বিজেপি শাসিত রাজ্য যোগীগড়ে আগামী ৮ জুলাই প্রাইমারি শিক্ষক সংগঠনের ডাকে রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদের ডাক দেওয়া হয়েছে। ‘উত্তর প্রদেশ প্রাইমারি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন’ রবিবার জানিয়েছে, তাদের সদস্যরা ৮ জুলাই, জেলায় জেলায় প্রাথমিক শিক্ষা অফিসগুলির সামনে ধরনায় বসবেন। কিন্তু কেন? কী নিয়ে তাঁদের ক্ষোভ? যোগী গড়ে শিক্ষা ক্ষেত্র ঘিরে কোন ইস্যুতে বিক্ষোভ উঠে আসছে?
সদ্য উত্তর প্রদেশে ‘স্কুল একীভূত নীতি’ ঘিরে ব্যাপক চর্চা শুরু হয়েছে। বহু জায়গায় তুঙ্গে রয়েছে এই নীতি ঘিরে সমালোচনা। দাবি করা হচ্ছে, এই নীতির আওতায়, যে সমস্ত প্রাথমিক স্কুলে ৫০ টিরও কম শিশু রয়েছে সেগুলিকে যেন বন্ধ না করা হয়, এতে গ্রামীণ স্কুলগুলির শিশুদের জন্য শিক্ষা ক্ষেত্রের সুবিধায় বড় ক্ষতি হতে পারে। এই দাবিকে সামনে রেখেই উত্তরপ্রদেশে প্রাইমারি স্কুল শিক্ষক সংগঠনের তরফে শুরু হতে চলেছে বিক্ষোভ প্রতিবাদ। এর আগে সদ্য রাজ্যের মন্ত্রী জয়বীর সিংয়ের কাছে একডি আর্জি নিয়ে যান সেরাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষা সংঘের সদস্য অরুণ যাদব। ছাত্র সংখ্যায় কমের কারমে কোনও প্রাথমিক স্কুলকে যেন অন্য স্কুলের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া না হয়। তাতে গ্রামীণ শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে।
উত্তর প্রদেশের প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি দীনেশ চন্দ্র শর্মা অভিযোগ করেছেন যে, উত্তর প্রদেশের রাজ্য সরকার, অবকাঠামো এবং জনবল একীভূত করার নামে স্কুলগুলিকে একীভূত বা জুড়ে দিয়ে, ৬ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুদের বিনামূল্যে এবং বাধ্যতামূলক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করছে। তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, রাজ্য সরকার ১৪৯ জন পর্যন্ত শিক্ষার্থী বিশিষ্ট প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ৯৯ জন পর্যন্ত শিক্ষার্থী বিশিষ্ট উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ বাতিল করছে। তাঁর দাবি, এই পরিকল্পনা, যার অর্থ কার্যকরভাবে প্রধান শিক্ষক ছাড়া স্কুল পরিচালনা করা, তার মাধ্যমে শিক্ষকদের পদোন্নতির সুযোগ বন্ধ করে দেয়। তিনি আরও বলেন,' স্কুল বন্ধের কারণে, হাজার হাজার রাঁধুনির চাকরি বন্ধ হয়ে যাবে এবং ভবিষ্যতে শিক্ষক হওয়ার আশায় ডিএলইডি বা বিটিসি যোগ্য প্রার্থীরা নিয়োগ পেতে পারবেন না।'
দীনেশ চন্দ্র শর্মার দাবি, উত্তর প্রদেশ সরকারের উচিত এই স্কুল একীভূতকরণ নীতি সরকারের ফেরত নেওয়া। তাঁর সাফ দাবি,' আমাদের দাবি, কোনও স্কুল বন্ধ করা উচিত নয়। সরকার যদি সত্যিই শিক্ষার সুবিধা চায়, তাহলে প্রতিটি শ্রেণীর জন্য একজন সহকারী শিক্ষক এবং প্রতিটি স্কুলে একজন প্রধান শিক্ষক নিয়োগ করা উচিত।'
এদিকে, এমন সমস্ত আশঙ্কা ও দাবি খারিজ করে দিয়েছে উত্তর প্রদেশ সরকার। সরকারের তরফে এক মুখপাত্র বলছেন,' আমরা বিনামূল্যে ও বাধ্যতামূলক শিক্ষার অধিকার আইন (RTE, 2009) এর অধীনে রাজ্যের সরকারি বিদ্যালয়গুলিতে শিক্ষকদের সমন্বয় কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করছি।'শুক্রবার এলাহাবাদ হাইকোর্টের লখনউ বেঞ্চের বিচারপতি পঙ্কজ ভাটিয়া দুই দিন ধরে শুনানির পর স্কুল একীভূতকরণ মামলার রায় সংরক্ষণ করেছেন।