এখনও একাধিক রাজ্যে শুরু হয়নি ১৮-৪৪ বছর বয়সিদের করোনা টিকাকরণ। সেই তালিকাতে রয়েছে বিজেপি শাসিত রাজ্য উত্তরাখণ্ডও। তবে সেরাজ্যেই এক বিজেপি বিধায়ক তাঁর ২৫ বছর বয়সি ছেলেকে ভ্যাকসিন পাইয়ে দিলেন। আর তা নিয়েই এবার বিরোধীদের তোপের মুখে বিজেপি। এই ঘটনা ঘিরে উত্তাল হয়েছে রাজ্য রাজনীতি। প্রশ্ন উঠেছে, যেখানে সাধারণ মানুষকে ভ্য়াকসিন দেওয়া যাচ্ছে না, সেখানে প্রভাব খাটিয়ে এভাবে টিকা পাইয়ে দেওয়াটা নৈতিক ভাবে কতটা ঠিক বা ভুল।
অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিতর্কিত বিধায়ক কুঁওয়ার প্রণব সিং চ্যাম্পিয়ন তাঁর ২৫ বছর বয়সি ছেলেকে করোনা টিকা পাইয়ে দিয়েছেন। এরপরই বিধায়কের ছেলের ভ্যাকসিন নেওয়ার ছবি সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়ে যায়। এরপরই বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়ায় কংগ্রেস এবং আম আদমি পার্টি। এই ঘটনাকে 'অতিমারীর সময়তে ভিআইপি সংস্কৃতি' বলে আখ্যা দিয়েছে বিরোধীরা। এবং শাসক দলের বিধায়কের এই কর্মকাণ্ডের জন্য সরকারকে দায়ি করেছে বিরোধীরা। বিরোধীদের অভিযোগ, যেখানে মানুষ ন্যূনতম সুযোগ সুবিধার অভাবে প্রাণ হারাচ্ছে, সেখানে প্রভাব খাটি শাসক দলের বিধায়করা বিশেষ সুবিধা অর্জন করে নিচ্ছে।
উল্লেখ্য, কোভিড টিকার অভাবের জেরে ১ মে থেকে ১৮-৪৪ বছর বয়সিদের টিকাকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। সেরাজ্যে ১০ মে থেকে শুরু হবে ১৮-৪৪ বছর বয়সিদের টিকাকরণ। তবে তার আগেই ৫ মে দুন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে হরিদ্বারের খানপুরের বিধায়ক কুঁওয়ার প্রণব সিংয়ের ছেলেখে টিকা নিতে দেখা যায়। এরপর সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়ে পড়ে।
এই বিষয়ে জানতে রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব অমিত নেগির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, 'রাজ্য ১০ মে থেকে ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সিদের করোনা টিকাকরণ শুরু করবে। তবে এর আগে কীভাবে চ্যাম্পিয়নের ২৫ বছর বয়সি ছেলে টিকা নিলেন, তা খতিয়ে দেখা হবে।'
এদিকে চ্যাম্পিয়ন তাঁর ছেলের এই টিকা নেওয়ার বিষয়টিকে যথাযথ প্রমাণ করার চেষ্টা করেছএন। তাঁর দাবি, তাঁর ছেলে একজন ফ্রন্টলাইন কোভিড যোদ্ধা। তাঁর ছেলে পুলিশদের মাস্ক বিতরণ করেছেন বলে দাবি বিজেপি বিধায়কের। তিনি বলেন, 'আমি যাই করি সেটা নিয়েই বিতর্ক শুরু করে দেয় মিডিয়া। আমার ছেলে কোনও ভুল কাজ করেনি। সে কোভিডের বিরুদ্ধে সামনে থেকে লড়াই করেছে। ত্রাণ বিতরণ করেছে। তাই সে এই টিকা নিয়েছে।'
কুঁওয়ার সিং আরও দাবি করেন, 'আমি আমার বিধানসভা কেন্দ্রের ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে সকলের জন্য টিকার বন্দোবস্ত করেছি। ৩০ এপ্রিল থেকেই সেখানে টিকাকরণ প্রক্রিয়া চালু হয়ে গিয়েছে। আমি আমার কেন্দ্রের কংগ্রেস এবং আম আদমি পার্টি কর্মীদেরও টিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছি।'
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হাসপাতাল কর্মীর দাবি, ৫ মে বিজেপি বিধায়ক তাঁর স্ত্রীয়ের টিকাকরণের জন্যে এসেছিলেন। তাঁর সঙ্গে তাঁর সশস্ত্র রক্ষীরা ছিল। এই আবহে সেই বিধায়ক নার্সকে বলেন যাতে তাঁর ছেলেকেও টিকা দেওয়া হয়। সেই সময় ভীত নার্স তাঁর ছেলেকেও টিকা দিয়ে দেয়।