নির্বাচনে ভালোই সাড়া দিলেন জম্মু-কাশ্মীরের ভোটাররা। ১০ বছর পর বুধবার উপত্যকায় প্রথম বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পাশাপাশি, ২০১৯ সালের অগস্ট মাসে মোদী সরকার জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা প্রত্যাহার করে নেওয়ার পরও এটাই প্রথম বিধানসভা নির্বাচন।
বুধবার ছিল প্রথম দফার নির্বাচন। যা ঘিরে সকাল থেকেই বাসিন্দাদের মধ্যে উৎসাহ দেখা গিয়েছে। বিকেল ৫টা পর্যন্ত জম্মু ও কাশ্মীরের সাতটি জেলায় ভোট পড়েছে প্রায় ৫৮ শতাংশ। এর মধ্য়ে রয়েছে দক্ষিণ কাশ্মীরের চার এবং জম্মুর তিনটি জেলা।
জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক পান্ডুরাং কে পোল জানিয়েছেন, 'জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় আমরা খুব ভালো সাড়া পেয়েছি। ২৪টি বিধানসভা কেন্দ্রে, বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৫৮.১৯ শতাংশ ভোট পড়েছে।'
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছিলেন উপত্যকার ৬৬ শতাংশ ভোটার। তার আগে ২০০৮ সালে ৬১ শতাংশ, ২০০২ সালে ৪৪ শতাংশ এবং ১৯৯৬ সালে ৫৪ শতাংশ মানুষ ভোটদানে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদ মাথাচাড়া দেওয়ার আগে ১৯৮৭ সালে আয়োজিত নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সামিল হয়েছিলেন ৭৫ শতাংশ ভোটার! চলতি বছরের লোকসভা নির্বাচনের সময়েও জম্মু-কাশ্মীরের ৫৮ শতাংশ মানুষ ভোটদান করেন। ইতিহাস বলছে, গত ৩৫ বছরে লোকসভা নির্বাচনে উপত্যকার এত মানুষ সাড়া দেননি।
নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সবথেকে বেশি ভোট পড়েছে কিশতওয়ার জেলায়। ভোট দিয়েছেন ৭৭.২৩ শতাংশ ভোটার। সবথেকে কম ভোট পড়েছে পুলওয়ামা জেলায়। ভোটদান করেছেন মাত্র ৪৩.৮৭ শতাংশ ভোটদাতা। এছাড়া, ডোডায় ৬৯.৩৩ শতাংশ, রামবাণে ৬৭.৭১ শতাংশ, কুলগাঁওয়ে ৫৯.৬২ শতাংশ, অনন্তনাগে ৫৪,১৭ শতাংশ এবং শোপিয়ানে ৫৩.৬৪ শতাংশ ভোট পড়েছে।
অনন্তনাগ পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের খণ্ডপাহাড়ি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ভোটদাতাদের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। এই কেন্দ্রে মোট ভোটার রয়েছেন ৬৭৮ জন। তাঁদের মধ্যে ১৩০ জন ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে পৌঁছে যান প্রথম দু'ঘণ্টার মধ্যেই।
ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা কৃষক মেহরাজউদ্দিন বলেন, 'গত ১০ বছর ধরে আমাদের কোনও নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী নেই। এই ১০ বছরে আমাদের অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। গৃহকর্তা ছাড়া পরিবার বিধ্বস্ত হয়ে যায়। রাজ্যের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য।'
প্রথম দফার এই নির্বাচনে ২৪টি বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থীর সংখ্য়া ২১৯। তাঁদের ভাগ্য নির্ধারণ করবেন ২৩.২৭ লক্ষের কিছু বেশি ভোটার।