মচকালেও ভাঙবেন না! জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলের উপরে আমেরিকার আদালত দু'সপ্তাহের যে স্থগিতাদেশ দিয়েছে, সেটার বিরুদ্ধে আবেদন করবেন বলে জানিয়ে দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি জানিয়েছেন, বিচারক যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাতে তিনি বিন্দুমাত্র অবাক হননি। সেই রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করা হবে। আর ট্রাম্পের সেই ঘোষণার ফলে প্রবাসী ভারতীয়রা যে সাময়িক স্বস্তি পেয়েছিলেন, সেটা আবার উদ্বেগে পরিণত হল।
মার্কিন সংবিধানের চতুর্দশ সংশোধনী খারিজ করে দিয়েছিলেন ট্রাম্প
আসলে আনুষ্ঠানিকভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের কুর্সিতে বসেই কার্যনির্বাহী নির্দেশিকা জারি করে ট্রাম্প ঘোষণা করে দেন, যদি না অভিভাবকদের মধ্যে কেউ একজন আমেরিকান না হন বা তাঁর কাছে গ্রিনকার্ড না থাকে, তাহলে তাঁদের সন্তান আমেরিকায় জন্মালেও তাকে মার্কিন বলে বিবেচনা করা হবে না। খারিজ করে দেওয়া হয় মার্কিন সংবিধানের চতুর্দশ সংশোধনী। যে সংশোধনী অনুযায়ী, আমেরিকায় যে জন্মাবে, সে মার্কিন নাগরিকত্ব পেয়ে যাবে।
উদ্বেগে প্রবাসী ভারতীয়রা!
আর ট্রাম্পের সেই ফতোয়ার পরেই প্রবাসী ভারতীয়-সহ মার্কিন মুলুকে থাকা অস্থায়ী ভিসায় থাকা মানুষের ঘুম উড়ে যায়। এইচ-১বি ভিসা (কাজের ভিসা), এইচ৪ ভিসা (যাঁরা কারও উপরে নির্ভরশীল, তাঁদের ভিসা), পড়ুয়া ভিসাধারীরা উদ্বেগে পড়ে যান। কারণ ট্রাম্পের ফতোয়ার আগে তাঁরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব না পেলেও আমেরিকায় জন্মানোর কারণে সন্তান মার্কিন ভিসা পেয়ে যেতেন। ট্রাম্পের নির্দেশের কারণে সেটা বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল।
‘ওই বিচারক এমন সিদ্ধান্ত, তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই’
তবে সাময়িকভাবে তাঁদের রক্ষাকর্তা হয়ে দাঁড়ান সিটেলের বিচারক। তিনি জানান, ৪০ বছরের কেরিয়ারে কখনও এরকম ‘চূড়ান্ত অসাংবিধানিক’ ব্যাপার দেখেননি। সেইসঙ্গে দু'সপ্তাহের জন্য জন্মসূত্র নাগরিকত্ব বাতিলের নির্দেশের উপরে স্থগিতাদেশ দেন। যদিও স্থগিতাদেশের কয়েক ঘণ্টা পরেই ট্রাম্প বলেন, 'অবশ্যই, আমরা (ওই রায়ের বিরুদ্ধে) আবেদন করব। আমার মনে হয়, ওরা সিটলের একটি নির্দিষ্ট বিচারকের কাছে মামলাটি রাখেন। আর ওই বিচারক (যে এমন সিদ্ধান্ত নেবেন, তাতে) অবাক হওয়ার কিছু নেই।'
যদিও ট্রাম্পের প্রাথমিক ফতোয়ার পরেই 'হিন্দুস্তান টাইমস'-কে আমেরিকার ডেমোক্র্যাটিক আইনপ্রণেতা রো খান্না বলেন, 'আমি নিশ্চিত, সুপ্রিম কোর্ট বলবে, যে আমেরিকায় জন্মগ্রহণ করেছে, সে আমেরিকান (মার্কিন নাগরিক)। ট্রাম্প যে নিষ্ঠুর এবং অসাংবিধানিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সেটার নিশানায় আছে এইচ-১বি ভিসাধারী এবং স্টুডেন্ট ভিসাধারীদের আমেরিকায় জন্মানো সন্তানরা।'