F-16 যুদ্ধবিমান রক্ষণাবেক্ষণে পাকিস্তানকে সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমেরিকা। গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবারই পাকিস্তানকে ৪৫০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত অনুমোদন করে মার্কিন প্রশাসন। যুদ্ধবিমানের হার্ডওয়্যার, সফ্টওয়্যার সহ পাকিস্তানকে ৪৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রতিরক্ষা সামগ্রী দেওয়া হবে আমেরিকার তরফে। এদিকে ওয়াশিংটনের এই সিদ্ধান্তে নাখুশ ভারত। কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে সেই অসন্তোষের কথা ওয়াশিংটনের কানে পৌঁছে দিয়েছে দিল্লি। এমন কি মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিনের সঙ্গে ফোনালাপের সময় কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংও এই বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তবে এই ঘটনায় দুই দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর সুর ‘আলাদা’।
এক টুইটে রাজনাথ সিং জানান, আমেরিকা যেভাবে F-16 যুদ্ধবিমানের ভরণপোষণ সংক্রান্ত প্যাকেজ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা নিয়ে যে দিল্লি সন্তুষ্ট নয়। মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিবের সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি তিনি উত্থাপন করেছেন বলে টুইটে দাবি করেন। যদিও রাজনাথের এই টুইটের পর লয়েড অস্টিনের তরফে একটি টুইট করে এই ফোনালাপের বিষয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেন। সেই বিবৃতিতে F-16 যুদ্ধবিমানের কোনও উল্লেখই নেই।
এদিন এক বিবৃতি প্রকাশ করে মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতরের তরফে বলা হয়, ‘প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। তাঁদের মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ের বেশ কিছু প্রতিরক্ষা বিষয়ক ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়। পূর্ব এশিয়া এবং ভারত মহাসাগর অঞ্চলের এই সব ইস্যু নিয়ে উভয় দেশেরই স্বার্থ জড়িয়ে। আইএনএস বিক্রান্তের কমিশনের জন্য রাজনাথ সিংকে অভিন্দন জানান লয়েড। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের সুরক্ষার স্বার্থে ভারতের ভূমিকা কত গুরুত্বপূর্ণ, তা তুলে ধরেন লয়েড। এই আবহে ভারত এবং মার্কিন সামরিক বাহিনী পারস্পরিক বোঝাপড়া বাড়াবে। মাঝারি দূরত্বের মার্কিন জাহাজ ভারতে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য থামবে। মহাকাশ, সাইবার এবং কৃত্তিন বুদ্ধিমত্তা নিয়েও পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে বৈঠক করার বিষয়ে আলোচনা হয় দুই নেতার। শান্তির লক্ষ্যে কোয়াডের গুরুত্ব নিয়েও আলোচনা হয়।’ এই বিবৃতিতে ভারতের সম্পর্কে বেশ ভালো ভালো কথা বলা হলেও ভারতের উদ্বেগের বিষয়টি উল্লেখ পর্যন্ত করা হয়নি।
প্রসঙ্গত, ওয়াশিংটনের তরফে ভারতকে আস্বস্ত করা হয়েছে যে পাকিস্তানকে F-16 নিয়ে এই সাহায্যের ফলে ভারত কোনও ভাবে প্রভাবিত হবে না বা উপমহাদেশের শক্তির কাঁটা নড়বড়ে হবে না। তবে ভারতের বিরুদ্ধে F-16 যুদ্ধবিমান ব্যবহার করার ‘অনুমতি’ (পাক-মার্কিন চুক্তি অনুযায়ী) না থাকলেও ২০১৯ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ভারতের উপর তা প্রয়োগ করা হয়েছিল। বালাকোট হামলার প্রতিশোধ হিসাবে পাকিস্তান F-16 ব্যবহার করেছিল। এই আবহে ভারতের ‘উদ্বেগ’কে যদি আমেরিকা ‘উপেক্ষা’ করতে থাকে, তাহলে ভারতের তরফে কি প্রতিক্রিয়া আসে, সেটাই দেখার।