'মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন' (অর্থাৎ - আবার আমেরিকা মহান হবে) স্লোগান দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টের কুর্সিতে দ্বিতীবারের জন্য বসেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর, এবার সেই তিনিই কলমের এক খোঁচায় শিক্ষা খাতে সমস্ত সরকারি বরাদ্দ কার্যত বন্ধ করে দিলেন! বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ, ২০২৫) তিনি আরও একটি 'এগজিকিউটিভ অর্ডার'-এ স্বাক্ষর করেন। যার একমাত্র লক্ষ্য হল, মার্কিন শিক্ষা বিভাগকেই তুলে দেওয়া! এ হল ট্রাম্পের সেই 'বিরাট কাজ', যাকে তিনি গত মাসেই 'বিগ কন জব' বলে অবিহিত করেছিলেন!
উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারি (২০২৫) মাসেই ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়ে দিয়েছিলেন অবিলম্বে যুক্তরাষ্ট্রীয় শিক্ষা দফতর বন্ধ করতে হবে। যদিও তিনিও এও স্বীকার করেছিলেন যে এই বিষয়টি অত্যন্ত জটিল।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে যে খবর সামনে আসছে, তা হল - প্রথমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে বসেই নাকি শিক্ষা দফতরে তালা ঝোলাতে চেয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু, সেবার মার্কিন কংগ্রেস এ নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করেনি।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স-এর পেশ করা তথ্য বলছে, মার্কিন শিক্ষা বিভাগ শিক্ষা ক্ষেত্রে অসংখ্য বিষয়ে সহযোগিতা ও সাহায্য করে। এই বিভাগে ৪,২০০ জনেরও বেশি মানুষ চাকরি করেন। এবং সাম্প্রতিকতম বর্ষে এই বিভাগের ব্যয় বরাদ্দ ছিল ২৫১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
এর আগেই ডোনাল্ড ট্রাম্প আভাস দিয়েছিলেন, তিনি এগজিকিউটিভ অর্ডার জারি করে শিক্ষা বিভাগ বন্ধ করে দিতে চান। কিন্তু, সেই সময় তিনি এও স্বীকার করেছিলেন যে বিষয়টি খুব জটিল। এবং এই উদ্দেশ্য সফল করতে হলে মার্কিন কংগ্রেস ও শিক্ষক সংগঠনগুলির সমর্থন তাঁর দরকার।
তথ্যাভিজ্ঞ মহল বলছে, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত মার্কিন শিক্ষাব্যবস্থায় বিরাট প্রভাব ফেলতে চলেছে। বিশেষ করে কে-১২ স্কুল এবং কলেজগুলির টিউশন ফি দেওয়ার ক্ষেত্রে যে বিপুল পরিমাণ অর্থ মার্কিন সরকার খরচ করত, তাতে এবার কোপ পড়বে। সংশ্লিষ্ট একটি রিপোর্টে এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার মার্কিন প্রেসিডেন্টের কুর্সিতে বসার আগে থেকেই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি ক্ষমতায় ফিরলে মার্কিন প্রশাসনের খোলনলচে বদলে দেবেন! আর সেটা করতে গিয়েই একের পর এক এগজিকিউটিভ অর্ডারে সই করে চলেছেন তিনি। যা নিয়ে বিতর্কও কম হচ্ছে না। কিন্তু, ট্রাম্প থামার নামই নিচ্ছেন না।
ট্রাম্পের যুক্তি, সরকারের খরচ কমাতে হবে। আর তাই সরকারি কর্মী ও আধিকারিকদের সংখ্যাও কমাতে হবে। এর জন্য বিভিন্ন সরকারি বিভাগের কর্মীদের কাজ হারাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। অন্যদিকে, ইউএসএইড-এর মতো মার্কিন সরকারি সংস্থা, যার এতদিন ধরে সারা পৃথিবীতে অসংখ্য উন্নয়নধর্মী ও জনকল্যাণমূলক সামাজিক প্রকল্প চালিয়ে এসেছে, সেই সংস্থাগুলিকেই বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।