের দল।’
তাঁর কথায় আমল না দিয়ে ডিএমকে সাংসদ টি কে এস এলাঙ্গোভান বলেন, দেশের গড় আয়ে ২০% অবদানকারী কৃষকদের কার্যত ক্রীতদাসে পরিণত করবে কেন্দ্রের এই তিন বিল। এই বিলের কারণে কৃষকরা মারা পড়বেন এবং তাঁদের পণ্যে রূপান্তর করা হবে।
সমাজবাদী পার্টি সাংসদ রাম গোপাল যাদবের অভিযোগ, ‘মনে হচ্ছে বিল নিয়ে কোনও বিতর্ক চায় না শাসক দল। শুধু বিল পাশ করানোর জন্য তাড়া দেওয়া হচ্ছে। বিল পেশ করার আগে তা নিয়ে কোনও কৃষক সংগঠনের সঙ্গোও আলোচনার প্রয়োজন অনুভব করেনি কেন্দ্রীয় প্রশাসন।’
কেন্দ্র-বিরোধী আক্রমণ সামলাতে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে পালটা অভিযোগ তোলেন বিজেপি সাংসদ ভুপেন্দর যাদব। তিনি বলেন, ‘আমার প্রশ্ন, আপনারা (কংগ্রেস) ক্ষমতায় থাকতে কেন গ্রামীণ রোজগারে ভাটা পড়েছিল? কী কারণে আপনারা বিলের বিরোধিতা করছেন?’
তাঁকে জবাব দিয়ে কংগ্রেস সাংসদ প্রতাপ সিং বাজওয়া বলেন, ‘ভ্রান্ত ধারণা ও ভ্রান্ত সময়ে পেশ করা এই বিলগুলির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে কংগ্রেস। কৃষকদের এই মৃত্যু পরোয়ানায় আমরা কিছুতেই সই করব না।’
অকালি দল সাংসদ নরেশ গুজরাল বলেন, ‘সব পক্ষের বক্তব্য যাতে শোনা যায়, সে কারণে বিলগুলি আগে সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানো হোক। পঞ্জাবের কৃষকদের দুর্বল ভাববেন না।’