রান্নার অনুষ্ঠানে গরুর মাংসের সমার্থক হিসেবে ‘গোমাতা’ ব্যবহার করা হয়েছিল। তা হিন্দুদের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করতে পারে। সমাজকর্মী রেহনা ফতিমার রান্নার অনুষ্ঠান সংক্রান্ত একটি মামলায় এমনই জানাল কেরালা হাইকোর্ট।
রেহনা সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি রান্নার অনুষ্ঠানের ভিডিয়ো পোস্ট করেছিলেন। তাতে রান্নার রেসিপি এবং সেই পদ তৈরির সময একাধিকবার গরুর মাংসকে ‘গোমাতা’ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। সেই ভিডিয়োটি সোশ্যাল মিডিয়া থেকে মুছে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সুনীল থমাস।
বিচারপতি জানান, রেহনা যে কাজ করেছেন, তাতে অপর একটি মামলায় তাঁর জামিনের শর্ত লঙ্ঘিত হয়েছে। শবরীমালা মন্দিরের ভগবান আয়াপ্পার বিরুদ্ধে কুরুচিকর জিনিসপত্র প্রকাশ সংক্রান্ত সেই মামলায় ২০১৮ সালে তাঁর জামিনের ক্ষেত্রে একাধিক শর্ত আরোপ করেছিল হাইকোর্ট। জামিন প্রদানের সময় হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, মুদ্রণ, বৈদ্যুতিন মিডিয়ার মাধ্যমে এমন কোনও মন্তব্য করা যাবে না, শেয়ার বা ফরোয়ার্ডও যাবে না, যা কোনও সম্প্রদায়ের ভাবাবেগকে আঘাত করতে পারে।
গরুর মাংসের সমার্থক হিসেবে ‘গোমাতা’ ব্যবহার করার মামলায় অভিযোগকারী ২০১৮ সালের সেই মামলাটি উল্লেখ করে জানান, জামিনের শর্ত লঙ্ঘন করেই এবার বিতর্কিত ভিডিয়ো আপলোড করেছেন রেহনা। অভিযোগকারী দাবি করেন, হিন্দুদের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাতের জন্য উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবেই বারবার ‘গোমাতা’ ব্যবহার করেছিলেন রেহনা। যে গরুকে হিন্দু ধর্মে পবিত্র হিসেবে মানা হয়।
অভিযোগকারীর সেই আর্জিতে সায় দিয়ে হাইকোর্ট জানায়, ‘খারাপ উদ্দেশ্যে এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে’ ‘গোমাতা’ ব্যবহার করা হয়েছে। বিচারপতি জানান, সেই ভিত্তিতে রেহনার জামিন খারিজ করে দেওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে। কিন্তু তা করা হয়নি। বরং রেহনাকে ভিস্যুয়াল বা বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমে কোনও বিষয় পোস্ট বা কমেন্ট করা, শেয়ার করা বা ছড়ানো থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। একইসঙ্গে আগামী তিন মাস রেহনাকে সংশ্লিষ্ট থানায় প্রতি সোমবার ও শনিবার সকাল ন'টা থেকে সকাল ১০ টার মধ্যে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে।