উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে আজ থেকে (১৩ জানুয়ারি, ২০২৫) শুরু হল মহাকুম্ভ মেলা। এদিন গঙ্গা, যমুনা ও সরস্বতীর মিলনস্থল বা সঙ্গমে পুণ্যস্নানে অংশ নিলেন প্রায় ৫০ লক্ষ ভক্ত।
প্রশাসনের হিসাব বলছে, মহাকুম্ভ মেলার এই বিরাট, বিপুল আয়োজনের মাধ্যমেই উত্তরপ্রদেশ সরকারের প্রায় ২ লক্ষ কোটি টাকা পর্যন্ত আয় হতে পারে! তার জন্য অবশ্য মেলায় যোগ দিতে আসা পুণ্য়ার্থীদের গড়ে ৫,০০০ টাকা খরচ করতে হবে।
সংবাদ সংস্থা আইএনএস-এর হিসাব অনুসারে, যদি মহাকুম্ভে আসা পুণ্যার্থী ও ভক্তরা তাঁদের গড় খরচ বাড়িয়ে ১০,০০০ টাকা করেন, তাহলেই উত্তরপ্রদেশ সরকারের আয় এক লাফে বেড়ে দ্বিগুণ - প্রায় ৪ লক্ষ কোটি টাকা হবে! তথ্যাভিজ্ঞ মহল বলছে, এই সম্ভাবনা বাস্তবায়িত হলে সাধারণ এবং রিয়েল জিডিপি ১ শতাংশেরও বেশি বাড়বে।
এর আগে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ জানিয়েছিলেন, ২০১৯ সালে প্রয়াগরাজে যে অর্ধকুম্ভ মেলা হয়েছিল, তার ফলে রাজ্যের রোজগার হয়েছিল প্রায় ১.২ লক্ষ কোটি টাকা। সেবারের সেই আয়োজনে অংশ নিয়েছিলেন প্রায় ২৪ কোটি ভক্ত ও দর্শনার্থী।
সংশ্লিষ্ট একটি খবরের চ্যানেলকে এই প্রসঙ্গেই যোগী বলেন, 'আমাদের আশা, এবারের মহাকুম্ভ মেলায় প্রায় ৪০ কোটি মানুষ আসবেন। যার ফলে রাজ্য়ের ২ লক্ষ কোটি টাকা পর্যন্ত আয় হতে পারে। যা অর্থনীতির পক্ষে অত্যন্ত সহায়ক হবে।'
যোগী আদিত্যনাথের ব্যাখ্য়া, মহাকুম্ভ মেলা বিশ্বের বৃহত্তম অস্থায়ী শহরের সমতুল্য। যেখানে যেকোনও সময়ে একত্রে ৫০ লক্ষ থেকে ১ কোটি মানুষের থাকার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
সর্বভারতীয় ব্যবসায়িক সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই মেলার সময়টায় বিভিন্ন ধরনের খাবার ও পানীয় - যার মধ্যে রয়েছে প্য়াকেটবন্দি খাবার, জল, বিস্কুট, জুস এবং ভরপেট খাবার বা মিল - এই সবকিছুর বেচাকেনা করেই প্রায় ২০,০০০ কোটি টাকার ব্যবসা হবে।
এছাড়াও, পুজোর সামগ্রী বেচা-কেনা করেও ভালোই লক্ষ্মীলাভ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই ধরনের পণ্যের মধ্যে থাকছে - তেল, প্রদীপ, গঙ্গাজল, মূর্তি, লাঠি, ধর্মীয় বইপত্র প্রভৃতি। এসবের ব্যবসা করে আরও প্রায় ২০,০০০ কোটি টাকার ব্যবসা হবে।
এছাড়াও রয়েছে পুণ্য়ার্থীদের যাতায়াত, থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা সংক্রান্ত খরচপাতি ও তার সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন ব্যবসা। এসব থেকে অন্তত ১০,০০০ কোটি টাকা রোজগার হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
পাশাপাশি, মহাকুম্ভ মেলার ফলে শুধুমাত্র পর্যটন ব্যবসার অধীনেই আরও ১০,০০০ কোটি টাকার লেনদেন হবে। এর মধ্য়ে রয়েছে - প্যাকেজ ট্যুর, গাইডের খরচ প্রভৃতি।
সেইসঙ্গে, অস্থায়ী মেডিক্যাল ক্যাম্প, বিভিন্ন ধরনের আয়ুর্বেদিক পণ্য এবং ওষুধপত্র বিক্রি আরও প্রায় ৩,০০০ কোটি টাকা রোজগার হবে রাজ্যের।
অন্যদিকে, আধুনিক প্রযুক্তির প্রত্যক্ষ ব্যবহার করেও প্রায় ১,০০০ কোটি টাকা রোজগার হবে। যার মধ্য়ে রয়েছে - ই-টিকেটিং, ডিজিট্যাল পেমেন্ট, ওয়াই-ফাই পরিষেবা, মোবাইল চার্জিং প্রভৃতি।
এছাড়াও, বিজ্ঞাপন ও বিপণনের মাধ্যমে আরও প্রায় ১০,০০০ কোটি টাকার কারবার হবে।