গাজা নিয়ে এবার আরও কড়া বার্তা ডোনাল্ড ট্রাম্পের। কয়েক সপ্তাহ আগে তাঁর মধ্যস্থতা এবং প্রচেষ্টাতেই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছিল গাজায়। তবে এবার সেই ট্রাম্পই কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বললেন, হামাসের হাতে বন্দি থাকা বাকি ইজরায়েলিদের অবিলম্বে মুক্তি না দেওয়া হলে যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাতিল করে দেওয়া উচিত। শনিবার মধ্যদিবস পর্যন্ত ইজরায়েলি বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার জন্য সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্টের হুঁশিয়ারি, যদি সময়মতো বন্দিদের মুক্তি না দেওয়া হয়, তাহলে সবকিছু ওলটপালট করে দেওয়া হবে। তবে তিনি এও জানান, যুদ্ধবিরতি বাতিল করার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে ইজরায়েল। (আরও পড়ুন: ঢাকায় বইমেলার স্টলে হামলা, 'জিহাদিরা পর্ন দেখে', তোপ তসলিমার, ইউনুসের সরকার বলল…)
আরও পড়ুন: মণিপুরে সময়ের মধ্যে নয়া CM খুঁজে পাবে BJP? নাকি জারি হবে রাষ্ট্রপতি শাসন?
উল্লেখ্য, এর আগে কাতারের দোহায় দীর্ঘ ৯৬ ঘণ্টার আলোচনার পরে এই যুদ্ধবিরতির জন্যে ইজরায়েল এবং হামাসকে রাজি করানো হয়। প্রাথমিক ভাবে ৬ সপ্তাহ এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকবে। এখনও গাজায় প্রায় ৯০ জনের বেশি ইজরায়েলি বন্দি আছে হামাসের হাতে। যদিও তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে গত ৫ ফেব্রুয়ারির রাতে ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছিলেন যে আমেরিকা গাজা 'দখল' করবে। এই আবহে চর্চা শুরু হয় গটা বিশ্বে। আরব বিশ্বে শোরগোল পড়ে যায়। ট্রাম্প বলেছিলেন, 'আমরা আশা করি এমন কিছু করতে পারব যাতে প্যালেস্তিনীয়রা গাজায় আর না ফিরে যেতে চাইবে না। আমরা যদি এই মানুষদের ভালো জায়গায় পুনর্বাসন করে দিতে পারে, স্থায়ীভাবে... সুন্দর বাড়ি থাকবে। তারা সেখানে খুশি থাকবে। এবং সেখানে তাদের কেউ হুলি করবে না, ছুরি মেরে খুন করবে না। যা এখন গাজায় চলছে...' এদিকে ট্রাম্পকে মার্কিন সেনা পাঠানোর বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেছিলেন, 'আমরা যা প্রয়োজন তা করব।' এরই মাঝে ট্রাম্পের বক্তব্য নিয়ে মুখ খোলেন মার্কিন সেক্রেটারি অফ স্টেট মার্কো রুবিও এবং হোয়াটই হাউজের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিট। হোয়াইট হাউজ প্রেস সচিবকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, 'প্রেসিডেন্ট গাজায় সেনা পাঠানোর বিষয়ে বদ্ধপরিকর নন। তিনি সেনা পাঠাবেন বলে বলেননি।' আর রুবিও বলেন, 'যা হবে অন্তর্বর্তী ভাবে হবে। নিশ্চিত ভাবে যখন একটা জায়গা তৈরি করা হচ্ছে, তখন সেখানকার মানুষ অন্য কোথায় থাকবেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়ও এমনটাই হয়। ট্রাম্প যেটা বলেছেন, সেটা হল... আমেরিকা সেখানে গিয়ে ধ্বংসস্তূপ সরাতে সাহায্য করতে পারবে। সেখানে পুননির্মাণে সাহায্য করতে পারবে।'
উল্লেখ্য, গত ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা ভূখণ্ড থেকে আচমকাই ইজরায়েলে ঢুকে পড়ে হামলা চালিয়েছিল হামাস জঙ্গি গোষ্ঠী। নির্বিচারে খুন করা হয়েছিল ইজরায়েলের সাধারণ মানুষজনকে। অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বহু ইজরায়েলিকে। এদিকে এই সুযোগে ইজরায়েলের ওপর হামলা চালানো হয় লেবানন থেকেও। অভিযোগ, ইরান সমর্থিত হিজবুল্লা গোষ্ঠী ইজরায়েলের ওপর হামলা চালায় লেবানন থেকে। এই আবহে লেবাননকে পালটা জবাব দিয়েছে ইজরায়য়েলও। এদিকে গাজায় ঢুকে পড়ে হামাসকে তাড়া করেছিল ইজরায়েলি সেনা। এই সবের মাঝেই ইরানও মিসাইল হামলা চালিয়েছিল ইজরায়েলে। উল্লেখ্য, ইরানে থাকা হামাস প্রধান শিনওয়ারিকে এর আগে খতম করে ইজরায়েল। সব মিলিয়ে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল গাজা যুদ্ধের আঁচ। এই আবহে ইজরায়েলি হামলায় প্রায় ৫৩ হাজার প্যালেস্টাইনির মৃত্যু হয়েছে। অন্য দিকে, হামাসের আক্রমণে নিহত প্রায় দু’হাজার ইজরায়েলি।