মার্কিন ডলারের বিরুদ্ধে কড়া মন্তব্য করলেন কোটাক মাহিন্দ্রা ব্যাঙ্কের এমডি এবং সিইও উদয় কোটক। শুক্রবার ET Awards-এর অনুষ্ঠানে প্যানেলে আলোচনার সময়ে সরাসরি মার্কিন ডলারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন কর্পোরেট কর্তা। তিনি মার্কিন ডলারকে 'বিশ্বের সবচেয়ে বড় আর্থিক সন্ত্রাসবাদী' বলে অভিহিত করেন। তাঁর এই মন্তব্যের জেরে ঝড় উঠেছে আর্থিক মহলে। আরও পড়ুন: গুটখার প্যকেট খুলতেই বেরিয়ে এল ডলার! কলকাতা বিমানবন্দরে উদ্ধার লাখ-লাখ টাকা
নিজের মন্তব্যের পিছনে যুক্তিও দেন তিনি। বলেন, 'আমাদের সমস্ত টাকা নস্ট্রো অ্যাকাউন্টে রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেউ বলে দিতেই পারে- আগামীকাল সকাল থেকে আপনি এই টাকা আর তুলতে পারবেন না। আপনাকে আটকে দেওয়া হবে। এটাই রিজার্ভ মুদ্রার শক্তি।'
বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিশ্ব মরিয়া হয়ে বিকল্প কোনও রিজার্ভ মুদ্রার খোঁজে রয়েছে। আর এমন পরিস্থিতিকেই সুযোগ হিসাবে দেখতে চাইছেন উদয় কোটাক। তাঁর মতে, এই সময়েই ভারতের রুপিকে আন্তর্জাতিক রিজার্ভ মুদ্রায় পরিণত করার সুযোগ রয়েছে। আগামী প্রায় ১০০ বছরের মধ্যে তা বাস্তবায়িত হতে পারে।
'আমার মনে হয় না ইউরোপ পারবে [তাদের মুদ্রাকে রিজার্ভ করতে], কারণ তাদের নানা বিচ্ছিন্ন দেশ রয়েছে। ব্রিটিশ পাউন্ড এবং জাপানের ইয়েন উভয়েরই ডলারের স্থান নেওয়া সুযোগ রয়েছে। যদিও এগুলি মুক্ত মুদ্রা। আর চিনের উপর বিভিন্ন দেশেরই সেভাবে আস্থা নেই,' বলেন তিনি।
বর্তমানে বিশ্বের সর্বাধিক প্রচলিত মুদ্রা মার্কিন ডলার। বর্তমানে আন্তর্জাতিক দেনা-পাওনা মেটানোর মুদ্রা হিসাবে মার্কিন ডলারকে ব্যবহার করা হয়। রিজার্ভ মুদ্রা হিসাবে এর গ্রহণযোগ্যতা অনস্বীকার্য। সিংহভাগ দেশের বৈদেশিক মুদ্রায় গচ্ছিত সম্পদের মজুদ থাকে। আমদানি মূল্য এবং বৈদেশিক ঋণ ও ঋণের সুদ, ইত্যাদি পরিশোধে এই গচ্ছিত মুদ্রা ব্যবহৃত হয়। পণ্য ও সেবা রফতানি ও বিদেশে থাকা কোনও দেশের কর্মীদের মারফত কোনও দেশে বিদেশি মুদ্রা আসে।
রিজার্ভ মুদ্রার সবচেয়ে বড় দিকটি হল, এটি বিভিন্ন দেশের মধ্যে বিনিময়যোগ্য। আর সেখানেই চাহিদা মার্কিন ডলারের।
উদাহরণস্বরূপ, ভারত যদি মধ্যপ্রাচ্য থেকে তেল কেনে, সেক্ষেত্রেও মার্কিন ডলার দিয়েই সেই টাকা মেটাতে পারে।
আর এখানেই সবচেয়ে বড় শক্তি মার্কিন ডলারের। সম্প্রতি ইউক্রেন হামলার প্রেক্ষিতে রাশিয়ার উপর আর্থিক বিধিনিষেধ চাপিয়েছে পশ্চিমী দেশগুলি। তারা জানিয়েছে, ৬০ ডলার প্রতি ব্যারেলের বেশি দাম দিয়ে রাশিয়া থেকে তেল কেনা যাবে না। এদিকে ভারত বর্তমানে রাশিয়া থেকে প্রচুর তেল কিনছে। ৬০ ডলারের উপর দাম গেলেই তাই মুশকিলে পড়ছে ভারত। ডলারে দাম মেটানো যাচ্ছে না। রুবেল বা অন্য মুদ্রায় পেমেন্ট করতে হচ্ছে। তাতে পুরো প্রক্রিয়াটি বিলম্বিত হচ্ছে। এই কারণেই ডলারের একচেটিয়া দাপট নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছেন বিশেষজ্ঞরা। সেই পরিপ্রেক্ষিতে উদয় কোটাকের এই মন্তব্য যথেষ্ট তাত্পর্যপূর্ণ। আরও পড়ুন: রাশিয়া থেকে তেল কেনার প্রক্রিয়া দ্রুত করতে এবার মাঠে নামছে SBI
এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup