উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের বারাণসীর অন্তর্গত উদয় প্রতাপ কলেজ (ইউপি) চত্বরে অবস্থিত একটি মসজিদে নামাজ পাঠ নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হয়। আর তা বৃদ্ধির পেতেই পুলিশ বৃহস্পতিবার কলেজ ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। শুধু বৈধ পরিচয়পত্র–সহ শিক্ষার্থীদের কলেজে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে। এখানে নামাজের নামে জড়ো হচ্ছিল বহিরাগতরা। তার প্রতিবাদে কয়েকজন ছাত্র ‘হনুমান চালিসা’ পাঠ করতে শুরু করলে সেখানে উত্তেজনা চরম আকার নেয়। পুলিশ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং সাতজন শিক্ষার্থীকে আটক করে। এরপর মসজিদে নামাজ পাঠ বন্ধ করে দেয়।
এদিকে পুলিশ সূত্রে খবর, সাতজনকে কিছুক্ষণের জন্য আটক করা হয়েছে। আজ, শুক্রবার সেখানে আরও কড়া নজরদারি রাখা হয়েছে। পুলিশ বাহিনী ঘিরে রেখেছে গোটা কলেজ চত্বর। এই বিষয়ে ছাত্রনেতা বিবেকানন্দ সিং বলেন, ‘কলেজ গেটে পুলিশ কর্মীরা মোতায়েন রয়েছে। বৈধ পরিচয়পত্র পরীক্ষা করছে। এখানে যাতে বহিরাগতরা প্রবেশ করতে না পারে তার জন্যই এই ব্যবস্থা। একদল শিক্ষার্থীও গেটে নজরদারি চালাচ্ছে। আজ শুক্রবার জুম্মার নামাজ পাঠও যাতে কলেজ ক্যাম্পাসে না হয় তার জন্য কড়া নিরাপত্তা রাখা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: ভাঙনের মুখে কলকাতা পুরসভার অন্তর্গত দুটি ভবন, পুকুর ভরাট করে নির্মাণের অভিযোগ
উদয় প্রতাপ কলেজের ছাত্ররা একটি ‘ছাত্র আদালত’ গঠন করেছে। আর উত্তরপ্রদেশ ওয়াকফ বোর্ডকে ১১ দফা দাবি জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে। সেখানে মসজিদের অবস্থা এবং তার মালিকানা সম্পর্কে ১৫ দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। ছাত্র নেতাদের অভিযোগ, বহিরাগতরা নামাজের নামে কলেজ প্রাঙ্গণে প্রবেশ করেছিল। বহিরাগতদের হস্তক্ষেপ ছাড়া কলেজ প্রাঙ্গণে নামাজ পড়তে শিক্ষার্থীদের কোনও সমস্যা নেই। আর এই ইস্যুতে অঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া মসজিদ কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মহম্মদ ইয়াসিন জানান, এই বিষয়টি নিয়ে উত্তরপ্রদেশ সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ডকে চিঠি লেখা হয়েছে। মসজিদের বর্তমান অবস্থা খতিয়ে দেখেছেন তাঁরা।
ইতিমধ্যেই উদয় প্রতাপ কলেজের অধ্যক্ষ ধর্মেন্দ্র সিং বলেছেন, ‘কোনও বহিরাগতকে পরিচয়পত্র ছাড়া কলেজ প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।’ এই বিতর্কের মূল কারণ, ২০১৮ সালে ওয়াকফ বোর্ড কর্তৃক জারি করা একটি নোটিশ। ওয়াকফ বোর্ড কলেজ প্রাঙ্গনে মসজিদটিকে তার সম্পত্তি বলে দাবি করেছে। আর কলেজ প্রশাসন নির্মাণকে অবৈধ ঘোষণা করেছে। ম্যানেজমেন্ট দাবি করেছে, এই সম্পত্তি ১৯০৯ সাল থেকে কলেজ ট্রাস্টের। আর এখন মহম্মদ ইয়াসিন দাবি করেন, ‘উত্তরপ্রদেশ সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ড স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, মসজিদটিকে ওয়াকফ সম্পত্তি অধিকার বলে ২০১৮ সালে যে নোটিশ ছিল তা ১৮ জানুয়ারি, ২০২১ সালে বাতিল করা হয়েছিল। তাই এখন বিতর্কের কোনও কারণ নেই।’