সামনেই উৎসবের মরশুম। তার আগে পঞ্চম পর্যায়ের আনলকে বিভিন্ন গতিবিধি বা কাজে বিধিনিষেধ শিথিল করা হতে পারে। সংশ্লিষ্ট মহলের অনুমান, বিভিন্ন অর্থনৈতিক গতিবিধিতে আরও ছাড় দেওয়া হবে। উৎসবের মরশুমে পর্যটন ক্ষেত্রেও কিছু ছাড় দেওয়ার সম্ভাবনা আছে। তবে এখনও স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় খোলার অনুমতি দেওয়া হবে না বলে ধারণা একাংশের।
আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর চতুর্থ পর্যায়ের আনলক শেষ হচ্ছে। চতুর্খ পর্যায়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে। প্রায় ছ'মাস পরে চালু করা হয়েছে মেট্রো পরিষেবা। শর্তসাপেক্ষে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের স্কুলে যাওয়ার বিষয়ে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে। সর্বোপরি সর্বভারতীয় মেডিক্যাল প্রবেশিকা (নিট) এবং সর্বভারতীয় জয়েন্ট পরীক্ষা (জেইই) পরীক্ষারও আয়োজন করা হয়েছিল। নিট ও জয়েন্ট মোটামুটি ভালোভাবেই উতরেছে।
এই পরিস্থিতিতে পঞ্চম পর্যায়ের আনলকে কোন কোন গতিবিধি বা কাজে ছাড় দেওয়া হতে পারে, দেখে নিন -
শিক্ষা : গত ২১ সেপ্টেম্বর থেকে শর্তসাপেক্ষে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য স্কুল খোলা হয়েছে। লিখিত আকারে অভিভাবকদের অনুমতি নিয়ে পড়া বুঝতে স্কুলে যেতে পারছে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা। তবে এখনই সব শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য স্কুল চালু করার সম্ভাবনা কার্যত নেই। একেবারে উৎসবের মরশুম পার করে স্কুল খোলা হতে পারে।
ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশাঙ্ক জানিয়েছেন, আগামী ১ নভেম্বর থেকে নয়া শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষ বা সেমেস্টারের পড়ুয়াদের পঠনপাঠন শুরু হবে। পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য জানিয়েছেন, ডিসেম্বর থেকে রাজ্যের কলেজে ক্লাস শুরু হবে।
অর্থনৈতিক গতিবিধি বা কাজ : ইতিমধ্যে করোনা সংক্রান্ত বিধিনিষেধ মেনে মল, স্যাঁলো, রেস্তরাঁ, জিম খোলার অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। শারীরিক দূরত্ব মেনে আরও অক্টোবর থেকে আরও অর্থনৈতিক গতিবিধিতে ছাড় দেওয়া হতে পারে।
সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছিলেন, করোনার সংক্রমণ রুখতে কনটেনমেন্ট জোন এবং লকডাউনের বিষয়টি পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে। তবে সেই কারণে যাতে অর্থনৈতিক কাজের গতি বাধাপ্রাপ্ত না হয়, তা নিশ্চিত করতেও বলেছিলেন মোদী।
পর্যটন : লকডাউনের জেরে যে ক্ষেত্রগুলি সবথেকে বেশি ধাক্কা খেয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হল পর্যটন। সম্প্রতি অবশ্য ধীরে ধীরে কিছুটা ঘুরে দাঁড়াচ্ছে তা। কয়েকদিন আগে তাজমহল-সহ কয়কটি দর্শনীয় স্থান খোলা হয়েছে। পঞ্চম পর্যায়ের আনলকে সেই বিধিনিষেধ আরও কিছুটা শিথিল করা হতে পারে।
সম্প্রতি প্রাতিষ্ঠানিক নিভৃতবাস ছাড়াই পর্যটকদের রাজ্যে ঢোকার অনুমতি দিয়েছে বিজেপি-শাসিত উত্তরাখণ্ড।
রেল : আপাতত ট্রেন যাত্রীবাহী ট্রেন চালানোর বিষয়ে রেল মন্ত্রকের তরফে কিছু জানানো হয়নি। দেশে বিশেষ ট্রেনের পাশাপাশি ‘ক্লোন ট্রেন’ চলছে। সাধারণ যাত্রীদের জন্য লোকাল ট্রেন কবে চালু হবে, সে বিষয়েও স্পষ্টভাবে কিছু জানানো হয়নি।
তবে গত ১৭ সেপ্টেম্বর রেলওয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান ভি কে যাদব বলেছিলেন, ‘সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার প্রস্তুত থাকলে এবং তারা যদি আমাদের জানায়, তবেই আমরা শহরতলিতে রেল পরিষেবা পুনরায় চালু করার কথা বিবেচনা করব। এই মুহূর্তে আমাদের করোনা সংক্রমণ অনেকটা কমিয়ে আনতে হবে। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে গ্রিন সিগন্যাল পেলেই আমরা পুনরায় লোকাল ট্রেন পরিষেবা চালু করার পদ্ধতির উপর কাজ করব।’