ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসতেই ইউক্রেনকে আর্থিক সাহায্য দেওয়া বন্ধ করে দিল আমেরিকা। অবশ্য শুধু ইউক্রেন নয়, সব বিদেশি মার্কিন অনুদানই বন্ধ করে দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। তবে ইজরায়েল এবং মিশরকে আর্থিক সাহায্য জারি রাখা হচ্ছে। এই দুই দেশকে জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য এবং সামরিক সাহায্য পাঠিয়ে থাকে আমেরিকা। এদিকে ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের প্রভাব বহু দেশের ওপর পড়তে চলেছে। এদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মোড়ও ঘুরে যেতে পারে আমেরিকার এই সিদ্ধান্তের জেরে। (আরও পড়ুন: প্রথমে ধর্ষণ, তারপর খুন করা হল বাংলাদেশি তরুণীকে, দেহ মিলল কর্ণাটকের লেকের পাশে)
আরও পড়ুন: ফের সংখ্যালঘু রক্ত ঝরল বাংলাদেশে, হিন্দু পড়ুয়াকে নৃশংস ভাবে খুন খুলনায়
রিপোর্ট অনুযায়ী, একটি অভ্যন্তরীণ মেমোর মাধ্যমে সেক্রেটারি অফ স্টেট মার্কো রুবিও বলেন, 'প্রতিটি প্রস্তাবিত নতুন অনুদান আপাতত স্থগিত থাকবে। যতক্ষণ না এই সব অনুদানের প্রস্তাব পর্যালোচনা করে তা অনুমোদিত হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত নতুন করে কোনও অনুদান দেওয়া হবে না বা কোনও অনুদানের মেয়াদ বাড়ানো হবে না।' উল্লেখ্য, এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারের সময় ডোনাল্ড ট্রাম্প 'আমেরিকা ফার্স্ট' নীতির উল্লেখ করেছিলেন। যার মাধ্যমে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়ে সওয়াল করেছিলেন এবং বিদেশি সহায়তা সীমিত করার অঙ্গীকার নিয়েছিলেন। এই আবহে ট্রাম্পের সেই নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই বিদেশি অনুদান বন্ধের এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে স্টেটডিপার্টমেন্টের তরফ থেকে।
এদিকে ইউক্রেনের ওপরে রাশিয়ার হামলার পর থেকেই আমেরিকা কয়েক বিলিয়ন ডলারের সাহায্য করেছে ইউক্রেনকে। মার্কিন সাহায্যের ওপর ভর করেই রাশিয়াকে এতদিন ঠেকিয়ে রাখতে পেরেছে ইউক্রেন। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের এই নয়া সিদ্ধান্তে ইউরোপের এই যুদ্ধের গতিপ্রকৃতি কোন দিকে মোড় নেয়, সে দিকে নজর থাকবে সকলের। এদিকে শুধু ইউক্রেন নয়, আমেরিকা এতদিন ধরে এইচআইভি এইডস প্রতিরোধ প্রকল্প - PEPFAR -এ বিপুল পরিমাণ অর্থ সাহায্য পাঠিয়ে থাকত। এর সুফল পেত মূলত আফ্রিকার দেশগুলি। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের এই নয়া পদক্ষেপের জেরে সেই প্রকল্প ধাক্কা খেতে চলেছে। উল্লেখ্য, ২০০৩ সালে এক রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট, জর্জ ডাব্লু বুশের আমলেই শুরু হয়েছিল এইচআইভি প্রতিরোধক এই প্রকল্প। এত বছরে এই প্রকল্পের ফলে প্রাণ বেঁচেছে ২৬ মিলিয়ন মানুষের।
এদিকে ইউক্রেনকে সাহায্য বন্ধ করলেও ট্রাম্প প্রশাসন ইজরায়েলকে এই 'বিধিনিষেধ' থেকে ছাড় দিয়েছে। গাজা যুদ্ধের সময় থেকে ইজরায়েলকে মার্কিন সামরিক সাহায্যের পরিমাণ বেড়েছে। এদিকে ১৯৭৯ সালে ইজরায়েলের সঙ্গে শান্তি চুক্তির পর থেকে মিশরও আমেরিকার থেকে সামরিক সাহায্য পেয়ে থাকে। সেই সাহায্যও জারি রাখা হয়েছে ট্রাম্প প্রশাসনের তরফ থেকে। উল্লেখ্য, এর আগে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার ক্ষেত্রে ট্রাম্পের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। এই আবহে মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতেই সেখানকার অর্থ সাহায্য আপাতত বন্ধ করছে না ট্রাম্প প্রশাসন।