ভারতে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বৈষম্য ও হয়রানির অভিযোগ আনল আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক মার্কিন কমিশন (ইউএসসিআইআরএফ)। এই আবহে নিজেদের বার্ষিক প্রতিবেদনে ভারতের গুপ্তচর সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইংকে (র) নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছে তারা। কমিশনের অভিযোগ, শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হত্যার সঙ্গে 'র' জড়িত ছিল। প্রসঙ্গত, যে সব খলিস্তানি নেতার মৃত্যুর বিষয়ে মার্কিন কমিশন এই অভিযোগ করেছে, তারা ভারতে নিষিদ্ধ জঙ্গি। এদিকে এখনও ভারতের সংস্থার বিরুদ্ধে কোনও দেশ কোনও প্রমাণ দিতে পারেনি। (আরও পড়ুন: 'মমতার সরকার ভয় পেয়েছিল', বাংলা থেকে রোজ কত ভক্ত যেতেন প্রয়াগরাজে? জানালেন যোগী)
আরও পড়ুন: 'গোপন ইন্টেল' পাওয়ার পর মার্কিন বাহিনীর কর্তার সাথে বৈঠক বাংলাদেশি সেনা প্রধানের
মার্কিন কমিশনের রিপোর্টে ভারতের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। এতে বলা হয়, ২০২৪ সালে ভারতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও বৈষম্য বেড়েছে। প্রতিবেদনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও শাসকদল ভারতীয় জনতা পার্টিকে (বিজেপি) গত বছরের নির্বাচনে মুসলিম ও অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ঘৃণামূলক বক্তব্য ও গুজব ছড়ানোর জন্যও অভিযুক্ত করা হয়েছে। (আরও পড়ুন: মার্কিন নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বড় ‘বদল’, নয়া নির্দেশিকায় সই ডোনাল্ড ট্রাম্পের)
আরও পড়ুন: '…আমরা সততার পরিচয় বহন করি না', 'যুদ্ধাবস্থায়' থাকা বাংলাদেশ নিয়ে বললেন ইউনুস
মার্কিন কমিশন ভারত সরকারকে ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষা এবং ধর্মীয় নিপীড়ন রোধে দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। কমিশন সুনির্দিষ্টভাবে ভারতীয় নাগরিকত্ব আইন নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। এর আগে এই সিএএ-কে 'মৌলিকভাবে বৈষম্যমূলক' বলে বর্ণনা করেছিল রাষ্ট্রসংঘ। এছাড়া কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের সমালোচনাও করা হয়েছে রিপোর্টে। কমিশনের রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৩ সাল থেকে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে আমেরিকা ও কানাডায় ভারতের 'কথিত পদক্ষেপ' দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করেছে। ভারতীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তা বিকাশ যাদবের বিরুদ্ধে ব্যর্থ ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছে যুক্তরাষ্ট্র। যদিও ভারত এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে আগেই। এদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজে বহুবার আন্তর্জাতিক মঞ্চে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বৈষম্যের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন এবং বলেছেন যে তাঁর সরকারের প্রকল্পগুলি সমস্ত সম্প্রদায়ের জন্যেই উপকারী। (আরও পড়ুন: সমীকরণ বদলাচ্ছে, ইউনুসের চিন সফরের আগেই বেজিংয়ে ‘ইতিবাচক’ বৈঠক ভারতের)
আরও পড়ুন: সুর বদলে বড় ঘোষণা ট্রাম্পের, মার্কিন প্রতিশোধমূলক শুল্ক থেকে ছাড় পাবে ভারত?
মার্কিন কমিশনের বক্তব্য হল, যত দিন যাচ্ছে, ভারতে আমজনতার ধর্মীয় স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। এই ঘটনায় অত্যন্ত উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, মার্কিন সরকারের সংশ্লিষ্ট কমিশনের রিপোর্টে, স্বাধীনভাবে ধর্মাচারণের প্রশ্নে ভারতকে 'বিশেষ উদ্বেগের রাষ্ট্র' হিসাবেও উল্লেখ করা হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক কমিশন (ইউএসসিআইআরএফ)-এর তরফ থেকে এই রিপোর্ট সামনে আসায় স্বাভাবিকভাবেই দুই দেশের সম্পর্কের উপর এর কী প্রভাব পড়তে চলেছে, তা নিয়েও জল্পনা শুরু হয়েছে।