আশি বছর আগের এক উদ্ধৃতি। সেটা নিয়েই টুইটারে বাঁধল দক্ষযজ্ঞ। স্বয়ং কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পর্যন্ত জড়িয়ে গেলেন বিতর্কে। আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকলেও সংস্কৃতিতে বাংলা এগিয়ে গুজরাতের চেয়ে, ১৯৩৯ সালে ফিলিপ স্প্র্যাটের করা উদ্ধৃতি নিয়েই যাবতীয় বিতর্ক।
বিশিষ্ট ঐতিহাসিক রামচন্দ্র গুহ এই টুইট করেছিলেন।
এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে যান অনেক গুজরাতি। দলমত নির্বিশেষে সবাই বলেন যে এটা ঠিক বলছেন না রামচন্দ্র গুহ। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রুপানি বলেন যে ভারতবাসীকে বিভক্ত করার যে চেষ্টা চলছে, তার থেকে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন যে গুজরাত ও বাংলা দুই রাজ্যই ভালো, ভারত পুরোপুরি ঐক্যবদ্ধ।
বিপাকে পড়ে অবশ্য দায় ঝাড়ার চেষ্টা করেন রাম গুহ। তিনি বলেন যে কোনও উদ্ধৃতি শেয়ার করার এটা মানে নয় যে তিনি সেটাকে সমর্থন করছেন। তারপর বিজয় রুপানিকেও একহাত নেন তিনি ও বলেন যে অকারণে বিতর্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে।
".তবে এতেই বিষয়টি মিটে যায়নি। রাউন্ড টু-তে এবার মাঠে নামেন স্বয়ং দেশের অর্থমন্ত্রী। তিনি রাম গুহকে আক্রমণ করে একটি লিঙ্ক শেয়ার করেন যেখানে লেখা আছে কীভাবে পোল্যান্ডে আজও সম্মানিত গুজরাতের এক রাজা।
উত্তরে রাম গুহ বলেন যে শুধু গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী নয় অর্থমন্ত্রীও নগন্য এক ইতিহাসবিদের টুইট নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন। অর্থনীতি নিশ্চিত ভাবেই ভালো হাতে আছে, পরিহাস করে বলেন রাম গুহ।
এরপর পুরো বিতর্কের জন্য বিজেপির আইটি সেলকেও দোষ দেন রাম গুহ। হালকা ছলে বলেন যে তিরিশ বছর ধরে তিনি ফিলিপ স্প্র্যাটের কাজ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চাইছেন, এদের সৌজন্যে এক দিনেই সেটা হয়ে গেল।
তবে রাম গুহর এই পরিহাস মেনে নেননি নির্মলা সীতারামন। তিনি ফের বলেন যে অর্থনীতি ভালো হাতে আছে, আপনি চিন্তা করবেন না। একই সঙ্গে নির্মলা বলেন যে অর্থনীতির খেয়াল রাখা ও ইতিহাস চর্চা করার মধ্যে অসুবিধা কী আছে। একটা করলে অন্যটা করা যায় না, এমন নয়।
প্রসঙ্গত ১৯৩৯ সালের উদ্ধৃতি হলেও বর্তমান সময়কালেও সম্ভবত এর কিছুটা প্রাসঙ্গিকতা থেকে যায়। এই কারণেই বোধহয় রামচন্দ্র গুহর টুইটটিকে ইগনোর না করে রীতিমত ঝাঁপিয়ে পড়লেন অনেক রাজনীতিবিদ। তবে বাংলা আর্থিক ভাবে পিছিয়ে, উদ্ধৃতির এই অংশ নিয়ে কোনও বাঙালি রাজনীতিবিদ রেগে গিয়েছেন, এখনও তেমন জানা যায়নি।