আমেরিকা কলকাঠি নাড়তেই কি পতন হয়েছিল শেখ হাসিনার? এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে অনেকেরই মনে। তবে সেই বিষয়ে এবারে নিজেদের ভূমিকা পুরোপুরি অস্বীকার করল ওয়াশিংটন। হোয়াইট হাউজের প্রেস সচিব ক্যারিন জঁ পিয়েরকে এই নিয়ে প্রশ্ন করা হয় গতকাল। তিনি সাফ ভাষায় দাবি করেন, বাংলাদেশের সরকার বদলের সঙ্গে আমেরিকার কোনও যোগ নেই। যদিও সারা বিশ্বে বহু জায়গায় সরকার ফেলার বিষয়ে আমেরিকার দিকে আঙুল উঠেছে ঐতিহাসিক ভাবে। এই আবহে বাংলাদেশ নিয়েও তাদের দিকে আঙুল উঠতে শুরু করেছে। তবে এই সব অভিযোগ অস্বীকার করল আমেরিকা। (আরও পড়ুন: হাসিনা ভারতে থাকলে দিল্লি-ঢাকা সম্পর্কে চিড় ধরবে না, জানালেন ইউনুসের মন্ত্রী)
আরও পড়ুন: 'দেশটা কারও বাপের না', চতুর্থ দিন রাস্তা 'দখল', বাংলাদেশে গর্জন বাড়ছে হিন্দুদের
সম্প্রতি ইকোনমিক টাইমসে একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল যে শেখ হাসিনা দাবি করেন, আমেরিকার জন্যেই তাঁর সরকার পড়ে গিয়েছে। যদিও পরবর্তীতে হাসিনা পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় দাবি করেন, তাঁর মা বাংলাদেশ ছেড়ে আসার পর এমন কোনও বিবৃতি দেননি। এই আবহে আমেরিকায় ওয়াশিংটনকে এই নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্ন করা হলে হোয়াইট হাউজের প্রেস সচিব বলেন, 'বাংলাদেশের ঘটনার সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পৃক্ততা ছিল না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার এই ঘটনাগুলির সাথে জড়িত ছিল এমন যেকোনও প্রতিবেদন গুজব এবং কেবলই মিথ্যা। এটি বাংলাদেশের জনগণের কারণে হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি যে বাংলাদেশি জনগণই বাংলাদেশ সরকারের ভবিষ্যত নির্ধারণ করবে। যে অভিযোগ আমি বলেছি এবং বলব, তা সত্য নয়।'
উল্লেখ্য, এর আগে এর রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলেদেশের দক্ষিণে অবস্থিত প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন্স আমেরিকার হাতে তুলে না দেওয়ার জেরেই ষড়যন্ত্র করে তাঁর সরকার ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন শেখ হাসিনা। নয়াদিল্লিতে অজ্ঞাতবাসে থেকেই বিবৃতি দিয়ে আমেরিকার বিরুদ্ধে নাকি বিস্ফোরক সব অভিযোগ করেছেন হাসিনা। রিপোর্টে দাবি করা হয়, শেখ হাসিনা নাকি বলেন, 'আমি পদত্যাগ করেছি যাতে দেশে আরও মৃত্যুমিছিল না হয়। ছাত্রদের মৃতদেহের ওপর ভর করেই ক্ষমতা দখল করতে চাইছিল বিএনপি। তবে আমি সেটা হতে দিতে পারতাম না। তাই আমি প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সরে দাঁড়াই। আমি যদি সেন্ট মার্টিন দ্বীপটি ছেড়ে দিতাম, তাহলে আজও আমি ক্ষমতায় থাকতে পারতাম। আমেরিকাকে যদি বঙ্গোপসাগরে ছড়ি ঘোরাতে দিতাম, তাহলে আজও আমি ক্ষমতায় থাকতাম।'
যদিও পরে হাসিনা পুত্র জয় দাবি করেন, তাঁর মায়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। এই ধরনের কোনও বিবৃতি তিনি দেননি। যদিও এর আগে বাংলাদেশের সংসদে দাঁড়িয়ে হাসিনা আমেরিকার বিরুদ্ধে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ তুলেছিলেন। তখনও তিনি বলেছিলেন, এক শ্বেতাঙ্গ তাঁকে অফার দিয়েছেন যে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে যদি নৌঘাঁটি করতে দেওয়া হয়, তাহলে কেউ তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পাপবে না। এদিকে এর আগে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বিএনপি ঘনিষ্ঠ ছিলেন বলেও অভিযোগ।