বিগত কয়েকদিন ধরেই কাঁওয়ার যাত্রা নিয়ে উত্তরপ্রদেশ সকারের একটি নির্দেশিকা ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে ভারতে। কাঁওয়ার যাত্রার রুটে সব দোকানের ওপরে মালিকের নাম লেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সপ্রিম কোর্টের নির্দেশে অবশ্য সেই নির্দেশিকা আপাতত কার্যকর করা হয়নি। এরই মাঝে এই নিয়ে ওয়াশিংটনে মার্কিন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলারকে প্রশ্ন করলেন এক পাক সাংবাদিক। সেই সাংবাদিক বলেন, 'বিজেপি সরকার রেস্তোরাঁর মুসলিম মালিকদের তাদের নাম প্রদর্শনে বাধ্য করছে। এই নিয়ে আমেরিকার কী মত?' আর এর জবাবে মার্কিন আধিকারিক জানান, এই নির্দেশিকা তো এখনও কার্যর হয়নি। (আরও পড়ুন: মমতার 'আশ্রয়' মন্তব্যের আবহে এপারে কতজন বাংলাদেশি? পরিসংখ্যান দিল BSF)
আরও পড়ুন: মিলল মোংলা বন্দর ব্যবহারের অনুমতি, বাংলাদেশের পিচে চিনকে 'আউট' করল ভারত
ম্যাথিউ মিলার পাক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বলেন, 'আমরা রিপোর্ট দেখেছি। আমরা এটাও দেখেছি যে গত ২২ জুলাই ভারতের সুপ্রিম কোর্ট সরকারের এই নির্দেশিকার ওপরে স্থগিতাদেশ দিয়েছে। তাই এখনও সেই নির্দেশিকা তো সেখানে কার্যকর করা হয়নি। আর সার্বিক ভাবে বলতে গেলে আমরা সব সময়ই ধর্মাচরণের স্বাধীনতার পক্ষে। বিশ্বের যেকোনও জায়গায় মানুষের যেটা বিশ্বাস, তার প্রতি আমাদের সম্মান রয়েছে।'
আরও পড়ুন: '… দেশকে বেশি ভালোবাসি', নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর কারণ জানালেন বাইডেন
যাত্রার রুটে যে সমস্ত খাবারের দোকান থাকবে সেই দোকানের মালিকের নাম লেখার জন্য নির্দেশ দিয়েছিল উত্তরপ্রদেশ সরকার। উত্তরাখণ্ডের তরফ থেকেও এমনি নির্দেশিকা জারি করা হয়। পরে এই নিয়ে মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে। এরপর শীর্ষ আদালতের তরফ থেকে এই দুই বিজেপি শাসিত রাজ্যের নির্দেশের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করে জানায়, কাঁওয়ার যাত্রার পথে খাবার বিক্রেতাদের নাম লিখতে বাধ্য করা যাবে না। পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ড সরকারকে শুক্রবারের মধ্যে জবাবদিহি করতে বলে নোটিশও জারি করেছিল ঋষিকেশ রায় এবং এনভিএন ভাট্টির ডিভিশন বেঞ্চ। এদিকে আগের দিন এই মামলার শুনানির সময় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ঋষিকেশ রায় বলেন, 'এই নির্দেশ কার্যকর করা হলে া ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্রের পরিপন্থী হবে।'
উল্লেখ্য, প্রতিবছরের মতোই এবারও বিহার, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ডে শ্রাবণ মাসের প্রথম সোমবার থেকে শুরু হয়েছে কাঁওয়ার যাত্রা। এর আগে মুজফ্ফরনগর জেলা পুলিশ প্রথমে রেস্তোরাঁর মালিকদের নির্দেশ দিয়েছিল যাতে তাদের বোর্ডে মালিকের নাম থাকে। পরে উত্তরপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ড সরকার এই নিয়ে নির্দেশিকা জারি করে। এর আগে কাঁওয়ার যাত্রাপথে আমিষ বিক্রি বন্ধেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তবে বোর্ডে রেস্তোরাঁ মালিকের নাম লেখার নির্দেশ ঘিরে বিতর্ক বেড়েছে। এমনকী এনডিএ জোটসঙ্গী তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়ন্ত চৌধুরীও এই নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। এই নির্দেশিকা বদলেরও আর্জি জানিয়েছিলেন তিনি।