রাহুল সিং এবং রেজাউল লস্কর
জো বাইডেনের শাসনকালের শুরুতেই কি কূটনৈতিক দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়তে চলেছে ভারত-আমেরিকা? অনুমতি ছাড়াই ভারতের নিজস্ব অর্থনৈতিক অঞ্চলে একটি মার্কিন রণতরী মহড়া চালানোর পর এমনই শঙ্কা তৈরি হয়েছে। যদিও আমেরিকার দাবি, আন্তর্জাতিক আইন মেনেই চালানো হয়েছে সেই মহড়া।
গত বুধবার একটি বিবৃতিতে মার্কিন নৌসেনার সেভেনথ ফ্লিটের (সপ্তম বাহিনী) তরফে একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, লাক্ষাদ্বীপের পশ্চিমে ১৩০ নটিক্যাল মাইল দূরত্বের জলসীমায় চলাচলের অধিকার এবং স্বাধীনতা তুলে ধরেছে ইউএসএস জন পল জোনস। সঙ্গে হুঁশিয়ারির সুরে জানানো হয়েছে, সমুদ্রপথে ভারত যে অত্যধিক দাবি করে, তা চ্যালেঞ্জ করেই সেই মহড়া চালানো হয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক আইনে প্রদত্ত অধিকার, স্বাধীনতা এবং সমুদ্রের ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে সেই অভিযান চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছে মার্কিন নৌসেনা।
বিষয়টির সঙ্গে অবহিত নৌসেনা আধিকারিকরা জানিয়েছেন, প্রতিটি উপকূলবর্তী দেশের উপকূল থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইল বা ৩৭০ কিলোমিটার এলাকাকে সংশ্লিষ্ট দেশের নিজস্ব অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ওই জলসীমার মধ্যে তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস এবং মাছ-সহ যাবতীয় সম্পদের উপর একমাত্র অধিকার আছে ওই দেশেরই। স্বভাবতই ভারতের নিজস্ব অর্থনৈতিক অঞ্চলে যে কোনও সামরিক গতিবিধির জন্য আগেভাগে নয়াদিল্লির অনুমতির প্রয়োজন হয়। আর আমেরিকা ঠিক সেই কাজটাই করেনি। তবে বিষয়টি নিয়ে ভারতীয় নৌসেনা বা বিদেশ মন্ত্রকের তরফে সরকারিভাবে এখনও কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
তবে আমেরিকার কাছে এরকম মহড়া নতুন কিছু নয়। ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে দক্ষিণ চিন সাগরে একাধিক এরকম মহড়া চালিয়েছে আমেরিকা। সেক্ষেত্রেও আমেরিকার তরফে দাবি করা হয়, জলপথে বেজিং যে অত্যধিক দখলের দাবি করে তার প্রত্যুত্তরে মহড়া চালানো হয়েছে। আর সেখানেই প্রশ্ন তুলেছেন নৌসেনার প্রাক্তন প্রধান অ্যাডমিরাল অরুণ প্রকাশ (অবসরপ্রাপ্ত)। শুক্রবার টুইটারে তিনি বলেন, 'ভারতের জন্য সেভেনথ ফ্লিটের বার্তা কী?' রীতিমতো ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি জানান, ভারত ১৯৯৫ সালের রাষ্ট্রসংঘের সমুদ্র সংক্রান্ত আইনে সমর্থন করেছে। কিন্তু এখনও সেই কাজটা করতে উঠতে পারেনি আমেরিকা। ভারতের অভ্যন্তরীণ আইন লঙ্ঘন মার্কিন অভিযান অত্যন্ত বাজে উদাহরণ। আবার সেটা বিবৃতি জারি করে দাবি করার জন্যও তোপ দেগেছেন তিনি।