প্রসূন সোনওয়ালকার
করোনা আবহের মধ্যেও এবার বড়দিন মনের মতো করে পালন করা যাবে বলে আশাবাদী ছিলেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্রিটেনে আরও কড়া বিধিনিষেধ ঘোষণা করতে বাধ্য হলেন তিনি। যা এবার ঠিকমতো পালন না করা হলে ফের দেশব্যাপী লকডাউনের পথে হাঁটতে বাধ্য হবে প্রশাসন, এমনই জানিয়েছেন বরিস।
ব্রিটেনের সাম্প্রতিক কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা জানিয়েছেন, জুলাই, অগস্ট মাসে যেখানে শ’খানেক মানুষ নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হতেন সে জায়গায় সম্প্রতি প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় হাজারে দাঁড়িয়েছে। তাঁদের চিন্তার কারণ, প্রতি সপ্তাহে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে অক্টোবরের মধ্যেই প্রতিদিন নতুন ৫০ হাজার অ্যাকটিভ কেস দেখা দেবে। হাউজ অফ কমন্সে মঙ্গলবার এই কথাই জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
আর এই পরিস্থিতি বাগে আনতে নতুন কিছু বিধিনিষেধের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। রাত ১০টার পর থেকে পাব, বার, রেস্তোরাঁ, হোটেল ও সংলগ্ন এলাকায় কারফিউ জারি করা হবে। মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এর অন্যথায় বা অন্য বিধি না মানলে ১০ হাজার পাউন্ড পর্যন্ত জরিমানা করা হতে পারে।
ফের ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ অর্থাৎ বাড়িতে থেকে কাজ করার পরমার্শ দেওয়া হয়েছে। যদিও সম্প্রতি বিভিন্ন অফিস, দফতরগুলি খোলার পর ‘ব্যাক টু ওয়ার্ক’ বা কাজে ফেরা শুরু হয়েছিল কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তা আপাতত স্থগতি রাখতে বলা হয়েছে। বিভিন্ন খেলাধুলোয় দর্শকদের ফিরে আনার পরিকল্পনা বাতিল করা হয়েছে। বিয়ের অনুষ্ঠানে ৩০ জনের জায়গায় সর্বাধিক ১৫ জনকে আমন্ত্রণ করা যাবে।
এই সব বিধিনিষেধ আগামী ৬ মাস পর্যন্ত বলবৎ থাকবে বলে জানানো হয়েছে। অর্থাৎ এর মধ্যেই পড়বে বড়দিন। অতএব বড়দিন নিয়ে আশাবাদী বরিস জনসন পিছু হটতে বাধ্য হলেন। একইসঙ্গে যদি কেউ সেল্ফ–আইসোলেশন বা অন্য বিধিনিষেধ লঙ্ঘন করে তাদের ক্ষেত্রে আরও বেশি জরিমানা করার কথা বলা হয়েছে।
ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ওয়েলস এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডের মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তারা এই বিধিনিষেধে সম্মতি জানিয়ে এক বিবৃতি জারি করেছেন। তাতে তাঁরা জনগণের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, আগামী দিনে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা রোধ করতে শরৎ এবং শীতকালে প্রত্যেককে সামাজিক দূরত্ববিধি মানতে হবে, মাস্ক পরতে হবে সঠিকভাবে এবং নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস চালু রাখতে হবেই।