সত্যিই কি আমেরিকার থেকে মিসাইল পাচ্ছে পাকিস্তান? সাম্প্রতিক সময়ে এই নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে আমেরিকা এবং ভারতীয় উপমহাদেশে। এই আবহে শুক্রবার মার্কিন দূতাবাসের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, পাকিস্তানকে নতুন কোনও অ্যাডভান্সড মাঝারি পাল্লার এয়ার টু এয়ার মিসাইল (এএমআরএএএম) সরবরাহ করা হবে না। এর আগে রিপোর্টে বলা হয়েছিল যে পাকিস্তান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে এআইএম-১২০ অ্যাডভান্সড মিডিয়াম রেঞ্জ এয়ার-টু-এয়ার মিসাইল (এএমআরএএএম) পেতে পারে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, মার্কিন যুদ্ধ বিভাগের জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে একটি অস্ত্র চুক্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সেই চুক্তিতে মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্রের ৩৫টি ক্রেতা দেশের তালিকার মধ্যে পাকিস্তানের নাম অন্তর্ভুক্তছিল।
তবে মার্কিন দূতাবাস এখন স্পষ্ট করে দিয়েছে যে এই চুক্তিটি আগে স্বাক্ষরিত হওয়া বিদেশি সামরিক বিক্রয় চুক্তির সংশোধনী। ভারতে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস বলেছে, এই চুক্তির কোনও অংশই পাকিস্তানকে নতুন উন্নত মাঝারি পাল্লার এয়ার টু এয়ার মিসাইল (এএমআরএএএম) সরবরাহের জন্য নয়। এই দীর্ঘমেয়াদী ব্যবস্থায় পাকিস্তানের বর্তমান সক্ষমতার কোনও আপগ্রেডও অন্তর্ভুক্ত নয়। দূতাবাসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'গত ৩০ সেপ্টেম্বর আমেরিকার ডিপার্টমেন্ট অফ ওয়ার কয়েকটি চুক্তি ঘোষণার তালিকা প্রকাশ করেছিল। তাতে বিদেশি সামরিক বিক্রয় চুক্তিতে কিছু পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছিল। পাকিস্তান-সহ অনেক দেশের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য। কিছু সংবাদমাধ্যম এই নিয়ে বিভ্রান্তিকর রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। মার্কিন প্রশাসন একটা বিষয় স্পষ্ট করে দিতে চায়, এই চুক্তি সংশোধনের কোনও অংশে পাকিস্তানকে নতুন এআইএম-১২০ডি-৩ মাঝারি পাল্লার আকাশ থেকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র (এএমআরএএএম) দেওয়ার কথা বলা হয়নি। পাকিস্তানের বর্তমান ক্ষমতা বৃদ্ধির কোনও সম্ভাবনা চুক্তিতে আলোচিত হয়নি।'
এদিকে হিন্দুস্তান টাইমসের রিপোর্ট অনুযায়ী, অ্যাডভান্সড মিডিয়াম-রেঞ্জ এয়ার-টু-এয়ার মিসাইল সি৮ এবং ডি৩ ভ্যারিয়েন্টের জন্য চুক্তিটি অ্যারিজোনার টাকসনের রেথিয়ন সংস্থাকে দেওয়া হয়েছিল। চুক্তির মোট মূল্য ছিল ২,৫১২,৩৮৯,৫৫৮ ডলার। প্রতিরক্ষা প্রকাশনা কুভা অনুসারে, এআইএম-১২০ সি৮ মিসাইল হল এআইএম-১২০ডি-এর একটি রফতানি সংস্করণ। চুক্তিতে যুক্তরাজ্য, পোল্যান্ড, পাকিস্তান, জার্মানি, ফিনল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, রোমানিয়া, কাতার, ওমান, কোরিয়া, গ্রিস, সুইজারল্যান্ড, পর্তুগাল, সিঙ্গাপুর, নেদারল্যান্ডস, চেক প্রজাতন্ত্র, জাপান, স্লোভাকিয়া, ডেনমার্ক, কানাডা, বেলজিয়াম, বাহরাইন, সৌদি আরব, ইতালি, নরওয়ে, স্পেন, কুয়েত, ফিনল্যান্ড, সুইডেন, তাইওয়ান, লিথুয়ানিয়া, ইজরায়েল, বুলগেরিয়া, হাঙ্গেরি এবং তুরস্কের নাম রয়েছে। চুক্তিতে বলা হয়েছিল যে ওয়ার্ক অর্ডারটি ২০৩০ সালের ৩০ মে মাসের মধ্যে শেষ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এর আগে রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, পাকিস্তান বিমান বাহিনীর এফ-১৬ বহরের আপগ্রেড নিয়ে আলোচনা শুরু হয় সম্প্রতি। পাকিস্তানের বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল জহির আহমেদ বাবর গত জুলাইয়ে মার্কিন বিদেশ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন বলে দাবি করা হয়েছে। এদিকে রিপোক্টের মতে, পাকিস্তান বিমান বাহিনী বর্তমানে পুরানো সি৫ সংস্করণের মিসাইল ব্যবহার করে। এর মধ্যে ৫০০টি মিসাইল ২০১০ সালে অধিগ্রহণ করেছিল তারা।