লোহিত সাগরে জাহাজে হামলার জবাবে ইয়েমেনের ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বড় ধরনের সামরিক হামলা চালিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওই হামলায় অন্তত ২৪ জন নিহত হয়েছে। হামলার আবহে ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, হুথিরা যদি না থামে, তাহলে তাদের অবস্থা নড়কের চেয়েও ভয়াবহ হবে। এদিকে হুথি বিদ্রোহীদের সাহায্য দেয়ার জন্য ইরানকে সতর্কও করেছেন ট্রাম্প। ট্রাম্প বলেছেন, অবিলম্বে হুথিদের সাহায্য বন্ধ করতে হবে। তিনি বলেন, 'ইরান যদি আমেরিকাকে হুমকি দেয়, তাহলে আমেরিকা কোনও নমনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে না।' জানা গিয়েছে, মার্কিন বিমানবাহী জাহাজ থেকে যুদ্ধবিমান উড়ে গিয়েছিল হুথি ঘাঁটিতে হামলা চালাতে। এরই সঙ্গে ড্রোনের ব্যবহারও নাকি করা হয়েছিল এই অভিযানে। (আরও পড়ুন: 'শেখ হাসিনার খুড়তুতো ভাই ভারতে হিন্দু সেজে থাকছেন, আছে আধার কার্ড')
আরও পড়ুন: ধৃত ২১, হোলির দিন গোষ্ঠী সংঘর্ষের পর কেমন আছে সাঁইথিয়া? সংঘাত নানুরেও
এদিকে হুথিদের ওপর হামলার বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, 'এই অভিযান সম্ভবত কয়েক সপ্তাহ ধরে চলতে পারে।' গত জানুয়ারিতে ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর মধ্যপ্রাচ্যে এটিই মার্কিন সেনাবাহিনীর সবচেয়ে বড় সামরিক হামলা। যুক্তরাষ্ট্র যখন তেহরানের ওপর অর্থনৈতিক চাপ বাড়াচ্ছে এবং দেশটির পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনায় বসানোর চেষ্টা করছে তখন এ হামলা চালানো হল। এদিকে আমেরিকার সঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসতে চাইছে না ইরান। এহেন পরিস্থিতিতে হুথিদের ওপর হামলা চালিয়ে পরোক্ষ ভাবে তেহরানকেই ওয়াশিংটন বার্তা পাঠাচ্ছে বলে মনে করছেন অনেক বিশ্লেষক।
এদিকে এই সামরিক অভিযান প্রসঙ্গে হুতি নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, ইয়েমেনের রাজধানী সানায় মার্কিন হামলায় অন্তত ১৩ সাধারণ নাগরিক নিহত ও নয়জন জখম হয়েছেন। ইয়েমেনের উত্তরাঞ্চলীয় সা'দা প্রদেশে আরও একটি মার্কিন হামলায় চার শিশু ও এক নারীসহ ছয়জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন ১১ জন। হুথিদের এক মুখপাত্র বলেছেন, তাদের সামরিক বাহিনী মার্কিন হামলার জবাব দিতে পুরোপুরি প্রস্তুত। সানার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, হুথিদের একটি গোপন আস্তানা লক্ষ্য করে হামলাটি চালানো হয় এবং বিস্ফোরণগুলো এতটাই শক্তিশালী ছিল যে পুরো এলাকা তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়।
উল্লেখ্য, হুথিরা ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে বিভিন্ন দেশের জাহাজের বিরুদ্ধে ১০০টিরও বেশি হামলা চালিয়েছে। এর জন্যেই মার্কিন সামরিক বাহিনী ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোনের মাধ্যমে এই অভিযান চালিয়েছে। হুথিরা গাজায় হামাসের প্রতি তাদের সংহতি দেখাতে জাহাজে হামলা চালিয়ে গিয়েছে বলে দাবি করে এসেছে। এই আবহে বাইডেন আমলেও হুথিদের থামাতে আমেরিকা চেষ্টা করেছিল। তবে সেই প্রচেষ্টা ছিল সীমিত আকারের। তবে এবার ট্রাম্প হুথিদের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক হয়েছেন।