ওয়াকফ সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে ১৭ মার্চ নয়াদিল্লির যন্তর মন্তরে বিক্ষোভ দেখাবে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড (এআইএমপিএলবি)। বিভিন্ন মুসলিম সংগঠন ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি বেশ কয়েকজন বিরোধী সাংসদকেও এই কর্মসূচিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, চলতি অধিবেশনে (বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় অংশ) ওয়াকফ বিলটি সংসদে উত্থাপন করতে পারে সরকার। (আরও পড়ুন: দিঘায় মুসলিমরাও যায়, জগন্নাথ মন্দিরের পাশাপাশি সেখানে মসজিদ তৈরি হোক: ত্বহা)
আরও পড়ুন: ৪০টি চিনা J35A যুদ্ধবিমান হাতে পাবে পাক, হোতানে মোতয়েন J20, জবাবে কী করছে ভারত?
এদিকে এই বিলের বিরুদ্ধে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের এই প্রতিবাদ কর্মসূচির সমালোচনা করেছেন বিজেপি সাংসদ এবং ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল, ২০২৪-এর যৌথ সংসদীয় কমিটির (জেপিসি) চেয়ারম্যান জগদম্বিকা পাল। তিনি দাবি করেন যে এই ধরনের বিক্ষোভ কর্মসূচি সমাজে বিভাজন তৈরি করতে পারে এবং সংসদের আইন প্রণয়নের অধিকারকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে। বিজেপি সাংসদ আরও বলেন, মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড ইতিমধ্যেই কমিটির কাছে তাদের উদ্বেগের বিষয়টি জানিয়েছে এবং সেই বিষয়গুলি রিপোর্টে বিবেচনা করা হয়েছে। (আরও পড়ুন: বাংলায় ৮৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে পারে হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যাল? দাবি রিপোর্টে)
আরও পড়ুন: বিস্ফোরণের পর RPG হামলা, বালোচিস্তানে ৯০ জওয়ানকে মারার দাবি BLA-র, পাক সেন বলল…
সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে বিজেপি সাংসদ বলেন, 'এই সংশোধনীর পরে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডকে ডেকেছিল যৌথ সংসদীয় কমিটি এবং ওয়াকফ। কমিটির সামনে এআইএমপিএলবি যে যে উদ্বেগ উত্থাপন করেছে, সেই বিষয়গুলি আমরা নোট করেছি। শুধু তাই নয়, আমরা এটিকে আমাদের প্রতিবেদনের একটি অংশও করেছি ... তাহলে কেন দিল্লির যন্তর মন্তরে বিক্ষোভ দেখাতে যাচ্ছেন তাঁরা? সংশোধনীর পর আরও ভালো আইন হতে যাচ্ছে। দরিদ্র, মহিলা, বিধবা ও শিশুরাও ওয়াকফের মাধ্যমে উপকৃত হবেন।' (আরও পড়ুন: চিনের থেকে নয়া হাঙর শ্রেণির সাবমেরিন পেল পাকিস্তান, ভারত কি চিন্তায় পড়বে?)
এআইএমপিএলবির বিরুদ্ধে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করার অভিযোগ করেছেন বিজেপি সাংসদ। তিনি বলেন, 'যদি তারা এই ওয়াকফ (সংশোধনী) এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে যায়, তাহলে তারা দেশের মানুষের মধ্যে ঘৃণা তৈরি করার চেষ্টা করছে এবং সংসদের আইন তৈরির অধিকারকে চ্যালেঞ্জ করার চেষ্টা করছে... তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে এবং বিভেদ তৈরি করার চেষ্টা করছে। তাদের এই পদক্ষেপ গণতান্ত্রিক নয়।'
এদিকে পার্সোনাল ল বোর্ডের মুখপাত্র সৈয়দ কাসিম রসুল ইলিয়াসের দাবি, হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করা এবং দেশে অশান্তি ছড়ানোই সরকারের লক্ষ্য। বিভিন্ন জায়গায় লাগাতার প্রতিবাদ, সংবাদ সম্মেলন হচ্ছে। আমাদের ১৩ মার্চ প্রতিবাদ করার কথা ছিল, কিন্তু সেদিন হোলি। ওইদিন সংসদ সদস্যরা উপস্থিত থাকতে পারবেন না। তাই আমরা ১৭ মার্চ ২০২৫ তারিখে যন্তর মন্তরে একটি বিশাল প্রতিবাদ করব। অনেক সংসদ সদস্যসহ সকল সম্প্রদায়ের মানুষ এই প্রতিবাদে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বিজেপি বরাবরই ঘৃণা ছড়ায়, কিন্তু আমরা অন্তত আশা করব ওদের জোটসঙ্গীরা এই সিদ্ধান্তে বিজেপিকে সমর্থন করবে না।
এদিকে এআইএমপিএলবির সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহিম মুজাদ্দিদি বলেছেন যে তারা সমস্ত গণতান্ত্রিক উপায়ে সরকারকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তাদের উদ্বেগ শোনা হয়নি। মুজাদ্দিদি বলেন, 'এখন আমাদের প্রতিবাদ করা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। সরকার যে কোনও মূল্যে এই সংশোধনী আমাদের উপর চাপিয়ে দিতে চায়। আমরা চাই না পরিস্থিতির অবনতি হোক, কিন্তু আপনারা (সরকার) চান প্রতিটি রাস্তায় সংঘাত হোক, বিশেষ করে মসজিদ ও কবরস্থান নিয়ে। আমরা উন্নত ভারত দেখতে চাই, কিন্তু এই পরিস্থিতিতে আমাদের স্বপ্ন পূরণ হতে পারে না। এই সংশোধনী দেশের বিরোধী। সরকার আমাদের নিরীহ হিন্দু ভাইদেরও ভুল পথে চালিত করেছে।'