নিউ অরলিন্সে নববর্ষ বরণের সময় ভিড়ে হামলা চালানো জঙ্গি শামসুদ্দিন জব্বরকে নিয়ে যত তথ্য সামনে আসছে, ততই হতবাক হচ্ছেন সবাই। এই জব্বর একটা সময়ে মার্কিন সেনায় ছিলেন। জব্বর আইটি বিশেষজ্ঞও বটে। আবার বিশ্বখ্যাত সংস্থা ডেলয়েটে বার্ষিক ১ লাখ ২০ হাজার ডলার বেতনের চাকরিও করত সে। তবে তা সত্ত্বেও সে অনেক দেনায় ডুবে ছিল বলে জানা গিয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, নিজের প্রাক্তন স্ত্রীর আইনজীবীকে এক ইমেল করে জব্বর দাবি করেছিল, তার বাড়ির ঋণের কিস্তি বাবদ ২৭ হাজার ডলার বকেয়া। এছাড়া ক্রেডিট কার্ডে ১৬ হাজার ডলার বরেয়া ছিল। এছাড়া গতবছর রিয়েল এস্টেট ব্যবসাতে ২৮ হাজার ডলার লোকসান করেছিল জব্বর। (আরও পড়ুন: নিরাপত্তা কোথায়? চট্টগ্রামে হিন্দু যুবককে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গেল মৌলবাদীরা)
আরও পড়ুন: নিউইয়র্কে বন্দুকবাজের হামলায় গুলিবিদ্ধ ১১, ২০২৫-এর শুরুতেই রক্তারক্তি USA-তে
আরও পড়ুন: 'হরে কৃষ্ণ' নাম করতে করতে বাংলাদেশের মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর, আঘাত মহিলা পূজারিকে
জানা গিয়েছে, জব্বর দু'বার বিয়ে করেছিল। দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে তার বিবাহ বিচ্ছেদ হয় ২০২২ সালে। তার প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে জব্বরের সন্তানের কাস্টডি নিয়ে আইনি লড়াই চলছিল। এই আবহে ডেলয়েটে চাকরি, রিয়েল এস্টেটের ব্যবসা, সেনায় কাজ করার অভিজ্ঞতা সত্ত্বেও মানসিক ভাবে প্রবল চাপে ছিল সে। আর্থিক ভাবে এবং পারিবারিক ভাবে একের পর এক সমস্যায় জর্জরিত হয়েছিল জব্বর। এই কারণে সে একাকিত্বে ভুগতে থাকে। আর এফবিআই-এর ধারণা, সেখান থেকেই কট্টরপন্থার পথে পা বাড়িয়েছিল জব্বর। (আরও পড়ুন: 'বাংলাদেশ যে ভাষায় বোঝে...', বড় কথা বললেন অভিষেক, অনুপ্রবেশ নিয়ে তোপ কেন্দ্রকে)
আরও পড়ুন: বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের হাতে ধৃত দুই ভারতীয় নাগরিক, অভিযোগ অনুপ্রবেশের
পুলিশ জানিয়েছে, নিউ অরলিন্সের বার্বন স্ট্রিটে ভিড়ের ওপর দিয়ে ট্রাক চালিয়ে দিয়েছিল শামসুদ্দিন। তারপর ট্রাক থেকে নেমে বন্দুক থেকে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করেছিল সে। ঘটনাটি স্থানীয় সময় নববর্ষের ভোররাত ৩টে ১৫ মিনিটে ঘটে। নিউ অরলিন্সের যেখানে এই হামলার ঘটনাটি ঘটে, সেই জায়গায় ফরাসি বংশোদ্ভূত অধ্যুষিত। সেই ভোররাতে স্থানীয়রা রাস্তায় বর্ষবরণের আনন্দে বিভোর ছিলেন। এই আবহে একটি ফোর্ড এফ-১৫০ ইলেকট্রিক পিকআপ ভ্যান নিয়ে এই হামলা চালায় শামসুদ্দিন। (আরও পড়ুন: 'শান্তিপূর্ণ শুনানি', চিন্ময় প্রভুর জামিনে 'না', আদালত বলল - ‘যাবজ্জীবনের সাজা…’)
আরও পড়ুন: বাংলাদেশিদের জন্যে 'ফাঁদ পাততে' নয়া চাল শাহের, ফেরানো হল 'বাংলাদেশ সেল'
রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রথমে পিকআপ ট্রাক নিয়ে বার্বন স্ট্রিটে বেশ কয়েকজন পথচারীকে পিষে দেয় শামসুদ্দিন। এরপর সে বন্দুক হাতে গাড়ি থেকে নামে এবং গুলি চালাতে থাকে। পরে এনকাউন্টারে পুলিশের গুলিতে খতম হয় সেই বন্দুকবাজ। এফবিআই জানিয়েছে, শামসুদ্দিন টেক্সাসের বাসিন্দা। এদিকে শামসুদ্দিনকে 'জঙ্গি' আখ্যা দিয়েছেন পুলিশ সুপার অ্যান কার্কপ্যাট্রিক। এদিকে এফবিআই এক বিবৃতি জারি করে বলেছে, জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে শামসুদ্দিনের সরাসরি কোনও যোগাযোগ আদৌ ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে, খুব সম্ভবত আইএস-এর কট্টর ভাবাদর্শে বিশ্বাসী হয়ে উঠেছিল শামসুদ্দিন জব্বর। (আরও পড়ুন: হিন্দুদের সরকারি চাকরি থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ নিয়ে মুখ খুলল ইউনুসের সরকার, বলল…)
এফবিআই জানিয়েছে, সেনায় আইটি বিশেষজ্ঞ হিসেবে এক সময় কাজ করেছিল শামসুদ্দিন। আর বর্তমানে টেক্সাসের হিউস্টনে রিয়েল এস্টেট এজেনট হিসেবে কাজ করছিল সে। এই হামলার ঘটনার পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় শামসুদ্দিনের ৪ বছর পুরনো একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। সেখানে সে নিজের দর কষাকষি এবং মানুষের মন ভোলানোর 'দক্ষতা' নিয়ে বলছিল। এর আগে শামসুদ্দিন জব্বরের বিরুদ্ধে দু'টি ছোটখাটো অপরাধের অভিযোগ ছিল। ২০০২ সালে চুরি এবং ২০০৫ সালে মেয়াদ উত্তীর্ণ ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে গাড়ি চালানোর অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। জব্বর দু'বার বিয়ে করেছিল। তার দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে ২০২২ সালে বিবাহ বিচ্ছেদ হয় শামসুদ্দিন জব্বরের।