নিউ ইয়র্ক এবং নিউ জার্সির একাধিক গুরুদ্বারে অভিযান চালাল ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট। অবৈধ ভাবে মার্কিন মুলুকে বসবাস করা শিখ সম্প্রদায়ের ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতেই এই অভিযান চালানো হয়। উল্লেখ্য, এর আগে নিয়ম ছিল, অবৈধ অভিবাসী ধরতে কোনও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান কিংবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানো যাবে না। তবে ক্ষমতায় আসার পরে আমেরিকার সেই নিয়মকে বাতিল করেন ট্রাম্প। এই আবহে অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীদের ধরতে মার্কিন মুলুকের গুরুদ্বারে অভিযান চালানো হয়েছে। এদিকে বিদেশ মন্ত্রক এর আগে জানিয়ে দিয়েছিল, কোনও ভারতীয় নাগরিক যদি অবৈধ ভাবে আমেরিকায় বসবাস করে থাকে তাহলে তাদের ফেরত নিতে কোনও আপত্তি নেই ভারতের। (আরও পড়ুন: OpenAI-এর পর্দা ফাঁস করা বালাজির মৃত্যু ঘিরে ঘনীভূত রহস্য, সামনে এল ঘরের ছবি)
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের শুল্ক জুজুতে মথা নত, 'সব শর্ত মেনে' অবৈধ অভিবাসীদের ফেরাল কলম্বিয়া
সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেই অভিবাসন এবং নাগরিকত্ব নিয়ে একের পর এক কঠোর নীতি কার্যকর করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিজের কার্যকালের প্রথমদিনই একাধিক নির্বাহী নির্দেশিকায় স্বাক্ষর করেছেন ট্রাম্প। এর জেরে বহু ভারতীয় প্রভাবিত হতে চলেছেন। অনেক ভারতীয় অভিবাসীর মাথায় গভীর চিন্তার রেখা দেখা দিয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে ওয়াশিংটন ডিসি সফরকালে এস জয়শংকরকে এই নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। জানতে চাওয়া হয়েছিল, মার্কিন মুলুকে অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীদের যদি ট্রাম্প প্রশাসন 'ডিপোর্ট' করে, তাহলে কী ভারত তাদের গ্রহণ করবে? জবাবে জয়শংকর অকপটে জানিয়ে দেন, ভারতীয় অভিবাসীদের নিজেদের দেশে ফেরার বিষয়ে সবসময়ই ইতিবাচক মনোভাব রয়েছে ভারত সরকারের। (আরও পড়ুন: ব্রহ্মপুত্রে বিশ্বের বৃহত্তম বাঁধে উদ্বেগ, চিনে গিয়ে বাংলাদেশি উপদেষ্টা বলেন…)
আরও পড়ুন: সামরিক কর্তাদের সফরের পর এবার পাকিস্তানের পথে বাংলাদেশি নৌবাহিনীর জাহাজ
জয়শংকর বলেছিলেন, 'অবৈধ অভিবাসন নিয়ে সব দেশের ক্ষেত্রেই ভারত একই নীতি অনুসরণ করে। আমেরিকার ক্ষেত্রে সেই নীতিতে কোনও হেরফের হয় না। আমরা সব সময়ই বলে থাকি, এই দেশে যদি এমন কোনও ভারতীয় নাগরিক থাকেন যাঁরা বৈধ ভাবে এখানে আসেননি, তাহলে তাঁদের আমরা ফিরিয়ে নিতে কোনও আপত্তি করব না। এটা সব দেশের ক্ষেত্রেই, এই নীতি শুধু আমেরিকার ক্ষেত্রে নয়। এই বিষয়ে আমাদের অবস্থান নিয়ে আমি সেক্রেটারি রুবিওকে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছি।' উল্লেখ্য, মার্কিন অভিবাসন দফতরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে অবৈধ ভাবে মার্কিন সীমান্ত পার করতে চাওয়া যে সব বিদেশি ধরা পড়েছেন, তাদের মধ্যে চতুর্থ সর্বোচ্চ সংখ্যক হচ্ছেন ভারতীয়। গতবছর মোট ২৬৪৭ ভারতীয়কে অবৈধ ভাবে সীমান্ত পার করার জন্যে আটক করে আমেরিকা। (আরও পড়ুন: বন্ধ নিজেদের অনুদান, তবুও ট্রাম্পকে 'ধন্যবাদ' জানাল বাংলাদেশ, ইউনুসের সরকার বলল…)
আরও পড়ুন: 'ভারতীয় আগ্রাসন, ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও...', ইস্যু এক, স্লোগান আরেক!
ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পরই নির্বাহী নির্দেশিকায় সই করে মার্কিন সীমান্তে জরুরি অবস্থা জারি করেছিলেন। এরই সঙ্গে সিবিপি ওয়ান অ্যাপ বন্ধ করে দেন। তাছাড়া জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিকত্বের অধিকার বাতিল করেন তিনি। এদিকে এর আগে স্কুল ও ধর্মীয় স্থানে অভিযান চালাতে পারত না মার্কিন অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। সেই নিয়মের অবসান ঘটিয়েছেন ট্রাম্প। এর মধ্যে ভারতীয়দের ওপর হয়ত সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলবে 'জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব' বাতিলের নির্দেশিকাটি। উল্লেখ্য, বিগত প্রায় ১৫০ বছর ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ডে জন্ম নেওয়া শিশুরা 'জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব' পেয়ে আসছেন। তবে সেই অধিকারকে বাতিল করে নির্বাহী নির্দেশিকা জারি করেন ট্রাম্প। এই নির্দেশিকা কার্যকর হবে ২০২৫ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে।