দুর্গাপুর গণধর্ষণ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের তীব্র কটাক্ষ করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু। সংবাদমাধ্যমে মমতার গতকালকের বক্তব্যের কিছু অংশ সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে তাঁর সমালোচনা করেছেন তিনি। এদিকে উদারপন্থী সাংবাদিকদের দিকেও প্রশ্নবাণ ছুড়ে দিয়েছেন রিজিজু। রিজিজু বলেন, 'ভেবে দেখুন, এই বক্তব্য যদি কোনও বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী করতেন! পুরো ব্যবস্থা এবং স্বঘোষিত উদারপন্থী সাংবাদিকরা (আসলে 'ইলিবারেল গ্যাং') দেশে অসহনীয় পরিস্থিতি তৈরি করতে পারত।'
উল্লেখ্য, দুর্গাপুরে ডাক্তারি ছাত্রীকে গণধর্ষণের যে অভিযোগ উঠেছে, তা নিয়ে কঠোর পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েও বিতর্কে জড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। রবিবার উত্তরবঙ্গে যাওয়ার আগে কলকাতা বিমানবন্দরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'ওটি একটি প্রাইভেট কলেজ। মেয়েটির নিরাপত্তার দায়িত্ব তো সেই প্রাইভেট কলেজেরই। রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ কীভাবে মেয়েটি ক্যাম্পাসের বাইরে গেল। জঙ্গল এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে বলে শুনেছি। কী হয়েছে জানি না। পুলিশ খতিয়ে দেখছে। বেসরকারি কলেজগুলির উচিত নিরাপত্তা আরও জোরদার করা। বিশেষ করে ছাত্রীদের নিরাপত্তা আরও জোরদার করা উচিত। রাতে তাদের বাইরে বেরোতে দেওয়া উচিত নয়। পুলিশ কীভাবে জানবে রাতে কখন কে বেরোবে। বিভিন্ন রাজ্যের ছেলেমেয়েদের অনুরোধ করব রাতে যেন তাঁরা না বেরোয়। বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজেরও একটা দায়িত্ব আছে। কেউ যদি রাত সাড়ে ১২টায় কোথাও যায়, পুলিশ তো আর তাদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে বসে থাকবে না।'
মমতার এই মন্তব্য নিয়েই রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। এদিকে দুর্গাপুরে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়ার গণধর্ষণের ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এখনও পর্যন্ত। এদিকে ধৃতদের মধ্যে দুর্গাপুর পুরনিগমের এক অস্থায়ী কর্মীও আছে। এই ঘটনায় মোট পাঁচ জন যুক্ত ছিল বলে জানা গিয়েছে। এখনও পঞ্চম অভিযুক্তের সন্ধানে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
রিপোর্ট অনুযায়ী, নির্যাতিতা তরুণী ওড়িশার জলেশ্বরের বাসিন্দা। তরুণীর পরিবার জানিয়েছে, গত ১০ অক্টোবর রাত সাড়ে আটটা নাগাদ ওই পড়ুয়া সহপাঠীদের সঙ্গে কলেজের বাইরে খেতে বেরিয়েছিলেন। সেই সময় কয়েকজন যুবক ওই তরুণীর পথ আটকায় এবং জোর করে হাসপাতালের পিছনের দিকে থাকা একটি জঙ্গলে নিয়ে যায়। এদিকে দুষ্কৃতীদের তাড়া খেয়ে তরুণীর সঙ্গে থাকা বন্ধুটি পালিয়ে যান বলে জানা যায়। এদিকে গণধর্ষণ করার পর ডাক্তারি পড়ুয়ার মোবাইলটি ছিনিয়ে নেয় দুষ্কৃতীরা। এদিকে ঘটনায় নির্যাতিতার সহপাঠীর বিরুদ্ধেও অভিযোগ দায়ের করেছে পরিবার। অভিযোগ, ওই বন্ধুই তাঁকে বাইরে যেতে বাধ্য় করেছিলেন। অভিযুক্ত এই সহপাঠীকে আটক করে জেরা করে পুলিশ।