পশ্চিমা দেশগুলিকে মদত কারা আফগানদের মৃত্যু পরোয়ানা তৈরি হয়ে গিয়েছে। তালিবানের হাতে 'তালিকা' তুলে দিয়ে এই কাজ করতে সাহায্য করেছে খোদ আমেরিকা। এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করা হল মার্কিন এক সংবাদ ওয়েবসাইটের তরফে। জানা গিয়েছে, কাবুল বিমানবন্দরে আসতে দিতে মার্কিন নাগরিক এবং আমেরিকা সহ পশ্চিমা দেশগুলিকে সাহায্য করা আফগান নাগরিকদের তালিকা তালিবানের হাতে তুলে দিয়েছে আমেরিকা। এর নেপথ্যে উদ্দেশ্য সত্ হলেও আখেড়ে এই তালিকাই না সেই আফগানদের মৃত্যু পরোয়ানায় পরিণত হয়, তা নিয়ে চিন্তিত মার্কিন সেনার উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের একাংশ। পাশাপাশি এই নিয়ে চিন্তিত বহু কংগ্রেস সদস্য।
উল্লেখ্য, কাবুল বিমানবন্দরে ঢোকার রাস্তাগুলিতে চেকপয়েন্ট বসিয়েছে তালিবান। যদিও সেই চেকপয়েন্ট সত্ত্বেও বৃহস্পতিবার কাবুল বিমানবন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটল। এদিকে সাধারণ আফগান নাগরিকদের বেশ কয়েকদিন ধরেই দেশ না ছাড়ার 'আবেদবন' জানাচ্ছিল তালিবান। এরই মাঝে বুধবার সংবাদ সম্মেলন করে তালিবান জানিয়ে দেয় কোনও আফগানকে দেশ ছাড়তে দেওয়া হবে না। এমনকি সংখ্যালঘু শিখদেরও ভারতে আসার বিমানে উঠতে দেয়নি তালিবান। এরই মাঝে কোন কোন আফগান নাগরিককে বিমানবন্দরে আসতে দেওয়া হোক, সেই সংক্রান্ত একটি তালিকা তৈরি করে তালিবানের হাতে তা তুলে দিয়েছে আমেরিকা। বিমানবন্দরের বাইরের নিরাপত্তির জন্য যে আমেরিকা পুরোপুরি তালিবানের উপর নির্ভরশীল, তা একপ্রকার স্পষ্ট।
এদিকে গত বেশ কয়েকদিন ধরেই মার্কিন সেনার সঙ্গে কাজ করা ট্রান্সলেটর বা ইন্টারপ্রেটরদের খুঁজছে তালিবান। বিভিন্ন খবর প্রকাশিত হয়েছে, যাতে দেখা গিয়েছে যে মার্কিনিদের মদত করা আফগানদের আত্মসমর্পণ করতে বলা হচ্ছে। সরাসরি সেই নির্দিষ্ট আফগানের খোঁজ না পেলে হুমকি চিঠি যাচ্ছে পরিবারের সদস্যের কাছে। মৃত্যদণ্ডের ঘোষণা করা হচ্ছে। এরই মাঝে এবার মার্কিনিদের তুলে দেওয়া তালিকা ব্যবহার করেই পশ্চিমাদের 'বন্ধু' আফগানদের খুঁজে খুঁজে তালিবা মারতে শুরু করবে কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। আতঙ্কে যেই আফগানরা দেশ ছাড়তে চান, তাঁদের নামের তালিকা এখন তালিবানের হাতে। কারণ মুখে 'সাধারণ ক্ষমা'র কথা বললেও আদতে তালিবানের কাজে তা প্রতিফলিত হচ্ছে না।
এর আগে তালিবান বলেছিল, 'দেশের যোগ্য-দক্ষ-শিক্ষিত মানুষ দেশেই থাকুক। দেশের পুনর্গঠনে সাহায্য করুক।' তবে অনেকেরই সংশয়, আদতে দেশের ভাবমূর্তি যাতে ক্ষুণ্ণ না হয়, এবং প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়েই এই কথা বলছে তালিবান। এই আবহে সরাসরি কীভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তালিবানের হাতে তালিকা তুলে দিল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সেদেশের অভ্যন্তরেই।