ধর্ম পরিচয় লুকিয়ে বিয়ে। আর তার জেরেই ধুন্ধুমার কান্ড! গোটা বরযাত্রীর পরিবারকে থানায় নিয়ে গেলেন কনের বাড়ির লোকেরা।
রবিবার উত্তরপ্রদেশের মহারাজগঞ্জ জেলার কোলহুই এলাকায় এক বিয়ের আসরে ঘটনার সূত্রপাত। মুসলমান প্রথায় বিয়ে হচ্ছিল। মৌলবীর কাছে নিকাহ পাঠ করার সময়েই কিছু সহজ উর্দু উচ্চারণ করতে গিয়ে হোঁচট খান হবু বর। আর তাতেই সন্দেহ জাগে কনের বাড়ির লোকেদের।
শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। আর তারপরেই জানা যায় আসল পরিচয়। মুসলমান নন বর ও তাঁর পরিবার! কিন্তু, কোন উদ্দেশ্যে সকলে মিলে ভুয়ো ধর্ম পরিচয় দিয়ে বরযাত্রী এলেন, তার উত্তর মেলেনি। সঙ্গে সঙ্গে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন মেয়ের বাড়ির লোকেরা। মারধরের পর স্থানীয় থানায় নিয়ে যাওয়া হয় বরযাত্রীদের।
সোশ্যাল মিডিয়া থেকে প্রেম :
সিদ্ধার্থনগরের যুবক 'সোহেলের' সঙ্গে পরিচয় হয় মহারাজগঞ্জের ওই যুবতির। মেসেজে প্রেম শুরু। দেখা-সাক্ষাত্, ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। মেয়ের বাড়িতে এসেও আলাপ করে সোহেল।
দুই বছর প্রেমপর্বের পরে মেয়ের পরিবার বিয়েতে সম্মতি জানায়। এদিকে করোনা লকডাউন। তাই নির্দিষ্ট দিনে ৫ জন বরযাত্রী নিয়ে বিয়ে করতে আসেন যুবক। প্রথা মেনে নিকাহ পাঠ করাতে শুরু করেন মৌলবী। আর সেই সময়েই উর্দু শব্দের ভুলভাল উচ্চারণ শুরু করে সোহেল। কিছু শব্দ অনেক চেষ্টায় উচ্চারণ হয় না। এতেই সন্দেহ জাগে মৌলবীর মনে। জীবনে ২-৩ বার কোরান পাঠ করা ব্যক্তিরও তো এই সহজ উর্দু উচ্চারণে সমস্যা হওয়ার কথা নয়!
এরপরেই ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সেখানে অসংলগ্ন কথা বলতে শুরু করে সোহেল। সেই সময়ে তার পকেট থেকে একটি মানিব্যাগ মেলে। তাতে রাখা প্যান কার্ডে দেখা যায় তারই ছবি। কিন্তু নাম অন্য। সোহেল নয়। সাধারণত অন্য ধর্মে এই নাম, পদবী হয়।
এরপরেই যুবকের অভিসন্ধি নিয়ে প্রশ্ন শুরু করেন মেয়ের বাড়ির লোকেরা। যুবকের বন্ধুদেরও আটকে রাখা হয়। শেষমেশ তাদের জবরদস্তি স্থানীয় থানায় নিয়ে যান মেয়ের বাড়ির লোকেরা। মেয়ের বাড়ির সদস্যরা জানিয়েছেন, বিয়ের কথা পাকা হলেও তাঁরা একবারও ছেলের বাড়ি যাননি। তাই তাঁরা এ বিষয়ে কিছুই জানতে পারেননি। তাছাড়া এতদিনের সম্পর্কেও এভাবে পরিচয় গোপন করা যায়, সেই ভাবনাই আসেনি তাদের। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। যুবক ও তার বন্ধুদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।