জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে সরাসরি পুতিনকে আক্রমণ করেছেন আমেরিকার বিদেশ সচিব। নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে আমেরিকার বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছেন, 'যুদ্ধ থামানোর কোনও চেষ্টাই করছেন না পুতিন, বরং যুদ্ধ আরও দীর্ঘ করার প্রয়াস নিয়েছেন। যার জেরে গোটা বিশ্ব সংকটের মুখে। এমনটা হতে দেওয়া যায় না। পুতিনকে এই অপরাধের শাস্তি পেতে হবে। তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে না।' এরপরেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ নিয়ে আসেন আমেরিকার বিদেশ সচিব।
এর আগে অধিবেশনের উদ্বোধনী ভাষণে জাতিসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, ইউক্রেন থেকে সম্প্রতি যে সমস্ত খবর মিলছে, তা চিন্তা আরও বাড়াচ্ছে। যেভাবে রাশিয়া আক্রমণ করছে, তা সম্পূর্ণ নীতিহীন এবং অগ্রহণযোগ্য। রাশিয়া পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিচ্ছে, যা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। শুধু তা-ই নয়, রাশিয়া যেভাবে ইউক্রেনে দখল করে নেয়া বিভিন্ন এলাকায় গণভোটের প্রস্তুতি নিচ্ছে, তারও প্রবল সমালোচনা করেছএন গুতেরেস। ইউক্রেনের যুদ্ধকে জাতিসংঘের প্রধান সরাসরি মানবাজাতির বিরুদ্ধএ লড়াই বলে অভিযোগ করেছেন।
নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে বার বার পুতিনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। গুতেরেস স্বয়ং পুতিনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে রাশিয়ার ভেটো ক্ষমতা আছে। ফলে সেখানে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপই করা সম্ভব নয়। শুধু তা-ই নয়, রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে চিনেরও সমর্থন প্রয়োজন। বাস্তবে তা সম্ভব নয় বলেই তারা মনে করছেন।
এদিকে পুতিন জানিয়েছেন, সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার একটি ডিক্রি তিনি জারি করেছেন। তবে সেখানে সকলকে যোগ দেওয়ার কথা বলা হয়নি। তিনি বলেছেন, দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত এলে সবরকমভাবে দেশকে রক্ষা করতে হবে। তার জন্য সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করতে হলেও তা করা হবে। বস্তুত, পুতিনের এই মন্তব্য ঘিরেই পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের বিতর্ক শুরু হয়েছে। এর আগে পুতিন বলেছিলেন, পরমাণু অস্ত্রগুলি নির্দিষ্ট জায়গায় রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে যাতে তা ব্যবহার করা যায়।
এদিকে জার্মান বিদেশমন্ত্রী বেয়ারবকও নাম না করে পুতিনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন। ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর দাবি করেছেন, অবিলম্বে ইউক্রেন ও রাশিয়াকে যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। তিনি বলেছেন, যুদ্ধের সময় আন্তর্জাতিক আইন বা মানবাধিকার লংঘন কোনওভাবেই মানা যায় না। যেখানে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে, সেখানে তা তদন্ত করে দেখা হোক। তিনি এটাও জানিয়েছেন, পরমাণু বোমার প্রসঙ্গ যেভাবে উঠছে, তাতে ভারত অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।