পকসো মামলা অর্থাৎ শিশুদের যৌন নির্যাতনের মামলায় নির্যাতিতা নাবালিকাদের বারবার সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য ডেকে পাঠানো উচিত নয়। একটি মামলায় রায় দিতে এমনই পর্যবেক্ষণ সুপ্রিমকোর্টের। শীর্ষ আদালতের মতে, এই ধরনের ঘটনায় এমনিতেই মানসিকভাবে আঘাত পেয়ে থাকে নির্যাতিতারা। তাই আইনি প্রক্রিয়া চলাকালীন শিশুদের আরও মানসিকভাবে আঘাত পাওয়া থেকে রক্ষা করার প্রয়োজন। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়ার নেতৃত্বে একটি বেঞ্চ বুধবার এই পর্যবেক্ষণ করেছে।
আরও পড়ুন: শিশুদের যৌন নিগ্রহে মহিলাদের বিরুদ্ধেও পকসো আইনে বিচার করা যেতে পারে- হাইকোর্ট
ওড়িশার নয়াগড়ের একটি পকসো মামলায় ওড়িশা হাইকোর্ট এবং নিম্ন আদালতের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে একটি আবেদনের শুনানির সময় এই রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।মামলার বয়ান অনুযায়ী, অভিযুক্ত এক নাবালিকা মেয়েকে অপহরণ করে তাকে জোর করে একটি মন্দিরে বিয়ে করেছিল। এরপর তাকে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হতে বাধ্য করেছিল। পরে পুলিশের সহায়তায় তার বাবা-মা নির্যাতিতাকে উদ্ধার করেন। ২০২০ সালে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারা, পকসো আইন এবং বাল্যবিবাহ নিষিদ্ধ আইনের অধীনে মামলা রুজু করা হয়েছিল।
বিচার চলাকালীন, বিশেষ আদালত অভিযুক্তের একটি আবেদন খারিজ করে দেয়। আদালত পকসো আইনের ৩৩(৫) ধারা উল্লেখ করে বলে, যে কোনও শিশুকে বারবার আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য ডাকা উচিত নয়। নিম্ন আদালতের সেই সিদ্ধান্ত বহাল রেখে সুপ্রিম কোর্ট শিশুদের যৌন অপরাধ থেকে রক্ষা করতে এবং বিচার প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য পকসো আইনের গুরুত্ব উল্লেখ করেছে। সুপ্রিম কোর্ট জোর দেয়, আইনের ৩৩(৫) ধারা বিশেষ আদালতের উপর একটি দায়িত্ব রয়েছে যাতে শিশুদের বারবার সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য তলব করা না হয়। সুপ্রিম কোর্ট আরও জানায়, যে ঘটনার সময় নির্যাতিতার বয়স ছিল প্রায় ১৫ বছর। ইতিমধ্যেই নাবালকটিকে দুবার জেরা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এরপর অভিযুক্তের আবেদন খারিজ করে সুপ্রিম কোর্ট। আদালতের মতে, এই রায় আইনি প্রক্রিয়া চলাকালীন নির্যাতিতার সুরক্ষাকে শক্তিশালী করবে। তাছাড়া বিচারপ্রক্রিয়া চলাকালীন নির্যাতিতাদের মানসিক সুস্থতার ওপরও জোর দিতে হবে।