১৯৭৮ সালে শহরে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পর থেকে বন্ধ থাকা একটি প্রাচীন মন্দিরের দরজা সম্প্রতি পুনরায় খোলা হয়েছিল উত্তরপ্রদেশের সম্ভলে। সেই মন্দিরে এবার পুজো শুরু হয়ে গিয়েছে। আজ সকালে সেখানে হনুমান বিগ্রহের আরতি করা হয়। এদিকে সেই মন্দিরে শিবলিঙ্গেও ভক্তদের ফুল, জল চড়াতে দেখা গেল। উল্লেখ্য, শাহি জামা মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় জবরদখল এবং বিদ্যুৎ চুরি বিরোধী অভিযান চলছিল গত ১৪ ডিসেম্বর। সেই সময় এই মন্দিরের দরজা পুনরায় খুলে দেওয়া হয়েছিল। (আরও পড়ুন: বাংলাদেশে শ্মশানের মন্দিরে ডাকাতি, হাত-পা বেঁধে খুন করা হল সেবায়েতকে)
আরও পড়ুন: জার্মানির ক্রিসমাস মার্কেটে হামলাকারী ছিলেন 'ইসলামোফোবিক', 'বামপন্থী'!
রিপোর্ট অনুযায়ী, অভিযানের সময় মন্দিরে আচমকাই একটি হনুমান মূর্তি ও শিবলিঙ্গ দেখতে পায় কর্তৃপক্ষ। স্থানীয়দের দাবি, ১৯৭৮ সালে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কারণে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়ে সেই এলাকা থেকে। এরপর থেকে ভস্ম শঙ্কর মন্দিরটির দরজা বন্ধই থেকেছে। এলাকায় বিদ্যুৎ চুরির বিরুদ্ধে এই অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন সাব-ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট বন্দনা মিশ্র। তিনি জানান, তাঁরা ওই অঞ্চলে পরিদর্শন করার সময় মন্দিরটি দেখতে পান। তিনি বলেন, 'বিষয়টি টের পেয়ে আমি সঙ্গে সঙ্গে জেলা প্রশাসনকে বিষয়টি জানাই। এরপর আমরা সবাই একসঙ্গে এখানে আসি এবং মন্দিরটি পুনরায় খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মন্দিরের কাছেই একটি কুয়ো রয়েছে। সেটাও আবার খোলার পরিকল্পনা করছেন আধিকারিকরা।' (আরও পড়ুন: 'এমনটা নয় যে বাংলাদেশের সব হিন্দুকে ভারতে নিয়ে আসতে হবে…', মত তথাগত রায়ের)
আরও পড়ুন: 'ধর্ম নিয়ে যারা চাপাচাপি করে…', বাংলাদেশি হিন্দুদের ওপর হামলা নিয়ে বলল জামাত
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক ঘটনার জেরে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল উত্তরপ্রদেশের সম্ভলে। সেখানে এই গোটা পরিস্থিতির নেপথ্যে আছে এক মসজিদ। প্রসঙ্গত, গত ২৪ নভেম্বর উত্তরপ্রদেশের সম্ভল এলাকায় নতুন করে শাহি জামা মসজিদের সমীক্ষার কাজ শুরু করা হয়। আদালতের নির্দেশেই মুঘল জমানার এই মসজিদে সমীক্ষা চালানো হচ্ছিল। এই আবহে রবিবার সকাল ৬টা নাগাদ এলাকায় পৌঁছে যান সমীক্ষক দলের সদস্যরা। সেই দলে ছিলেন জেলাশাসক রাজেন্দ্র পানসিয়া, পুলিশ সুপার কৃষ্ণ বিষ্ণোই, মহকুমাশাসক বন্দনা মিশ্রা, সার্কেল অফিসার অনুজ চৌধুরী এবং তহসিলদার রবি সোনকর। সমীক্ষা চলাকালীন যাতে কোনও অশান্তি না ছড়ায়, তা নিশ্চিত করতে পুলিশের বিরাট বাহিনী এবং ব়্যাপিড অ্যাকশন ফোর্সও মোতায়েন করা হয়েছিল সেখানে। (আরও পড়ুন: 'ভারতকে খাটো করে দেখবেন না', বাংলাদেশকে কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারি মিঠুনের)
আরও পড়ুন: স্কুলে স্কুলে পড়ছে অবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা, চিহ্নিত করতে নির্দেশ পুরসভার
তবে পুলিশ নিয়ে সমীক্ষকরা সেই এলাকায় পৌঁছতেই উত্তেজনাছড়িয়ে পড়ে। এরপর শুরু হয় সংঘর্ষ। আর মুহূর্তে হিংসার আগুন ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশকে লক্ষ করে পাথর ছুড়তে শুরু করে স্থানীয়রা। একের পর এক গাড়িতে আগুন লাগানো হয়। সেই সময় হামলাকারীদের কেউ কেউ গুলিও চালায় বলে অভিযোগ। আজ পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, বিভিন্ন বন্দুকে ব্যবহৃত আলাদা আলাদা বুলেটের শেল উদ্ধার হয়েছে ঘটনাস্থল থেকে। এদিকে সংঘর্ষে মোট ৪ জনের মৃত্যু হয়েছি বলে জানা যায়। (আরও পড়ুন: আন শহরও আরাকান আর্মির দখলে, রাখাইন প্রদেশে আরও শক্তিবৃদ্ধি বিদ্রোহীদের)
আরও পড়ুন: খেলার মাঠে মোদীর কুটনীতি, আরব গালফ কাপ উদ্বোধনে সাক্ষাৎ কুয়েতের আমিরের সঙ্গে
প্রসঙ্গত, স্থানীয় একটি আদালতের নির্দেশ অনুসারে সম্ভলের ওই মসজিদে সমীক্ষার কাজ শুরু করা হয়েছে। গত ১৯ নভেম্বর কেলা দেবী মন্দির কমিটির তরফ থেকে চনদৌসির একটি আদালতে মামলা রুজু করা হয়। মামলাকারীদের দাবি, সম্ভলের শাহি জামা মসদিজ আসলে শ্রী হরিনাথ মন্দির। যা সম্রাট বাবরের শাসনকালে, ১৫২৯ সালে মসজিদে রূপান্তরিত করা হয়েছিল। এই আবেদনের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট বিচারক আদিত্য সিং ওই দিনই মসজিদের ভিডিয়োগ্রাফি সমীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই মতো সমীক্ষা হয় সেই মসজিদে। তবে আপাতত সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সেই সব সমীক্ষা প্রক্রিয়া স্থগিত রয়েছে।