আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি–র প্রচার কৌশল ও সাংগঠনিক রণনীতি ঠিক করতে আজ, বৃহস্পতিবার দিল্লিতে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপি–র প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। তাঁর পাশাপাশি বৈঠকে থাকবেন অরবিন্দ মেনন, শিবপ্রকাশ, কৈলাস বিজয়বর্গীয় এবং বিজেপি–র বর্তমান সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা।
রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ, সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায় ছাড়াও এই বৈঠকে বাংলা থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে ডাক পেয়েছেন রাহুল সিনহা। শনিবার সর্বভারতীয় কমিটি থেকে বাদ পড়ায় রীতিমতো ভিডিও প্রকাশ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন তিনি।
২০১৯–এর তৃণমূল থেকে বিজেপি–তে যোগ দেওয়া অনুপম হাজরা দ্বারা অপসারিত হওয়ার পর ওই ভিডিও–তে রাহুল আক্ষেপের সুরে বলেন, ‘৪০ বছর ধরে বিজেপি–র সেবা করার পর এখন তৃণমূল থেকে আসা লোকজনের জন্য আমাকে সরিয়ে দেওয়া হল।’ উল্লেখ্য, বিজেপি–র নতুন সর্বভারতীয় কমিটিতে মুকুল রায়কে সর্বভারতীয় সহ সভাপতির পদ দেওয়া হয়েছে। ২০১৭ সালে তৃণমূল ছাড়ার পর থেকে তিনি বিজেপি–র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন।
২০১৯–এর লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গ থেকে তৃণমূল সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলেন অমিত শাহ। তা না করতে পারলেও রাজ্যের ৪২টি আসনের মধ্যে ১৮টিতে জয় লাভ করে বাংলায় বিজেপি–র অবস্থান বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তিনি।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক রাজ্য বিজেপি–র এক নেতা বলেন, ‘সারা রাজ্য জুড়ে নির্বাচনী কৌশল ঠিক করতেই এদিনের এই বৈঠক ডাকা হয়েছে। একইসঙ্গে সর্বভারতীয় কমিটিতে প্রাক্তন তৃণমূল নেতার বড় পদ পাওয়া নিয়ে যে মতবিরোধ, সমস্যা শুরু হয়েছে তা এই বৈঠকেই মিটিয়ে নেওয়া হবে।’ তিনি ‘হিন্দুস্তান টাইম্স’–কে আরও জানান, ‘বিধানসভা এলাকাভিত্তির কোনও নীতি নির্ধারণ নিয়ে এদিন আলোচনা করা হবে না। শুধুমাত্র মূল বিষয় নিয়েই আলোচনা হবে বৃহস্পতিবারের বৈঠকে।’
রাজ্য বিজেপি–তে জল্পনা যে মুকুল রায়কেই এবার বাংলার নির্বাচনে পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। কারণ, মুকুল রায় রাজ্য নির্বাচন কমিটির আহ্বায়ক থাকাকালীন ২০১৮–র পঞ্চায়েত ভোট এবং ২০১৯–এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি দুর্দান্ত ফল লাভ করেছিল। তাঁর উদ্যোগেই তৃণমূল থেকে অনেকে বিজেপি–তে দিয়েছেন।
ওদিকে, বুধবার দিল্লি যাওয়ার সময় কলকাতা এয়ারপোর্টে রাহুল সিনহার পথ আটকান তাঁর সমর্থকরা। বিমানবন্দরে প্রবেশ পথের বাইরে বিমানে না চড়ার অনুরোধ জানিয়ে শতাধিক নারী–পুরুষ তাঁর পথ আটকে রাখেন। রাহুল সিনহা তাঁদের বলেন, ‘আমাকে আমন্ত্রণ করা হয়েছে বলে আমি দিল্লি যাচ্ছি। ওই বৈঠকে যোগ দিয়ে ফিরে আসি, তার পর আমি আপনাদের সঙ্গে কথা বলব।’