একটা সময় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রাইমারিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। পরে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হওয়ার দৌড় থামিয়ে ট্রাম্পের হয়ে গলা ফাটান। তিনি ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিবেক রামাস্বামী। রিপাবলিকান শিবিরে ক্রমেই গুরুত্ব বেড়েছ ৩৯ বছর বয়সি এই ব্যবসায়ীর। ট্রাম্পের শেষ প্রচার ভিডিয়োতে তো তাঁর স্থান ছিল ইলন মাস্কেরও আগে। উল্লেখ্য, আমেরিকায় ভারতীয় বংশোদ্ভূত হিন্দুদের ভোটকে ট্রাম্পের দিকে ঝোঁকাতে অনেক বড় ভূমিকা ছিল রামাস্বামীর। যেমন পেনসিলভেনিয়া প্রদেশে ট্রাম্পের জয়ে নেপথ্যে এশিয়ান বংশোদ্ভূতদের ভোট একটা বড় ফ্যাক্টর ছিল। সেই প্রদেশে প্রায় ৬ লাখ এশিয়ান ভোটার ছিলেন। এবং তাঁদের অধিকাংশই ভারীতয় বংশোদ্ভূত। এই ধরনের ভোটারকে ট্রাম্পমুখী করার চেষ্টা জারি রেখেছিলেন রামাস্বামী। যেখানে ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী নিজে ভারতীয় বংশোদ্ভূত ছিলেন, সেখানে ভারতীয় বংশোদ্ভূত ভোটাদের কাছে টানতে ট্রাম্পেরও এক ‘ভারতীয় মুখের’ দরকার ছিল। আর রামাস্বামী সেই ‘মুখ’ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। (আরও পড়ুন: 'কাকা একটু চাপে আছেন আজ... মালিক হেরেছে', ট্রাম্প জয়ে কটাক্ষ ইউনুসকে)
আরও পড়ুন: US ভোটের ফল কি 'ভালো' হল? ক্ষমতায় এলেই তো ভারতকে 'শাস্তি' দেবে বলেছিলেন ট্রাম্প!
প্রসঙ্গত, আমেরিকায় ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা ঐতিহাসিক ভাবে ডেমোক্র্যাটদের ভোট দিয়ে এসেছেন। বিশেষ করে এইচ১বি ভিসা বা অভিভাসন ইস্যুতে ট্রাম্পের কট্টরপন্থী অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা তাঁর দিকে ঝুঁকছিলেন না। তবে সেই প্রবাহ বিপরীত দিয়ে বইয়ে দিতে চেষ্টা করেছিলেন রামাস্বামী। আর তাই ট্রাম্পের শিবিরে রামাস্বামীর স্থান বেশ গুরুত্বপূর্ণ। একটা সময় তো এমনও মনে করা হয়েছিল যে হয়ত রামাস্বামীকেই ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী করতে পারেন ট্রাম্প। শেষ পর্যন্ত অবশ্য সেটা হয়নি। তবে মনে করা হচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা পেতে পারেন রামাস্বামী।
বিবেক রামাস্বামীর শিকড় ভারতের কেরলে। অবশ্য তিনি বেড়ে উঠেছেন আমেরিকায়। বিবেকের মা-বাবা কেরলের বাসিন্দা ছিলেন। কর্মসূত্রে ভারত ছেড়ে আমেরিকা পাড়ি দিয়েছিলেন তাঁরা। ২০১৪ সালে বিবেক রোইভ্যান্ট সায়েন্স নামক প্রযুক্তি সংস্থা গঠন করেন। ২০১৫ ও ২০১৬ সালে সবথেকে বড় আইপিও ছিল তাঁর। একাধিক রোগের চিকিৎসার জন্য সফল ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল ও এফডিএ অনুমোদিত পণ্য তৈরির ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করেছেন তিনি। ২০২২ সালেই তিনি নতুন আরও একটি হেলথকেয়ার ও টেকনোলজি কোম্পানি খোলেন। আর ২০২৩ সালে তিনি রিপাবলিকানদের হয়ে রাজনীতির ময়দানে পা রাখেন।
এদিকে এবারের নির্বাচনে আমেরিকার ৫০টি প্রদেশের মধ্যে বেশির ভাগই ট্রাম্পের রিপাবলিকানদের দখলে। জানা গিয়েছে, মোন্টানা, ইডাহো, উটাহ, উওমিং, নর্থ এবং সাউথ ডাকাটো, নেব্রাস্কা, কানসাস, ওকলাহোমা, টেক্সাস, মিসৌরি, আইওয়া, আরকানসাস, লুইজ়িয়ানা, মিসিসিপি, টেনেসি, কেনটাকি, ইন্ডিয়ানা, ওহিয়ো, ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা, সাউথ ক্যারোলাইনা, আলাবামা, জর্জিয়া, উইসকনসিনস পেনসিলভেনিয়া। এদিকে ট্রাম্প এগিয়ে নেভাডা, অ্যারিজোনা, আলাস্কা, মিশিগানে। এদিকে মোট প্রাপ্ত ভোটের নিরিখেও কমলা হ্যারিসের থেকে অনেকটাই এগিয়ে তিনি।