কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ২০২৬ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে মাওবাদীদের নির্মূল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তারপরেই লাগাতার মাওবাদী বিরোধী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। দুদিন আগে ছত্তিশগড়ে মাওবাদী বিরোধী অভিযানে বড়সড় সাফল্য পেয়েছে নিরাপত্তাবাহিনী। এরপরই ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণু দেও সাই মাওবাদী বিরোধী অভিযান নিয়ে সরকারের নীতির কথা জানালেন। একইসঙ্গে ভুয়ো এনকাউন্টারের অভিযোগ সম্পর্কে নিজের বক্তব্য হিন্দুস্তান টাইমসকে জানিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী মাওবাদীদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়ে তাদের পুনর্বাসনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। একইসঙ্গে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, বুলেটের জবাব বুলেট দিয়ে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: ৬০০ কমান্ডোর দলে ছিল প্রাক্তন নকশাল, বিজাপুরে যেভাবে ৩১ মাওবাদীকে খতম করা হয়…
সাক্ষাৎকারে মাওবাদী বিরোধী অভিযানের রোডম্যাপ সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘রাজ্যে আমরা ক্ষমতায় আসার পর ১৩ মাস হয়ে গিয়েছে। আমরা ২০২৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর শপথ গ্রহণ করি। পরের মাসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ছত্তিশগড়ে আসেন। একটি সভায় ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যে সমগ্র দেশ থেকে মাওবাদীদের নির্মূল করার কথা বলেন। তারপর থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিয়মিত ছত্তিশগড় সফর করছেন।’
তিনি বলেন, ‘এই ১৩ মাসে ১৫৭টি এনকাউন্টার হয়েছে, ৩০৫ জন মাওবাদীর মৃত্যু হয়েছে। ৯৮৫ জন আত্মসমর্পণ করেছে এবং ১,১৫৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমাদের বাহিনী আভুজমাদে প্রবেশ করেছে। যেখানে কোনও রাস্তা নেই। এমনকী জমিও মাপা হয়নি। আমরা সঠিক পথেই আছি। আমাদের মূল লক্ষ্য কেবল মাওবাদীদের অবসান নয়, বরং জনগণের জন্য একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যত নিশ্চিত করা এবং শান্তি ও উন্নয়নের পথ প্রশস্ত করা।
মাওবাদীদের আত্মসমর্পনীতি সম্পর্কে বিষ্ণুদেও জানান, সরকার আত্মসমর্পণকারী মাওবাদী এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির জন্য প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি করে দিচ্ছে। তাদের নিরাপদ এবং উন্নত মানের জীবনযাত্রার সুযোগ করে দিচ্ছে। তাদের পুনর্বাসন নিশ্চিত করার জন্য দক্ষতা বাড়ানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। যেখানেই এবং যখনই শিবির খোলা হচ্ছে গ্রামবাসীদের সকল সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত ১৫০ টিরও বেশি মোবাইল ফোন টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে। সরকার উপজাতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষাগতভাবেও সহায়তা করছে। সরকার এখন হিন্দিতে এমবিবিএস কোর্স চালু করেছে। গ্রামীণ শিক্ষার্থীরা ভাষাগত বাধা ছাড়াই চিকিৎসা শিক্ষা গ্রহণ করতে পারছে।
তবে বহু মাওবাদী আত্মসমর্পণ করলেও গুলির লড়াই অব্যাহত রয়েছে। এপ্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গুলির জবাব গুলি দিয়ে দেওয়া হবে এবং শব্দের জবাব শব্দ দিয়ে দেওয়া হবে। যদি তারা আত্মসমর্পণ করতে না চায় এবং গুলি ব্যবহার করে, তবে তাদের জবাবও গুলি দিয়ে দেওয়া হবে। যদি তারা আত্মসমর্পণ করতে চায় তবে সরকার তাদের সঙ্গে কথা বলবে। তাদের জীবন উন্নত হবে এবং আমরা তাদের পুনর্বাসন করব।’
প্রসঙ্গত, একটি এনকাউন্টারের ঘটনায় ২৯ জন নিহত হয়েছিল। বিরোধীরা ভুয়ো এনকাউন্টারের অভিযোগ তুলে আসছে। সেই অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি পাল্টা বিরোধীদের আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, ভুল আখ্যান তৈরির প্রচেষ্টা হচ্ছে। বন্দুকযুদ্ধে যারা নিহত হচ্ছে তারা সশস্ত্র এবং মাওবাদী।