২০০২ সালে গ্রেফতার হয়েছিলেন প্রদীপ কুমার। বয়স তখন ২৪। বলতে গেলে, ছিলেন সাধারণ এক আইনজীবী। তাঁকে রাষ্ট্র বিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য গ্রেফতার করা হয়েছিল। অভিযোগ ছিল, তিনি পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করছেন ভারতে বসে। সেই অভিযোগেই বন্দি হন। এরপর মামলা থেকে খালাস হয়ে এবার ৪৬ বছর বয়সে তিনি নিযুক্ত হতে চলেছেন উত্তর প্রদেশের কোর্টের 'জাজ' হিসাবে। তাঁকে নিয়ে সদ্য এক বড়সড় রায় দিয়েছে এলাহাবাদ হাইকোর্ট।
উত্তর প্রদেশের ‘হায়ার জুডিশিয়াল সার্ভিসেস’র ক্যাডার হিসাবে কানপুরের বাসিন্দা প্রদীপ কুমারকে নিযুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে এলাহাবাদ হাইকোর্ট। যে প্রদীপ কুমার এককালে অভিযুক্ত ছিলেন পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে। অভিযোগ ছিল, পাকিস্তানের হ্যান্ডেলারদের কাছে, প্রদীপ টাকার বিনিময়ে সেনা সংক্রান্ত তথ্য পাচার করছেন, বলে। প্রদীপের বিরুদ্ধে চলা যাবতীয় অভিযোগ ২০১৪ সালে খারিজ হয়। তিনি খালাস পান মামলা থেকে। তবে ততদিনে কেটে গিয়েছে দশক। বিচারব্যবস্থায় ভরসা রেখে এক দশকের লড়াই লড়ে গিয়েছেন প্রদীপ। আর সেই বিচার ব্যবস্থাতেই এবার গুরুত্বপূর্ণ পদে বসতে চলেছেন কানপুরের বাসিন্দা প্রদীপ কুমার।
গায়ে কাঁটা দেওয়ার মতো এক লড়াই…
কানপুর কোর্টের রায়ে সাজা, অভিযোগ থেকে মুক্তি পেয়ে কোরিয়ার নিয়ে হাল ছাড়েননি প্রদীপ। ধীরে ধীরে নিজেকে তৈরি করেছেন পরের লড়াইয়ের জন্য। বসেছেন PCS(J)(UP Judicial Services)এর পরীক্ষায়। পাশ করেছেন সেই পরীক্ষা। এরপর উত্তর প্রদেশের Higher Judicial Services-র ২০১৬ সালে তিনি যোগ্যতা অর্জন করেন। এর আগে, প্রদীপ কুমারের বিরুদ্ধে, গুপ্তচরবৃত্তি করে তথ্য পাচার ছাড়াও রাষ্ট্রদ্রোহিতা, ষড়যন্ত্রমূলক অপরাধের, এবং অফিশিয়াল সিক্রেট অ্যাক্টের নানান ধারায় মামলা ছিল। সেই সমস্ত থেকে মুক্তি পান তিনি। এই অভিযোগের ইতিহাস সঙ্গে নিয়ে চলা প্রদীপকে যদিও তাঁর পদে নিয়োগের নির্দেশ যোগী সরকারকে দিয়ে দিয়েছে এলাহাবাদ হাইকোর্ট। বিচারপতি সুমিত্রা দয়াল সিং ও বিচারপতি দোনাদি রমেশের বেঞ্চের এই রায় নিঃসন্দেহে অনেকের মনে দাগ কেটেছে। আদালত জোর দিয়েছে, যে ফৌজদারি বিচারে তাঁর খালাস তাকে কোনো কলঙ্ক থেকে মুক্তি দেয় এবং তাঁকে তাঁর কর্মজীবনে এগিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়।