উত্তরপ্রদেশের সম্ভলে যে হিংসার ঘটনা ঘটেছে সেটা টেলিভিশনে দেখছিলেন গৃহবধূ। যেখানে দেখাচ্ছিল, হিন্দু মন্দিরের উপরই গড়ে উঠেছিল শতাব্দী প্রাচীন মসজিদ। আর তা নিয়ে হিংসার ঘটনা ছড়িয়ে পড়ে উত্তরপ্রদেশের সম্ভলে। আর এই হিংসার ঘটনায় চারজনের মৃত্যুর খবরও সম্প্রচার হচ্ছিল। কিন্তু টেলিভিশনে এই হিংসার ঘটনা দেখতে বারণ করছিলেন ওই গৃহবধূর স্বামী। কিন্তু সে কথা না শুনে ওই বধূ দেখে যাচ্ছিলেন সম্ভলের ঘটনা। তার জেরে রেগে গিয়ে গৃহবধূর স্বামী তিন তালাক দিয়ে বিবাহবিচ্ছেদ করেন বলে অভিযোগ। ওই গৃহবধূর অপরাধ বলতে সম্ভলের ঘটনা দেখে পুলিশের প্রশংসা করা স্বামীর সামনে।
এই তিন তালাক উচ্চারণ করার অর্থ বিবাহবিচ্ছেদ বা ডিভোর্স। সেটাই বলে বসেছেন ওই গৃহবধূর স্বামী। এই বিষয়ে গৃহবধূ নিদার অভিযোগ, ‘কোনও বিষয়ই ছিল না। বিনা কারণে তালাক দেওয়া হয়েছে আমাকে।’ এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এমন কারণে তালাক দেওয়া যায় নাকি? এসব প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এই তিন তালাক সুপ্রিম কোর্ট ২০১৭ সালে অসাংবিধানিক বলে রায় দিয়েছিল। ২০১৯ সালে নরেন্দ্র মোদীর সরকার বিল এনে তা আইনে পরিণত করেছিল। তারপরও এই তিন তালাক বহাল তবিয়তে চলছে।
আরও পড়ুন: ‘কমন প্যাসেজে কোনও নির্মাণ করা যাবে না’, বিল্ডিং বিভাগকে কড়া নির্দেশ মেয়রের
মুসলিম গৃহবধূদের অধিকার সুরক্ষিত করতেই এই রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। আজ যা ভারতের আইন। নিদার বাপের বাড়ি মোরারাবাদে। আর তিনি স্বামী ইজাজুলের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন। এই গোটা বিষয়ে গৃহবধূ নিদা বলেন, ‘আমি সম্ভল নিয়ে ঘটনা দেখছিলাম যেহেতু ওখানে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা ছিল। আর কিছু ব্যক্তিগত কাজও ছিল। তাই আমি দেখছিলাম সেখানে যাওয়া নিরাপদ কিনা। তখন আমার স্বামী জিজ্ঞাসা করেন, কেন দেখছি? আমি বলেছিলাম, এটাতে ভুলের কি আছে! প্রত্যেকেরই নিজেকে বাঁচানোর অধিকার রয়েছে।’
এছাড়া এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর তা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। এমন ঘটনা ঘটতে পারে তা কেউ কল্পনাও করেননি। আর গৃহবধূ নিদার কথায়, ‘আমাকে বলা হয়েছে আমি মুসলিম নই। কারণ আমি পুলিশকে সমর্থন করেছি। আমার সঙ্গে তখন দুর্ব্যবহার করা হয়েছে। আমাকে ওই বাড়িতে এক মুহূর্ত থাকতে দিতে রাজি হয়নি। আর তিন তালাক উচ্চারণ করে বলেছে, সে কিছুই করেনি আমার সঙ্গে।’ এই ঘটনা নিয়ে পুলিশ সুপার রণবিজয় সিং বলেছেন, ‘এক গৃহবধূ তাঁর স্বামী বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। সম্ভলের ঘটনা দেখা নিয়ে দু’জনের মধ্যে বচসা হয়। তখনই তিন তালাক দেওয়া হয়।’