গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আইনই সর্বোপরি এবং সেই ক্ষেত্রে আইন মেনে চলার কোনও বিকল্প নেই। রবিবার এক অনুষ্ঠানে এমনই মন্তব্য করলেন ভারতের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়। তামিলনাড়ুর প্রাক্তন গভর্নর পিএস রামমোহন রাওয়ের স্মৃতিকথা - 'গভর্নরপেট টু গভর্নর হাউস: অ্যা হিকস ওডিসি' প্রকাশের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপরাষ্ট্রপতি। সেখানে ভাষণ রাখার সময় ধনখড় বলেন, 'আমাদের দেশের গণতন্ত্র সবচেয়ে প্রাণবন্ত এবং কার্যকরী। আমাদের গণতন্ত্রে সমতা এমনই একটি জিনিস যা নিয়ে আমরা কখনও আপস করতে পারি না। আইন মেনে চলা ছাড়া আর কোনও বিকল্প আমাদের দেশে নেই। কিছু মানুষকে এটা উপলব্ধি করতে হবে যে গণতন্ত্রে সবাই সমানভাবে আইনের কাছে দায়বদ্ধ।' (আরও পড়ুন: বাংলার সব কলেজে এবছর চালু হবে নয়া সিলেবাস, তৎপরতা বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে)
উপরাষ্ট্রপতি আরও বলেন, 'আইনে কারওর জন্যই বিশেষাধিকার থাকতে পারে না। নয়ত গণতন্ত্রের অস্তিত্ব থাকবে না। দু'জন ব্যক্তির মধ্যে যদি একজনকে আলাদা প্রিজমের মাধ্যমে দেখা হয়, হাতলে সেটা গণতন্ত্র থাকবে না। আপনি যতই উঁচুতে থাকুন না কেন, আইন সর্বদাই আপনারও ওপরেই থাকবে। এটা আমরা সকলেই জানি যে আইনের চোখে আমরা কোনও বিশেষ সুযোগ-সুবিধা পেতে পারি না। এই সুযোগ-সুবিধাগুলোর কোনও অস্তিত্ব থাকতে পারে না। আইনের যতই কঠোর হোক না কেন, তা সবার জন্য সমান ভাবে প্রযোজ্য। কিছু লোক অবশ্য দুর্ভাগ্যবশত মনে করেন যে তারা আলাদা বা আইন তাদের ভিন্ন চোখে দেখবে।'
আরও পড়ুন: ডিএ আন্দোলনের মাঝেই এবার সরকারি কর্মীদের নিয়ে কড়া নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রী মমতার
জগদীপ ধনখড় আরও বলেন, 'আমার মনে কোনও সন্দেহ নেই... আমি অনেক দিন ধরেই বলে আসছি... দেশের মহান গণতন্ত্র প্রস্ফুটিত এবং বিকশিত হয়েছে। আমরা সংবিধানকে প্রাধান্য দিয়ে থাকি। এটাই গণতান্ত্রিক শাসনের স্থিতিশীলতা, সম্প্রীতি এবং উৎপাদনশীলতা নির্ধারণ করে। আর জনগণের মতের প্রতিফলনকারী সংসদই সংবিধানের চূড়ান্ত ও একচেটিয়া হর্তাকর্তা। সংসদের মাধ্যমে জনগণের মধ্য থেকে সংবিধান তৈরি করতে হয়। সংবিধান প্রণয়নে নির্বাহী বিভাগের কোনও ভূমিকা নেই এবং সংবিধান বিকশিত করতে বিচার বিভাগসহ অন্য কোনও প্রতিষ্ঠানেরও কোনও ভূমিকা নেই। সংবিধানের বিবর্তন হতে হবে সংসদেই। এটি দেখার জন্য কোনও সুপার বডি থাকতে পারে না। এটা সংসদে শুরু হবে এবং সংসদেই তা শেষ করতে হবে।'
উপরাষ্ট্রপতি আরও বলেন, 'নিজেদের লক্ষ্মণরেখায় থেকে যখন আইনসভা, বিচার বিভাগ এবং নির্বাহী বিভাগ তাদের নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করে এবং ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করে তখনই গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং জনস্বার্থ পূরণ হয়। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই তিন বিভাগের কেউই যেন কোনও ভাবে সীমালঙ্ঘন না করে। যদি কেউ সীমাবদ্ধতায় না থেকে কাজ করে, তবে তা গণতন্ত্রের জন্য সমস্যা তৈরি করবে। এটা ক্ষমতার সদ্ব্যবহার নয়। সংবিধান আমাদের যে ক্ষমতা দিয়েছে, আমাদের সেই অনুযায়ী কাজ করতে হবে। এটি একটি চ্যালেঞ্জ যা আমাদের সকলকে সম্মিলিতভাবে মোকাবিলা করতে হবে এবং একই সুরে কাজটা সম্পন্ন করতে হবে।'