ইলন মাস্ক এবং বিবেক রামাস্বামীকে 'ডিপাটমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি'র প্রধান হিসেবে মনোনীত করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করার কয়েক ঘণ্টা যেতে না যেতেই হোয়াইট হাউজের তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হল, বিবেক রামাস্বামী আর 'ডিপাটমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি'র কো-চেয়ারম্যান পদে থাকবেন না। এই আবহে এখন এই দফতরের মাথায় শুধুমাত্র ইলন মাস্ক একাই থাকবেন। এই বিষয়ে ট্রাম্প শিবিরের মুখপাত্র অ্যানা কেলি বলেন, 'ডিপাটমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সির গঠনের জন্য গত ২ মাস ধরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন বিবেক রামাস্বামী। তবে তিনি শীঘ্রই নির্বাচিত পদের জন্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা। যার জন্যে তাঁকে ডিপাটমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সির বাইরে থাকতে হবে। তিনি গত ২ মাসে যা কাজ করেছেন, তার জন্যে আমরা তাঁকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এবং আশা করছি, আগামীতে তিনি আমেরিকাকে ফের মহান বানানোর ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করবেন।'
উল্লেখ্য, ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিবেক রামাস্বামী ওহায়োর গভর্নর পদের জন্যে নির্বাচনে লড়তে চাইছেন বলে জানা গিয়েছে। এদিকে 'ডিপাটমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি'র উদ্দেশ্য নিয়ে প্রথম থেকেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে আমেরিকার বিভিন্ন মহলে। ফেডারেল সরকারের পরিধি সীমিত করার লক্ষ্যে এই দফতর গঠনের ঘোষণা করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী ২০২৬ সালের মধ্যেই এই কাজ সম্পন্ন করবে 'ডিপাটমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি'। তবে ইলন মাস্ক এই দফতরের প্রধান পদে থাকায় তিনি নিজে ব্যবসায়িক দিক দিয়ে লাভবান হতে পারেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকেই। কারণ তাঁর সংস্থা স্পেসএক্স নাসার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে অনেক ক্ষেত্রে। এদিকে প্রশাসনের অনেক নীতিগত সিদ্ধান্তের ফলে তাঁর সংস্থা টেসলারও লাভ হতে পারে।
এর আগে ডিপাটমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সির সূচনা ঘোষণা করে ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, তাঁর প্রশাসনের 'ডিপাটমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি'র কাজ হবে আমলাতন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে, বিধিনিয়মের নাগপাশ কাটিয়ে, অযথা খরচ কমিয়ে, যুক্তরাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলির পুনর্নিমাণ করা। ট্রাম্প নিজের বিবৃতিতে বলেছিলেন, 'আমেরিকার নাগরিকদের জীবনকে উন্নততর করে তুলতে ওঁরা যুক্তরাষ্ট্রীয় আমলাতন্ত্রে কী পরিবর্তন আনেন, তা দেখার জন্যে মুখিয়ে আছি আমি। একসঙ্গে মাস্ক এবং বিবেক আমেরিকার সরকারকে আবর্জনা মুক্ত করতে পারেন, জালিয়াতি মুক্ত করতে পারেন।' ট্রাম্প জানিয়েছেন, এই দফতর বাইরে থেকে সরকারকে উপদেশ দেবে।
এদিকে একদা ডেমোক্র্যাট ইলন মাস্ক এই নির্বাচনে রিপাবলিকানদের হয়েই প্রচার করেছেন। এমনকী ট্রাম্পের জন্যে জলের মতো টাকাও ঢেলেছেন বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তি। এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্প যে মাস্ককে গুরুত্বপূর্ণ পদ দেবেন, তা এক প্রকার নিশ্চিত ছিল। ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিবেক রামাস্বামী একটা সময় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রাইমারিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। পরে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হওয়ার দৌড় থামিয়ে ট্রাম্পের হয়ে গলা ফাটান। ট্রাম্প জয়ী হওয়ায় এহেন বিবেক রামাস্বামীকে সেক্রেটারি অফ স্টেট করা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছিল। তবে তা হয়নি। রিপাবলিকান শিবিরে ক্রমেই গুরুত্ব বেড়েছ ৩৯ বছর বয়সি ব্যবসায়ী বিবেকের। একটা সময় তো এমনও মনে করা হয়েছিল যে হয়ত রামাস্বামীকেই ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী করতে পারেন ট্রাম্প। অবশ্য সেটাও হয়নি। তবে শেষ পর্যন্ত আশা অনুযায়ী, ট্রাম্প প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ পদে মনোনীত হন রামাস্বামী। তবে এবার তিনি নিজের রাজনৈতিক আকাঙ্খা পূরণের জন্যে সেই পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন।