নিউইয়র্কের কুইন্সের আমাজুরা নাইটক্লাবে বন্দুকধারীর হামলায় অন্তত ১১ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেল রিপোর্টে। উল্লেখ্য, বছরের শুরুতেই আমেরিকার একাধিক জায়গায় একের পর এক হামলার ঘটনা ঘটছে। এর আগে নিউ অরলিন্সে গাড়িতে পিষে এবং বন্দুকের গুলিতে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। সেই হামলায় জখম হয়েছিলেন ৩০ জন। এদিকে লাস ভেগাসে ট্রাম্প হোটেলের সামনে গাড়ি বিস্ফোরণে এক ব্যক্তির মৃত্যু ঘটেছে এবং ৭ জন জখম হয়েছেন। আর এরই মধ্যে এবার বছরের প্রথম দিনে নিউইয়র্কে এহেন ঘটনা। (আরও পড়ুন: 'শান্তিপূর্ণ শুনানি', চিন্ময় প্রভুর জামিনে 'না', আদালত বলল - ‘যাবজ্জীবনের সাজা…’)
আরও পড়ুন: বাংলাদেশিদের জন্যে 'ফাঁদ পাততে' নয়া চাল শাহের, ফেরানো হল 'বাংলাদেশ সেল'
স্থানীয় বাসিন্দা ও সাংবাদিকদের পোস্ট করা সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে দেখা গিয়েছে, কুইন্সের আমাজুরা নাইটক্লাবের সামনে একাধিক পুলিশের গাড়ি। জানা গিয়েছে, নিউইয়র্ক পুলিশের ১০৩তম প্রিসিঙ্কটের কাছেই অবস্থিত এই ক্লাবটি। স্থানীয় সয় রাত ১১টা ২০ মিনিটে এই হামলার কথা সামনে আসে। এরপরই সেই রাস্তা চারদিক দিয়ে বন্ধ করে দেয় পুলিশ। সেই ক্লাবটি ঘিরে ফেলে পুলিশ। সেখানে অ্যাম্বুলেন্স আসে। (আরও পড়ুন: 'হরে কৃষ্ণ' নাম করতে করতে বাংলাদেশের মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর, আঘাত মহিলা পূজারিকে)
আরও পড়ুন: নিরাপত্তা কোথায়? চট্টগ্রামে হিন্দু যুবককে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গেল মৌলবাদীরা
এর আগে নিউ অরলিন্সে নববর্ষ পালনকারীদের ভিড়ে ট্রাক চালিয়ে দিয়ে এবং গুলি চালিয়ে অন্তত ১৫ জনকে খুন করে এক দুষ্কৃতী। এই ঘটনার তদন্তে নেমেছে এফবিআই। জানা গিয়েছে, হামলাকারীর নাম শামসুদ্দিন জব্বর। হামলাকারী মার্কিন নাগরিক। তার জন্ম আমেরিকাতেই হয়েছিল। সে আবার প্রাক্তন মার্কিন সেনাকর্মী। এদিকে যে গাড়িতে করে শামসুদ্দিন এই কাণ্ড ঘটিয়েছে, তাতে আইএসআইএস-এর পতাকা পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছে এফবিআই। এদিকে ৪২ বছর বয়সি শামসুদ্দিন পুলিশি এনকাউন্টারে মারা গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। (আরও পড়ুন: টেসলার গাড়ি করে ট্রাম্প হোটেলে নাশকতার ছক? ভেগাসে বিস্ফোরণ নিয়ে বিস্ফোরক মাস্ক!)
আরও পড়ুন: হাসিনাকে না পেলে ভারতের সাথে সম্পর্কে ছিন্ন? 'অন্য স্বার্থ' মনে পড়তেই ঢাকা বলল…
পুলিশ জানিয়েছে, নিউ অরলিন্সের বার্বন স্ট্রিটে ভিড়ের ওপর দিয়ে ট্রাক চালিয়ে দিয়েছিল শামসুদ্দিন। তারপর ট্রাক থেকে নেমে বন্দুক থেকে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করেছিল সে। ঘটনাটি স্থানীয় সময় নববর্ষের ভোররাত ৩টে ১৫ মিনিটে ঘটে। নিউ অরলিন্সের যেখানে এই হামলার ঘটনাটি ঘটে, সেই জায়গায় ফরাসি বংশোদ্ভূত অধ্যুষিত। সেই ভোররাতে স্থানীয়রা রাস্তায় বর্ষবরণের আনন্দে বিভোর ছিলেন। এই আবহে একটি ফোর্ড এফ-১৫০ ইলেকট্রিক পিকআপ ভ্যান নিয়ে এই হামলা চালায় শামসুদ্দিন। (আরও পড়ুন: এটাই কি বৈষম্য বিরোধিতার নমুনা? BCS থেকে হিন্দুদের নাম বাদে প্রশ্ন বাংলাদেশে)
রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রথমে পিকআপ ট্রাক নিয়ে বার্বন স্ট্রিটে বেশ কয়েকজন পথচারীকে পিষে দেয় শামসুদ্দিন। এরপর সে বন্দুক হাতে গাড়ি থেকে নামে এবং গুলি চালাতে থাকে। পরে এনকাউন্টারে পুলিশের গুলিতে খতম হয় সেই বন্দুকবাজ। এফবিআই জানিয়েছে, শামসুদ্দিন টেক্সাসের বাসিন্দা। এদিকে শামসুদ্দিনকে 'জঙ্গি' আখ্যা দিয়েছেন পুলিশ সুপার অ্যান কার্কপ্যাট্রিক। এদিকে এফবিআই এক বিবৃতি জারি করে বলেছে, জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে শামসুদ্দিনের সরাসরি কোনও যোগাযোগ আদৌ ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে, খুব সম্ভবত আইএস-এর কট্টর ভাবাদর্শে বিশ্বাসী হয়ে উঠেছিল শামসুদ্দিন জব্বর। (আরও পড়ুন: দুর্ঘটনার ৪০ বছর পর! অবশেষে ভোপাল থেকে গ্রিন করিডর করে সরানো হল বিষাক্ত বর্জ্য)
এফবিআই জানিয়েছে, সেনায় আইটি বিশেষজ্ঞ হিসেবে এক সময় কাজ করেছিল শামসুদ্দিন। আর বর্তমানে টেক্সাসের হিউস্টনে রিয়েল এস্টেট এজেনট হিসেবে কাজ করছিল সে। এই হামলার ঘটনার পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় শামসুদ্দিনের ৪ বছর পুরনো একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। সেখানে সে নিজের দর কষাকষি এবং মানুষের মন ভোলানোর 'দক্ষতা' নিয়ে বলছিল। এর আগে শামসুদ্দিন জব্বরের বিরুদ্ধে দু'টি ছোটখাটো অপরাধের অভিযোগ ছিল। ২০০২ সালে চুরি এবং ২০০৫ সালে মেয়াদ উত্তীর্ণ ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে গাড়ি চালানোর অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। জব্বর দু'বার বিয়ে করেছিল। তার দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে ২০২২ সালে বিবাহ বিচ্ছেদ হয় শামসুদ্দিন জব্বরের।