দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই আমেরিকাকে 'আবারও মহান' বানাতে গিয়ে একের পর এক নীতি গ্রহণ করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ট্রাম্পের নীতির জেরে আমেরিকায় দেখা দিয়েছে মন্দার আশঙ্কা। এই আবহে পড়ছে শেয়ার বাজার। আর এর জেরে বিগত কয়েকদিনে মার্কিন শেয়ার বাজার থেকে হাওয়া হয়েছে কয়েক ট্রিলিয়ন ডলার। এদিকে এর জেরে ভারতীয় শেয়ার বাজারেও প্রভাব পড়তে চলেছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গতকাল এমনিতেই লাল রেখায় শেষ হয়েছিল সেনসেক্সের যাত্রা। আর আজ সকালের প্রথম দশ মিনিটেই সেনসেক্স প্রায় ৪০০ পয়েন্ট পড়েছে। একটা সময় যেখানে সেনসেক্স ৮৬ হাজার পয়েন্ট ছুঁই ছুঁই ছিল, সেই সূচক আজ ৭৩ হাজারে গিয়ে ঠেকেছে। মূলত বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ভারতের থেকে টাকা তুলে নিচ্ছে। এর জেরে রক্তক্ষরণ জারি আছে ভারতীয় বাজারে। (আরও পড়ুন: হাসিনা ও তাঁর পরিবারের কয়েক কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত ঢাকার, পরিমাণ জানলে মুখ হাঁ হবে)
আরও পড়ুন: ট্রাম্প আসার পর বিশ্বের শীর্ষ ৫ বিলিয়নিয়ারের সম্পদ কমেছে কত? শুনলে ঘুরবে মাথা
যুক্তরাষ্ট্রে মন্দার আশঙ্কায় আমেরিকা থেকে জাপান পর্যন্ত শেয়ারবাজারে রক্তক্ষরণ জারি আছে। এর প্রভাব আজ দালাল স্ট্রিটেও দেখা যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর আগে গতকাল ওয়াল স্ট্রিটের সূচকে বড় ধরনের পতন দেখা যায়। এর জেরে জাপান, হংকংয়ের মতো এশিয়ান শেয়ার বাজারেও পতন দেখা যায়। জাপানের নিক্কেই ২২৫ পয়েন্ট বা ২.৭ শতাংশ কমেছে এবং টপিক্স সূচক কমেছে ২.৮ শতাংশ। দক্ষিণ কোরিয়ার কোসপি ২.১৯ শতাংশ এবং কোডেক ২.২২ শতাংশ কমেছে। হংকংয়ের হ্যাং সেং ইনডেক্স ফিউচারস দুর্বল সূচনার ইঙ্গিত দেয়।
এদিকে আমেরিকায় ডাউ জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজ সূচক ৮৯০.০১ পয়েন্ট বা ২.০৮ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৪১,৯১১.৭১ পয়েন্টে, অন্যদিকে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ পড়েছে ১৫৫.৬৪ পয়েন্ট বা ২.৭০ শতাংশ। এই আবহে এসঅ্যান্ডপি দাঁড়িয়ে আছে ৫৬১৪.৫৬ পয়েন্টে। নাসডাক কম্পোজিট ৭২৭.৯০ পয়েন্ট বা ৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৭,৪৬৮.৩২ পয়েন্টে। টেসলার শেয়ারের দাম কমেছে ১৫.৪ শতাংশ, এনভিডিয়ার শেয়ারের দাম কমেছে ৫.০৭ শতাংশ, মাইক্রোসফটের শেয়ারের দাম কমেছে ৩.৩৪ শতাংশ। ডেল্টা এয়ার লাইনের স্টকের দাম ৫.৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরের পর থেকে নাসডাকের সবচেয়ে খারাপ দিন ছিল গতকাল।
ট্রাম্পের শুল্ক পরিকল্পনার কারণে আট দিনের মধ্যে সাতবার এসএন্ডপি ১ শতাংশের বেশি ওপর-নীচ হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ, ট্রাম্পের পদক্ষেপের ফলে হয় সরাসরি অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এদিকে এই সব পদক্ষেপের জেরে আমেরিকায় মন্দা দেখা দেবে কি না, তা নিয়ে ট্রাম্পকে সম্প্রতি প্রশ্ন করা হয়েছিল। এর জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, 'এই ধরনের কোনও ভবিষ্যদ্বাণী করতে আমি পছন্দ করি না। আমরা যেটা করছি, সেটা খুব বড় একটা কাজ। ফলে এখন একটা পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে আমরা চলেছি। আমরা আমেরিকার সম্পদ পুনরুদ্ধার করছি। সেটা একটা খুব বড় কাজ।' তবে ট্রাম্পের এই দাবির ওপর ভরসা রাখতে পারছেন না শেয়ার বাজারের বিনিয়োগকারীরা। এই আবহে রক্তক্ষরণ জারি।