শনিবার রাজস্থানের রণথম্বোর জাতীয় উদ্যানের কাছে একটি গ্রামে এক ব্যক্তির উপর হামলা চালায় বাঘ। তাতে মৃত্যু হয় ওই ব্যক্তির। তারপরেই সেই বাঘটিকে পিটিয়ে হত্যা করল ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা। ১০ বছর বয়সি ওই পুরুষ বাঘটিকে লাঠিপেটা করার পাশাপাশি কুড়ুল এবং পাথরের আঘাত করে মেরে ফেলা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বাঘটিকে টি ৮৬ নামে চিহ্নিত করেছে বন বিভাগ।
আরও পড়ুন: জঙ্গল থেকে বেরিয়ে একের পর এক হামলা চালাল বাঘ, জখম ৫, আতঙ্কে বন্ধ করা হল স্কুল
জানা যায়, বাঘটিকে রবিবার বিকেলে রণথম্বোরের উলিয়ানা গ্রামে মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। প্রায় দু ডজন গ্রামবাসী কুড়ুল এবং কিছু ধারালো জিনিস দিয়ে তাকে আক্রমণ করে। তারফলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয় বাঘটির। পরে বন বিভাগ বাঘের দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। অন্যদিকে, বাঘের হামলার পরেই বন বিভাগের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ব্যাপক বিক্ষোভ করেন গ্রামবাসীরা। ব্যক্তির মৃতদেহ রাস্তায় রেখে প্রায় ২২ ঘণ্টা ধরে সড়ক অবরোধ করেন তারা। জানা যায়, গ্রামবাসীরা জামুলখেদা মোড়ে অবস্থান বিক্ষোভ করেন। এর ফলে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে কোতোয়ালি ও কুন্ডেরা স্টেশনের বন কর্মকর্তা ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করেন।শেষ পর্যন্ত কৃষিমন্ত্রী কিরোরি লাল মীনা মধ্যস্থতা করলে বিক্ষোভ উঠে যায়। মৃতের পরিবার প্রাথমিকভাবে ক্ষতিপূরণ হিসাবে ৫০ লক্ষ টাকা দাবি করে। তবে ১৫ লক্ষ টাকা দিতে রাজি হয় সরকার। বলা হয়েছে বাকি ৩৫ লক্ষ টাকা এবং পাঁচ বিঘা জমি ও সিসিএফ এবং বিভাগীয় বন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে সরকারের কাছে একটি প্রস্তাব পাঠাবেন জেলা শাসক। এছাড়াও মৃতের পরিবারকে কর্মসংস্থান দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। এদিকে, গ্রামবাসীরাও বাঘ হত্যার জন্য তাদের কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ারও দাবি জানিয়েছেন।
একজন অবসরপ্রাপ্ত বন কর্মকর্তা বলেছেন, গত এক বছর ধরে ওই উদ্যানে বাঘ পর্যবেক্ষণ উল্লেখযোগ্যভাবে খারাপ হয়েছে। কিচদাতে একটি ছোট মন্দির বনভূমির একটি বিশাল এলাকা দখল করেছে। সেখানে হাজার হাজার মানুষ যাচ্ছেন। আধিকারিকদের বক্তব্য, মানুষ যদি বাঘের ভূখণ্ডে প্রবেশ করে তবে সংঘাত অনিবার্যভাবে ঘটবে। বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, যে এই ধরনের ঘটনার সঙ্গে বাঘকে পিটিয়ে মারার প্রবণতা তৈরি হতে পারে। তাই বন বিভাগকে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
বিশেষজ্ঞের অনেকের মতে, বাঘ সংরক্ষণের ইতিহাসে এটি একটি অন্ধকার দিন ছিল। অতীতে রণথম্ভোরে এমন খবর পাওয়া যায়নি। মানুষের বাসস্থান থেকে বাঘের আবাসস্থল সুরক্ষিত করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা ।