দীর্ঘ পাঁচ সপ্তাহ পর অবশেষে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন পোপ ফ্রান্সিস। আজ (রবিবার - ২৩ মার্চ, ২০২৫) রোমের জেমিলি হাসপাতাল থেকে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। উল্লেখ্য, শাসযন্ত্র সংক্রান্ত সংক্রমণের কারণে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি (২০২৫) পোপ ফ্রান্সিসকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
এদিন হাসপাতাল থেকে বেরোনোর ঠিক আগে জনসমক্ষে আসেন পোপ ফ্রান্সিস। প্রায় পাঁচ সপ্তাহ পর আবার তাঁকে প্রকাশ্যে দেখা যায় এদিন। হাসপাতালের বারান্দা থেকে সকলের উদ্দেশে হাত নেড়ে অভিবাদন জানান তিনি।
সেই সময় তিনি একটি হুইলচেয়ারে বসেছিলেন। উল্লেখ্য, গত বেশ কয়েক বছর ধরেই হুইলচেয়ারের অবলম্বন নিতে দেখা গিয়েছে পোপ ফ্রান্সিসকে। এদিন তাঁকে হাসিমুখেই হাত নাড়তে দেখা গিয়েছে। আসলে পোপের সুস্বাস্থ্য কামনায় তাঁর অনুগামী ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা জড়ো হয়েছিলেন হাসপাতালের বাইরে। তাঁদের উদ্দেশ করেই হাত নাড়তে দেখা যায় বৃদ্ধ পোপকে।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই তাঁর উপর দিয়ে অনেক ঝড় বয়ে গিয়েছে। চিকিৎসকরা তাঁকে দীর্ঘ সময় ধরে পর্যবেক্ষণে রাখেন। একের পর এক তাঁর স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হয়। তাতে নানা ধরনের জটিল সমস্যা সামনে আসতে থাকে। ফলত, একমাসেরও বেশি সময় হাসপাতালে কাটাতে হয় তাঁকে।
এর আগে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন আমজনতা মাত্র একবারই পোপ ফ্রান্সিসের দেখা পেয়েছিল। তাও পোপ স্বয়ং উপস্থিত ছিলেন না। আসলে গত সপ্তাহে ভ্যাটিকানের পক্ষ থেকে একটি ছবি প্রকাশ করা হয়েছিল। সেই ছবিতে প্রার্থনারত পোপ ফ্রান্সিসকে দেখা গিয়েছিল। হাসপাতালের চ্যাপেলে প্রার্থনা করছিলেন তিনি। সেই সময়েই ওই ছবি তোলা হয় বলে দাবি সূত্রের।
পোপের চিকিৎসায় নিযুক্ত চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এবার যখন পোপ ফ্রান্সিসকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, সেই সময় তাঁর চিকিৎসা চলাকালীন মোট দু'বার পরিস্থিতি 'অত্যন্ত সঙ্কটজনক' হয়ে উঠেছিল। এমনকী, দু'বারই পোপের জীবন সংশয়ের আশঙ্কা ছিল বলেও ওই চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, এমনটাও আশঙ্কা করা হচ্ছিল যে অসুস্থতার কারণে পোপ ফ্রান্সিস হয়তো তাঁর পদ থেকে ইস্তফাও দিয়ে দিতে পারেন। এ নিয়ে চলতি সপ্তাহেরই প্রথম দিকে ভ্যাটিকানের সেক্রেটারি অফ স্টেট পিয়েত্রো প্যারোলিনকে সরাসরি প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। তাঁরা জানতে চান, পোপ ফ্রান্সিস কি সত্যিই পদত্যাগ করতে চলেছেন? সেই প্রশ্নের উত্তরে পিয়েত্রো বলেন, 'না, না, না, একেবারেই না!'
ক্যাথলিক খ্রিস্টান এবং অন্যান্য ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষও পোপ ফ্রান্সিসের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছিলেন এত দিন। সারা বিশ্বে তাঁর সেরে ওঠার জন্য প্রার্থনা করা হচ্ছিল। অনেকেই এই ক'দিন রোমের জেমিলি হাসপাতালের বাইরে পোপের আরোগ্য কামনায় ফুল, মোবাতি, হাতে লেখা নোট রেখে দিয়ে গিয়েছেন।