শাহি জামা মসজিদের সভাপতি জাফর আলিকে রবিবার (২৩ মার্চ, ২০২৫) গ্রেফতার করা হল। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছরের ২৪ নভেম্বর উত্তরপ্রদেশের সম্ভলে যে হিংসা ছড়িয়ে পড়েছিল, সেই ঘটনার প্রেক্ষিতেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের একটি বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট - যারা এই ঘটনার তদন্ত করছে বলে জানা গিয়েছে।
পিটিআই সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, জাফর আলিকে গ্রেফতার করার বিষয়টি স্বীকার করেছেন সম্ভলের পুলিশ সুপার কিশন কুমার বিষ্ণোই। তবে, তিনি এ নিয়ে বিস্তারিতভাবে কিছু জানাতে রাজি হননি।
উল্লেখ্য, মুঘল আমলে নির্মিত সম্ভলের এই মসজিদ নিয়ে তখন থেকেই নতুন করে আলোচনা শুরু হয়, যখন কট্টর হিন্দুত্ববাদীরা দাবি করেন, শত শত বছর আগে এই জায়গায় হিন্দু মন্দির ছিল। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায় এবং আদালতও মসজিদে সমীক্ষা করার নির্দেশ দিয়ে দেয়। সেই সমীক্ষা করতে যাওয়া নিয়েই গত বছরের ২৪ নভেম্বর সম্ভলে অশান্তি ছড়ায়। স্থানীয় সংখ্যালঘুরা আদালতের নির্দেশের প্রতিবাদ জানান।
ঘটনা ঘিরে অশান্তি ছড়িয়ে পড়ায় চারজনের মৃত্যুর খবরও সেই সময় সামনে আসে। বহু মানুষ আহত হন। তাঁদের মধ্যে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মী-আধিকারিকরাও ছিলেন।
সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্ভলের হিংসার প্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই যে ১২টি মামলা রুজু করা হয়েছে, তার মধ্যে ছ'টি মামলায় চার্জশিট জমা করেছে সিট। সেই চার্জশিটে পৃষ্ঠার সংখ্যা ৪ হাজারেরও বেশি।
সেই চার্জশিট অনুসারে, গত বছরের হিংসার ঘটনায় মোট ১৫৯ জনকে অভিযুক্তদের তালিকায় রাখা হয়েছে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্রও উদ্ধার করা হয়েছিল। সেই সমস্ত অস্ত্র ব্রিটিশ যুক্তরাজ্য, আমেরিকা, জার্মানি এবং চেক রিপাবলিকে তৈরি করা হয়েছিল বলে চার্জশিটে দাবি করা হয়েছে।
যদিও গত বছরের সেই হিংসার পর থেকে এখনও পর্যন্ত সম্ভলে নতুন করে কোনও অশান্তি হয়নি। তা সত্ত্বেও পুলিশ সেখানে তাদের কড়া পাহারা জারি রেখেছে। এমনকী, এবারের হোলির উৎসবেও সম্ভল ছিল শান্ত।
সবথেকে বড় কথা হল, এবারের হোলির উৎসব পড়েছিল শুক্রবার। যেদিন মুসলিম সম্প্রদায় তাদের সাপ্তাহিক নমাজ পাঠ করে। এবছর সম্ভলে হোলির দিন একদিকে যেমন স্থানীয়রা রং খেলায় মেতে উঠেছেন, তেমনই অন্যদিকে সংখ্যালঘু বাসিন্দারা শান্তিপূর্ণভাবে তাঁদের সাপ্তাহিক নমাজ পাঠ করেছেন। কোথাও কোনও সমস্যা হয়নি।
তবে, রং দেওয়া নিয়ে যাতে কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি না হয়, তার জন্য আগেভাগেই জামা মসজিদ টার্পুলিন শিট দিয়ে আড়াল করে রাখা হয়েছিল। পুলিশের পাশাপাশি আধাসেনাকেও মোতয়েন রাখা হয়েছিল।