আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে তোলপাড় গোটা দেশ। নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে এবং অভিযুক্তদের আড়াল করার অভিযোগ তুলে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে নাগরিক সমাজ থেকে শুরু করে বিরোধীরা। এই অবস্থায় বিরোধীদের লাগাতার আক্রমণের মুখে পড়ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উত্তর কোরিয়ার স্বৈরাচারী শাসক কিম জং উনের সঙ্গে তুলনা করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং। কেন তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কিম জং-এর সঙ্গে তুলনা করেছেন সেই ব্যাখ্যাও দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: মন্তব্য ঘিরে 'বিতর্কের' ব্যাখ্যা দেন মমতা, 'আমল না দিয়ে' পালটা জবাব ডাক্তারদের
বিজেপি নেতা এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং উত্তর কোরিয়ার স্বৈরশাসক কিম জং উনের মধ্যে তুলনা টেনে বলেন, ‘এঁদের দুজনের মধ্যে একটি দিক মিল রয়েছে। সেটা হল তাঁরা দুজনেই বিরোধিতা সহ্য করতে পারেন না। সেই কারণেই তিনি বলেছিলেন বাংলায় আগুন লাগলে অসম, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা এবং দিল্লিও প্রভাবিত হবে।’এ বিষয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে তিনি আরও বলেন, ‘এটি গণতান্ত্রিক মুখ্যমন্ত্রীর ভাষা হতে পারে না।’
যদিও মুখ্যমন্ত্রী আগেই স্পষ্ট করে বলেছিলেন, যে মন্তব্যটি বিজেপির উদ্দেশ্যে করেছিলেন তিনি। আরজি কর নিয়ে প্রতিবাদকারীদের উদ্দেশ্যে নয়। অন্যদিকে, বিজেপি মন্তব্যটিকে সংবেদনশীল এবং উস্কানিমূলক বলে মনে করে রেহাই দেয়নি। বিজেপির মুখপাত্র শেহজাদ পুনাওয়ালাও বৃহস্পতিবার মমতাকে আক্রমণ করে বলেছিলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী আন্দোলনকারী এবং চিকিৎসকদের অপমান করছেন। তিনি বলেছেন ন্যায়বিচারের দাবি করা অশান্তি সৃষ্টি করার মতো।’
জাতীয় মুখপাত্র উত্তর প্রদেশ, বিহার, আসাম, উত্তর-পূর্ব এবং ওড়িশায় আগুন জ্বলার মমতার মন্তব্যের জন্য ইন্ডিয়া ব্লকের নেতা রাহুল গান্ধী এবং অখিলেশ যাদবকেও কটাক্ষ করেন। তাদের উদ্দেশ্যে তিনি জিজ্ঞাসা করেছেন, যে তারা মমতাকে প্রশ্ন করবেন কিনা।
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রীর বুধবার এই মন্তব্য রাজনৈতিকমহলে ঝড় তুলেছিল। তিনি বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর দলকে ব্যবহার করে আরজি করের ঘটনাকে ঘিরে বাংলায় আগুন লাগাচ্ছেন। তারপরেই মমতা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, ‘আপনি যদি বাংলাকে পুড়িয়ে দেন তাহলে অসম সহ অন্যান্য বিজেপি শাসিত রাজ্য, উত্তর-পূর্ব, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা এবং দিল্লিও জ্বলে উঠবে এবং আপনার চেয়ার ভেঙে দেওয়া হবে। কিছু লোক মনে করে এটা বাংলাদেশ। আমি বাংলাদেশকে ভালোবাসি। তারা আমাদের মতো কথা বলে এবং আমাদের সংস্কৃতি মেনে চলে। কিন্তু, মনে রাখবেন, বাংলাদেশ একটি পৃথক দেশ, এবং ভারত একটি পৃথক দেশ। মোদী এখানে আগুন লাগাতে তার দলকে ব্যবহার করছেন।’
পরে এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্টে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা মমতাকে নিশানা করে বলেন, ‘দিদি, অসমকে হুমকি দেওয়ার সাহস কীভাবে হল? আমাদের লাল চোখ দেখাবেন না। এমনকি আপনার ব্যর্থতার রাজনীতি দিয়ে ভারতকে পোড়ানোর চেষ্টা করবেন না। বিভাজনমূলক ভাষায় কথা বলা আপনার মোটেও উচিত নয়।’